`নব বঙ্গে`র মোড়কে লোকসভায় নজর মোদীর
২০১৯ সালে ফিরে আসতে অরাজনৈতিক সংগঠনের উপরে ভরসা মোদীর। বাংলায় নাম `নব বঙ্গ`
অঞ্জন রায়
২০১৯ সালের ভোটে ফিরে আসতে শুধুমাত্র দলীয় সংগঠন বা সঙ্ঘের উপরেই ভরসা করছেন না নরেন্দ্র মোদী। বরং নাগরিক সমাজকে পাশে পেতে অরাজনৈতিক সংগঠন খুলে ফেলেছে মোদী-শাহ জুটি। পশ্চিমবঙ্গে এই সংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে 'নব বঙ্গ'। রবিবার আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে এই সংগঠন।
২০২২ সালে নতুন ভারত গঠনের স্বপ্ন দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সে জন্য ক্ষমতায় ফিরেতে হবে তাঁকে। এজন্য শুধু দল ও সঙ্ঘের সংগঠনের উপরে ভরসা রাখছেন না নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ। ভারতীয় সমাজের একটা অংশ নিরপেক্ষ, এবার সেই নিরপেক্ষ সুশীল সমাজকেই কাছে টানতে চাইছেন তাঁরা। আর এজন্যই রাজ্যে রাজ্যে অরাজনৈতিক সংগঠন খোলার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির বিজেপি নেতৃত্ব। ওই সংগঠনের নাম সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজনৈতিক অবস্থার সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে এই সংগঠনের নাম নব বঙ্গ। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসে নতুন বাংলা গঠন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই এই নতুন সংগঠনের নাম ঠিক হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, 'নব বঙ্গে'র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বের কোনও যোগ থাকবে না। তবে সংগঠনের মাথায় থাকবেন আরএসএস ও বিজেপির শীর্ষ নেতারা। 'নব বঙ্গে'র আহ্বায়ক করা হয়েছে সৌমেন পুরকায়েতকে। তিনি অতীতে রাষ্ট্রসঙ্ঘে কর্মরত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে এই অভিজ্ঞ সৌমেনবাবুর।রবিবার হো চি মিন সরণীতে রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টারে আত্মপ্রকাশ করবে 'নব বঙ্গ'।
আরও পড়ুন- সততার দাম দেবে কেন্দ্র, সহজে মিলবে ঋণ
এই সংগঠনের কাজ কী?
মূলত মোদীর কাজের প্রচার করাই এই সংগঠনের লক্ষ্য। সংগঠনকে আর্থিক সাহায্য করবে আরএসএস-বিজেপি। যুব ও মহিলারাই থাকবেন এই সংগঠনের নজরে।
কেন দরকার পড়ল এই সংগঠন?
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই অরাজনৈতিক সংগঠনের নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে- শুধু হিন্দু ভোটে জিতে আসা আর সম্ভব নয়। সমাজের অন্য অংশের ভোটেরও প্রয়োজন। সেই কারণেই এমন ব্যবস্থা।
ইতিমধ্যেই নরম হিন্দুত্বের তাস ব্যবহার করা শুরু করেছেন রাহুল গান্ধী, অভিযোগ বিজেপির। পাশাপাশি দলিতদেরও দলে টেনেছেন তিনি। এর মধ্যে বেসুরো গাইছেন ভিএইচপি নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়া। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, হিন্দু ভোটে ভাগ বসাতে মরিয়া কংগ্রেস। ফলে শুধুমাত্র হিন্দু ভোটের উপরে নির্ভর করে থাকতে চাইছেন না মোদী। উদার হিন্দুদের ভোটকেও তাই পাখির চোখ করছেন মোদী-শাহরা।
আরও পড়ুন- উদ্বেগে মোদী, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ
বিভিন্ন কারণে সমাজের একটা অংশে মোদী সরকারের প্রতি ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সে কারণে সরকারের নানা কাজকর্মের কথা যুব সমাজের কাছে প্রচার করতে চাইছে মোদী-শাহ জুটি। শিক্ষিতদের কাছে তুলে ধরা হবে সরকারের সংস্কারমূলক কাজকর্ম। সূত্রের খবর, আরএসএস বা ভিএইচপি-র মতো সংগঠন দিয়ে উদার হিন্দুদের ভোট টানা সম্ভব নয়। তা আঁচ করেই অরাজনৈতিক সংগঠনের মোড়কে 'গেরুয়াবাদ' প্রচার করবে বিজেপি।