Body Donation: `আমার ছোট্ট মেয়ের দেহটা চোখের সামনে পুড়তে দেখতে চাই না,` ১০ বছরের শ্রীতমার দেহদান বাবা-মার
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী শ্রীতমা দুরারোগ্য ব্রেন সেল গ্লিওমা রোগে আক্রান্ত ছিল। গত সাড়ে ৬ বছর ধরে তার চিকিৎসা চলছিল।
মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: "আমার এই ছোট্ট মেয়ের দেহটা আমার চোখের সামনে পুড়ে যাবে, আমি চাই না। আমি চাই এটা সমাজের কাজে লাগুক।" আর সেই ভাবনা থেকেই সন্তান হারানোর নিদারুণ কষ্টকে চেপে রেখে ১০ বছরের নাবালিকার মরণোত্তর দেহদানের (Body Donation) সিদ্ধান্ত নিল হতভাগ্য বাবা-মা। হাওড়ার (Howrah) কদমতলার বাসিন্দা ছিল তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী শ্রীতমা মণ্ডল। প্রায় সাড়ে ৬ বছর ধরে দূরারোগ্য ব্যাধির সঙ্গে লড়াই করে রবিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। তারপরই ১০ বছরের ছোট্ট শ্রীতমার দেহদানের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। এককথায় যা নজিরবিহীন।
সোমবার এসএসকেএম হাসপাতালে অ্যানাটমি বিভাগে শ্রীতমার মরদেহ দান করা হয়। তার কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়েছে। মস্তিষ্কের দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিল শ্রীতমা। রবিবার সকাল ৬টা ২০-তে মৃত্যু হয় ছোট্ট শ্রীতমার। হাওড়ারই একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সে। এরপরই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেহদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করে পরিবার। জানা গিয়েছে, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী শ্রীতমা দুরারোগ্য ব্রেন সেল গ্লিওমা রোগে আক্রান্ত ছিল। এই ব্রেন সেল গ্লিওমা হল একধরনের ব্রেনের স্টেম সেলে টিউমার। গত সাড়ে ৬ বছর ধরে তার চিকিৎসা চলছিল।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, "বাবা-মায়ের ইচ্ছে অনুসারেই এই দেহদান। কারণ মৃত্যু-ই শেষ কথা নয়। বাবা, মা তাঁদের কাছে এসে জানায় যে, আমরা পুড়িয়ে দিতে চাই না। আমার এই ছোট্ট মেয়ের দেহটা আমার চোখের সামনে পুড়ে যাবে, আমি চাই না। আমি চাই এটা সমাজের কাজে লাগুক। চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাজে লাগুক।" এরপরই এদিন এসএসকেএম-এর অ্যানাটমি বিভাগে সম্পন্ন হয় ১০ বছরের নাবালিকার দেহদান প্রক্রিয়া।