ওয়েব ডেস্ক: গতকাল পর্যন্তও এ রাজ্যের অনেক মানুষের 'মন বলছিল', ক্ষমতায় এবার আসতে পারে জোট সরকার।কিন্তু রাত পেরিয়ে সকাল হতেই সব কল্পনা আছড়ে পড়ল বাস্তবের মাটিতে। একা তৃণমূলের সামনে দাঁড়াতেই পারল না দুই মহারথীর জোট। একা তৃণমূল ২০০-র বেশি আসন ছিনিয়ে নিয়ে গেল। সেখানে বামফ্রন্ট আর কংগ্রেস দুই দল এক হয়ে নিজেদের অস্তিত্ব তো টিকিয়ে রাখলেন কিন্তু তা দিয়ে আর যাই হোক সরকার চালানোর জায়গায় আসা যায় না। কিন্তু কেন এমন ভরাডুবি হল জোটের? কারণ, হতেই পারে অনেক কিছু। তবু, ফল ঘোষণার পরপরই যে তিনটে প্রধান কারণ বলে মনে হচ্ছে, সেগুলোই তুলে ধরা হল নিচে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

১) জোটের বিশ্বাসযোগ্যতাই তৈরি হল না মানুষের মধ্যে - রাজনীতিকে সম্ভাবনার শিল্প বলা হয়েই থাকে। অর্থাত্ আর যেখানে যাই হোকস রাজনীতির আঙিনায় অসম্ভব বলে কোনও শব্দের অস্তিত্ব নেই। তাই বামফ্রন্ট আর কংগ্রেস আগের ৫০ বছর কত লড়াই করল, সেটাও যেমন সত্যি, তেমনই এবার ওরা 'দরকারে' কাছাকাছি এলো, এটাও সত্যি। দুই দল তৃণমূলকে রাজ্য ছাড়া করতে একসঙ্গে জোট তো বেঁধে ফেললেন।কিন্তু দু দলের অগণিত কর্মী এবং সমর্থকরা বছরের পর বছর ধরে নিজেদের মধ্যে মারামরি করেছে। একে অন্যের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। সেই তারাই শত্রুর শত্রু বলে বন্ধু তো হয়ে গেল, কিন্তু সেই বন্ধুত্বে বিশ্বাস রাখতে পারল না সাধারণ মানুষ। অন্তত ভোটের ফল বেরোনোর পর তেমনই মনে হচ্ছে।



২) জোটের বন্ধন হতে বড্ড বেশি সময় লাগলো - নির্বাচন কমিশন যেদিন ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল, সেদিনই, নিজেদের পুরো প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অথচ, বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস তারা তাদের জোট শেষ পর্যন্ত করবেন কিনা, সে নিয়ে টালবাহানা করলেন অনেকেদিন। ব্যাপারটা অস্বাভাবিকও নয়। এতবড় দুটো রাজনৈতিক দল। তার উপর তথাকথিত এ রাজ্যে চিরশত্রু। তাদের কাছে আসতে তো একটু সময় লাগবেই। সেইজন্য দুটো দলেরই উচিত ছিল, জোটের প্রক্রিয়া আরও আগে থেকে শুরু করা। সেক্ষেত্রে তারা নিজেদের আরও বেশি শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে পারতো। কারণ, দুটো রাজনৈতিক দলের সমস্যা সাধারণ মানুষ বুঝতে যাবেন কেন?



৩) মানুষের জোটই যদি হয়, তাহলে আর তাঁরা ছিলেন কেন! মানুষও তাই নিজেদের ভোট নিজেদের পছন্দ মতো দিয়ে বুঝিয়ে দিল, তাঁরা আসলে কী চায়-  জোটের বলার ছিল দুর্নীতির কথা কিন্তু উন্নয়ন চাপবেন কীভাবে? - জোটের জায়গা থেকে যা যা প্রচার করার ছিল, সূর্যকান্ত মিশ্র কিংবা অধীর চৌধুরিরা সবই করেছেন। সারদা কাণ্ড থেকে নারদ কাণ্ড। উড়ালপুল বিপর্যয় থেকে হাজারো দুর্নীতির কথা তাঁরা নিজেদের প্রচারে বারবার বলেছেন। কিন্তু এটা তো গেল মুদ্রার একটা দিক। এর উল্টোদিকটা যে একেবারে অন্যরকম। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার গত চার বছরে ১০০ শতাংশ কাজ করেছে, এটা যেমন ডাহা মিথ্যে, তেমনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার গত ৪ বছরে এক ফোঁটা কাজ করেনি, সেটাও যে ডাহা মিথ্যে। বরং, উন্নয়ন যে কিছু হয়েছে, সেটা অস্বীকার করার খুব জায়গা ছিল না। আর এই উন্নয়নের বিরুদ্ধে শুধু দুর্নীতির আঙুল তুলে জেতা যায় না, সেটাই যেন প্রমাণ হল। জোটের নেতারা বললেন এটা মানুষের জোট! মানুষের জোটই যদি হয়, তাহলে আর তাঁরা ছিলেন কেন! মানুষও তাই নিজেদের ভোট নিজেদের পছন্দ মতো দিয়ে বুঝিয়ে দিল, তাঁরা আসলে কী চায়।


আর একটা কথা। জোটের ভরাডুবির কারণ শুধু এই তিনটে নয়। আছে অনেক। আপনিও বুঝতে পারছেন। আপাতত তিনটে মূল কারণের কথাই বলা হল।