Omicron: কেন করোনার নয়া প্রজাতি `ওমিক্রন`কে উদ্বেগজনক বলছে WHO? সত্যিই কি চিন্তার কারণ আছে?
একাধিক করোনা প্রতিরোধী ভ্যাকসিন দিয়ে তা স্তিমিত করার কাজ চলছে, কিন্তু ফের নয়া রূপ। এবার `ওমিক্রন`। চরিত্রে বাকি প্রজাতির থেকে বেশ কিছুটা আলাদা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রূপ বদলে সব সময় যে চরিত্রও বদলাবে এমনটা না হওয়াই স্বাভাবিক। এ ভাবনা যে কেবল দার্শনিক চিন্তাভাবনার তা নয়। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য। তা সে জেনেটিক্স হোক কিংবা মাইক্রোবায়োলজি। এই যেমন- দক্ষিণ আফ্রিকাতে সদ্য আবিষ্কার হওয়া সার্স-কোভ-২ (করোনাভাইরাসের)-এর একটি ভ্যারিয়েন্ট বা প্রজাতি 'ওমিক্রন'। মাইক্রোবায়োলজির নমেনক্লেচারে যে এমন নাম দিতে হতে পারে, তা ভাবা যায়নি।
সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটি অণুবিদ্যায় বিদ্যমান থাকলেও রূপভেদে এটি প্রধানত চার প্রকারের ছিল। এঁদের প্রত্যেকের নাম গ্রিক বর্ণমালার অক্ষর দিয়ে। লামডা, আলফা, বিটা এবং গামা। ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে যখন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে করোনাভাইরাস, সেই সময় জিনগত পরিবর্তনের (মিউটেশন) মাধ্যমে রূপে ও চরিত্রে বদল আনতে শুরু করল। কোনও রূপ উদ্বেগের (ভ্যারিয়েন্ট অফ কনসার্ন) হয়ে উঠল, কোনওটি আবার কেবল 'ভ্যারিয়েন্ট অফ ইন্টারেস্ট' হয়ে রয়ে গেল। নয়া প্রজাতির মধ্যে বিশ্বজুড়ে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল ডেল্টা ও ডেল্টার কিছু উপপ্রজাতি (ডেল্টা প্লাস)।
আরও পড়ুন, Covid variant Omicron: করোনার নতুন প্রজাতি 'ওমিক্রন'কে উদ্বেগজনক ঘোষণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
সংক্রমণ থেকে প্রাণহানি, ডেল্টার দাপটে বিশ্বজুড়ে তৈরি হয়েছিল বিপর্যয়। যদিও একাধিক করোনা প্রতিরোধী ভ্যাকসিন দিয়ে তা স্তিমিত করার কাজ চলছে, কিন্তু ফের নয়া রূপ। এবার 'ওমিক্রন'। চরিত্রে বাকি প্রজাতির থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। যেন ডারউইন তত্ত্ব মেনে অস্বস্তিত্বের লড়াই করছে করোনা। শেষ হতে হতেই নতুন রূপ ধারণ। বিজ্ঞানীদের হাতে এখনও পর্যন্ত যে তথ্য এসেছে তা বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে এর বদল হয়েছে মূলত স্পাইক প্রোটিনে। ৩২ বার স্পাইক প্রোটিনের জিনগত কাঠামোতে বদল হয়েছে। জিনের প্রোটিন মধ্যস্থ অ্যামাইনো অ্যাসিডের স্থান বদল হয়েছে ৩২ বার। ফিউরিন (একটি প্রোটিয়েজ উৎসেচক) ক্লিভেজ সাইটেও মিউটেশন হয়েছে ৩ বার। অর্থাৎ রূপ না বদলালেও চরিত্র বদলেছে বেশ কিছুটা।
চিন্তা বাড়ছে এখানেই। এখনও পর্যন্ত বিশ্বে যেসকল ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়েছে তা কোনওটি করোনার জেনেটিক উপাদান (mRNA)-এর উপর ভিত্তি করে, কোনওটি স্পাইক প্রোটিনের গঠনের ওপর ভিত্তি করে, কোনওটি আবার নিষ্ক্রিয় করোনাভাইরাস ব্যবহার করে। সেখানেই সীমাবদ্ধতা। যেহেতু এই করোনাভাইরাস আদতে রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড ভাইরাস (RNA Virus) তাই বিপদ অনেক। ঠিক যেমনটা দেখা যায় HIV Virus- এর ক্ষেত্রে। দক্ষিণ আফ্রিকায় যে কজনের দেহে এই প্রজাতির উপস্থিতি রয়েছে তাঁদের সকলেই কিন্তু টিকাপ্রাপ্ত। সাধারণ মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে তাহলে কেন আক্রান্ত হলেন তারা? তবে কি টিকা নিয়েও রোখা যাবে না এই প্রজাতিকে? ফের বিশ্বজুড়ে বাড়বে সংক্রমণ?
আরও পড়ুন, Coronavirus: 'ওমিক্রন' উদ্বেগের মাঝে দেশে কমল সংক্রমণ, চিন্তায় রাখছে মৃত্যুহার
বিজ্ঞানী, গবেষক মহল এখনই এ সকল প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি। কারণ এই ভাইরাসের প্রতিটি প্রোটিন ধরে বিশ্লেষণের কাজ এখনও চলছে। তবে এটা ঠিক মিউটেশন হওয়ার অর্থই যে মারাত্মক সংক্রমক হবে তা নয়। এর সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ডেল্টা প্লাসের কথা। প্রাথমিকভাবে প্রবল সংক্রমক মনে করা হলেও এর মারণ ক্ষমতা কিংবা ছড়িয়ে পড়ার হার ডেল্টার থেকে অনেকগুণে কম। তাই প্যানিক করতে বারণ করছেন বিজ্ঞানীরাও।
কিন্তু কথায় আছে- 'সাবধানের মার নেই'। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে এই প্রজাতির ক্ষেত্রে উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে। তাই কোভিড বিধি কঠোরভাবে মেনে চলে 'বিশ্বকে বাসযোগ্য' করার ভার নিজেদেরকেই নিতে হবে, এমনই অনুরোধ করেছে তারা।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)