নিজস্ব প্রতিবেদন : বউবাজারে ফের বিপর্যয়। দুর্গা পিতুরি লেনে ফের ভেঙে পড়ল বাড়ি। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে ১৩এ দুর্গা পিতুরি লেন বাড়িটি। ৩ তলা বাড়িটি এখন ধ্বংসস্তূপ মাত্র। একতলার কলাপসিবল গেটটি শুধু অক্ষত রয়েছে। আর গোটা বাড়িটাই ভেঙে পড়েছে দুর্গা পিতুরি লেনের উপর। ইট, কাঠ, বিমের ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুমাত্র সেখানে অবশিষ্ট নেই। সংকীর্ণ গলিতে শুধু পড়ে ধ্বংসস্তূপ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এই ১৩এ দুর্গা পিতুরি লেন বাড়িটির বাসিন্দা শীল পরিবার। এই বাড়িরই মেয়ে তৃষা শীলের বিয়ে স্থির হয়ে রয়েছে আগামি ২২ জানুয়ারি। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ-র ছাত্রী তৃষা। ৪ মাস পর বিয়ে। স্বপ্নে মশগুল ছিল গোটা পরিবার। কিন্তু রবিবার বিকেল থেকে সব হিসেব যেন গুলিয়ে গিয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা থেকেই সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর ব্রডওয়ে হোটেলের ৩৬ নম্বর রুমের অস্থায়ী বাসিন্দা তাঁরা। বিপর্যয় শুরু হতেই কোনওরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই মিলেছে শুধু। কিন্তু সহায়-সম্বল সবই রয়ে গিয়েছিল বাড়ির ভিতর।



এদিন সকালেই Zee ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধিকে তৃষার মা সোনালি শীল বলছিলেন, আগামি ২২ জানুয়ারি মেয়ে তৃষার বিয়ে স্থির হয়েছিল। পাত্র উত্তর কলকাতার রামমন্দিরের বাসিন্দা কৌস্তভ। বিয়ের কেনাকাটাও সব হয়ে গিয়েছে। বিয়ের শাড়ি, ধুতি, প্রণামী বাবদ প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা কেনাকাটা হয়েছে। যার সবটাই রয়েছে ১৩এ দুর্গা পিতুরি লেনের বাড়িতে। বাড়ির আলমারি মধ্যে রয়েছে বিয়ের সব গয়না। প্রায় ১২ লাখ টাকার গয়না রয়েছে আলমারিতে। কোনওভাবে একটু বাড়িতে ঢুকে সেই জিনিসগুলো নিয়ে আসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবেন তাঁরা।


কিন্তু, এখন সবটাই নিষ্প্রয়োজন হয়ে গেল। বিকেল ৩টেয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বসার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু তার আগেই ধূলিসাৎ হয়ে গেল ১৩এ দুর্গা পিতুরি লেন গোটা বাড়িটা। পরিবারের কর্তা রঞ্জন শীলের একটি ছাপাখানা রয়েছে। পরিবারের সংস্থান হত সেই ছাপাখানা থেকেই। কিন্তু এখন সেই ছাপাখানা ধ্বংসস্তূপ মাত্র। রঞ্জন শীল জানান, তৃষার ভাই গৌরব শীলকে অগাস্ট মাসেই পড়াশোনার জন্য তিরুবনন্তপুরমে রেখে আসেন তাঁরা। ১৮ বছরের ছেলেকে এখনও বলতে পারেননি কোন বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে। শুনলে সব ছেড়ে চলে আসবেন গৌরব। তাই সন্তানের ভালোর জন্য নীরবতাকে বেছে নিয়েছেন।


আরও পড়ুন, মাঝেরহাট ব্রিজ দুর্ঘটনায় মেট্রোকে দুষলেও বউবাজারে গিয়ে সহযোগিতার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর


মেট্রোর সুড়ঙ্গে জল ঢুকে ধসে গিয়েছে মাটি। আর সেটাই ডেকে এনেছে বিপর্যয়। সমস্যার সমাধানে তৎপর মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কীভাবে কবে সবকিছু ঠিক হবে? উত্তর জানা নেই কারও। শুনশান দুর্গা পিতুরি লেনে এখন চারদিকে শুধুই আতঙ্কের ছাপ। আর হোটেলের অস্থায়ী ঠিকানায় হাহাকার বাসিন্দাদের। সোনালি শীল বলছিলেন, "একটু একটু করে সঞ্চয় করেছিলাম। সব হারিয়ে গেল। কিচ্ছু ভাবতে পারছি না। কান্নাটাও যেন আসছে না।"