EXPLAINED | Puri Jagannath Temple Neela Chakra: পুরীর মন্দিরের নীল চক্র; এক অলৌকিক রহস্যে মোড়া, অত্যাশ্চর্য ঘটনায় বিজ্ঞানও নীরব...

Puri Jagannath Temple Neela Chakra:  পুরীর মন্দিরের নীল চক্রটি এক অলৌকিক রহস্যে মোড়া, অত্যাশ্চর্য ঘটনায় বিজ্ঞানও কোনও কিনারা পায়নি

Dec 25, 2024, 20:06 PM IST
1/7

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নীল চক্র

Puri Jagannath Temple Neela Chakra

৮০০ বছরের পুরনো পুরীর জগন্নাথ মন্দির। যা অলৌকিকতায় মোড়া। ৩৭ হাজার স্কোয়ারফুট জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ২১৪ ফুট লম্বা মন্দিরের পরতে পরতে লুকিয়ে রহস্য! অত্যাশ্চর্য সব ঘটনা ঘটে চলেছে যেখানে। যার কিনারা করতে পারেনি বিজ্ঞানও। মন্দিরের চূড়ায় বিরাজমান নীলা চক্র বা নীল চক্রই অবাক করে। এই প্রতিবেদনে আলোকপাত করা হল সেই অত্যাশ্চর্য ধাতব চক্রেই।

2/7

কী এই নীল চক্র?

What Is Neela Chakra

জগন্নাথ সংস্কৃতির পবিত্রতম প্রতীক হল নীল চক্র। এই চাকাটিকে ভগবান বিষ্ণুর সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবেও ধরা হয়। বিষ্ণুর অবতার শ্রীকৃষ্ণের আরেক রূপই জগন্নাথ মহাপ্রুভু। মন্দিরের ভিতরে এই নীল চক্রই আবার সুদর্শন চক্র হিসেবে পূজিত হয়। 'সুদর্শন'-এর আকৃতি এবং আকারে এর নির্মাণ, চাকার আকারে নয়। মন্দিরে ভগবান জগন্নাথের বাঁ-দিকে, একটি ছোট কাঠের স্তম্ভের আকৃতিতে এই চক্র রয়েছে।

3/7

কেন বলা হয় নীল চক্র?

Why The Chakra Is Called Neela Chakra

পুরো চক্রের আবির্ভাবের কারণেই নীল চক্র বলা হয়। সূর্যের রশ্মিতে চক্রের রং বদলে যায়। সূর্যোদয়ের সময় এই চক্রটি সাদা রঙের দেখায় এবং তারপরে রংটি ধীরে ধীরে হালকা নীল হয়ে যায়। মধ্যাহ্নে এই চক্রকে পুরোপুরি নীল রঙের দেখায়। নীল চক্রের রং সূর্যাস্তের সময় আবার বেগুনি রঙের ছায়ার মতো দেখায়। যা অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং সুন্দর।

4/7

নীল চক্রের গঠন ও আকার

Structure And Size Of Neela Chakra

নীল চক্র ৮ ধাতুর মিশ্রণে তৈরি অর্থাত্‍ অষ্টধাতুর (সোনা, রুপো, তামা, লোহা, টিন, সীসা, দস্তা এবং পারদ)। নীল চক্রের উচ্চতা  ১২ ফুট, ওজন প্রায় ১৫০০-২০০০ কেজি, ব্যাস ৭.৬ ফুট, পরিধির পুরুত্ব ০২ ইঞ্চি, পরিধির প্রস্থ ০৯ ইঞ্চি ও কেন্দ্রীয় বৃত্তের ব্যাস ২.৬ ফুট, চাকার বারের সংখ্যা ৮ ও প্রতিটি চাকা বারের দৈর্ঘ্য ১.১০ ফুট।     

5/7

নীলা চক্রের রহস্যময় কিছু তথ্য

Mysterious Facts About Neela Chakra

নীল চক্রে ওড়ে লাল-হলুদ পতাকা। যার নাম পতিত পবন। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হল হাওয়ার বিপরীত দিকে এই পতাকা ওড়ে। হাওয়ার দিক পরিবর্তনের সঙ্গে পতাকা ওড়ার দিক বদল হয় না। নীল চক্রের উপরে পাখি উড়তেও দেখেননি কেউ, এমনকী কোনও বিমানও যায় না। মানুষের বিশ্বাস, মহাজাগতিক শক্তিই মন্দিরের নীল চক্রের উপর দিয়ে উড়ন্ত বস্তুগুলিকে বাধা দেয়। এবং এটি প্রাকৃতিক নো ফ্লাইং জোন! আশ্চর্যজনক বিষয় হল যে, কেউ যে কোনও প্রান্ত থেকে ওই নীল চক্রের দিকে তাকাক না কেন, মনে হবে চক্রটি যেন তাঁর দিকেই ঘোরানো। পুরীর প্রতিটি ভবনের ছাদ থেকে নীল চক্র দেখলে মনে হবে সামনের দিক থেকেই দেখা হচ্ছে। নীল চক্র থেকে নীল রঙের রশ্মি তৈরি হয়, যা হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত দেখা হয়। একবার আমেরিকার কিছু বিজ্ঞানীও এই নীল রঙের আলো দূর থেকে দেখেছিলেন, এবং পরে তাঁরা অনুসন্ধান করে জানতে পারেন যে এই আলো জগন্নাথ মন্দিরের নীল চক্র থেকেই আসছে। নীল চক্রে কখনও ধুলো পড়ে না, জং ধরে না। দ্বাদশ শতকে মন্দিরটি তৈরির সময়ে নীল চক্র স্থাপিত হয়েছিল। সেই সময় প্রযুক্তিও তেমন উন্নত ছিল না। তাহলে কীভাবে চূড়ার উপর অত ভারী চক্রটি বসানো হল, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।  

6/7

নীল চক্রের কী ইতিহাস

History Behind Neela Chakra

নীল চক্রের ইতিহাস ৪৩০ বছরেরও বেশি পুরনো। প্রথম নীল চক্রটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং পরে বারবার তা তৈরি হয়েছে। ১৫৯৪ সালে রাজা রামচন্দ্র দেবের আমলে, নীল চক্রটি শ্রী দামোদর চম্পতিরয় মন্দিরের শীর্ষে পুনর্নির্মাণ ও স্থাপন করেছিলেন। যিনি ছিলেন আবার বড় জেনা মহাপাত্রের পুত্র। ১৬৯৪ সালের ৬ অক্টোবর প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে দাপটে নীল চক্রটি কাঞ্জি গণেশ মন্দিরের সামনে গিয়ে পড়েছিল। এরপরের কিছু বছর নীল চক্র ছাড়াই মন্দির ছিল। তবে ১৭৫১ সালের ২৬ জানুয়ারি পরমানন্দ পট্টনায়েকের পুত্র ধরুম হরিচাদন পুণরায় তা পুণরায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শিলালিপি, মাদালা পঞ্জি এবং অভিলেখা অনুসারে এমনটাই জানা যায়।  

7/7

নীলা চক্রের জন্য আচার অনুষ্ঠান

Rituals Perform for Neela Chakra

নীল চক্রের আচারগুলিকে 'চক্র মনোহি' বলা হয়। প্রতি একাদশীর মহাদীপ রাতে নীল চক্রে পুজো নিবেদন করা হয়। প্রতিদিন গরুড় সেবক/ধ্বজা বন্ধ সেবক খুঁটি থেকে পুরনো পতাকা সরিয়ে নতুন পতাকা বেঁধে দেন। আচার অনুসারে, নীল চক্রের পতাকা ছাড়া শ্রীমন্দিরের দেবতাদের প্রসাদ দেওয়া হয় না।