কমলিকা সেনগুপ্ত:   ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছে। তবে  শারীরিকভাবে এখন কতটা সুস্থ তিনি? ফের কবে ফাইটার জেট চালাবেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান? এই প্রশ্ন এখন প্রায় প্রত্যেক দেশবাসীর মনে...জি ২৪ ঘণ্টাকে ফোনে সে সব প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন গ্রুপ ক্যাপটেন শুভাগত জোয়ারদার, যিনি অভিনন্দনের একসময়ের ‘শিক্ষাগুরু’।  তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কতটা সাহসী অভিনন্দন, কবে ফের যুদ্ধ জাহাজ ওড়াবেন তিনি...


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 



 সেদিন যখন F 16 ঘিরে ফেলেছিল অভিনন্দনের বিমানকে, তখন তিনি বুঝেছিলেন এই ‘চক্রব্যূহ’ থেকে তাঁকে বেরিয়ে আসতেই হবে। কিন্তু কীভাবে বেরবেন?  যুদ্ধ বিমানের গতি প্রায় ৯০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। এর মধ্যেই পাক বিমানের চোখে ধুলো দিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে অভিনন্দনকে।


উইং কমান্ডার অভিনন্দের ওই ক্যারিশ্মার কথা ব্যাখ্যা করলেন একদা 'গুরু' ক্যাপ্টেন শুভাগত। তিনি বলেন, ফ্লাইট জেটের চালকের পাশে থাকা ইজেক্ট হ্যান্ডেল টানেন অভিনন্দন। ওই হ্যান্ডেল চাপার ফলে যুদ্ধ বিমানের চালকের আসনের নীচে থাকা একটা রকেট মর্টার ফায়ার হয়। এর শক্তি নিয়েই আসনে বসে থাকা পাইলট ককপিট থেকে যুদ্ধবিমানের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। তার পর একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর প্যারাসুট খোলে। সেই মুহূর্তে অসম্ভব চাপ তৈরি হয়।  ওই চাপের মধ্যেই সফলভাবে প্যারাসুট খুলতে পেরেছিলেন অভিনন্দন। তবে, ওই চাপ সহ্য করতে গিয়ে তাঁর ঘাড় এবং কোমরে গুরুতর আঘাত লাগে।   


তিনি বলছেন, প্যারাসুট নিয়ে মাটিতে অবতরণের থেকেও যে সময়ে যুদ্ধ বিমান থেকে আরোহী প্যারাসুট নিয়ে নামেন, তখন  তাঁর ওপর অনেক বেশি শরীরে চাপ পড়ে। অভিনন্দনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল।


আরও পড়ুন: আরও ৮ সপ্তাহ গ্রেফতার করা যাবে না মুকুলকে, জানিয়ে দিল আদালত


প্যারাসুট নিয়ে  মাটিতে পড়ার সময়ে অভিনন্দনের  ঘাড়ে ও কোমর ভীষণ চোট লেগেছে। অন্যান্য সময়ে এসব ক্ষেত্রে আরোহী যদি নিজ ভূমিতে পড়েন, তাঁকে সেখান থেকে তত্ক্ষণাত্ সরানো হয় না। সোজা চিত্ হয়ে শুয়ে থাকা নিয়ম। দ্রুত প্রাথমিক চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হয়।  তার ওপর কীভাবে তিনি মাটিতে পড়লেন, সেই বিষয়টিও নির্ভর করে।  কিন্তু অভিনন্দনের ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। পাকিস্তানের মাটিতে পরার পর নিজেকে বাঁচাতে তাঁকে বন্দুকে নিয়ে দৌঁড়তে হয়েছিল। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পাকিস্তানি জনতা তাঁকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছে। এরফলে তাঁর শরীরে আরও বেশ চোট লেগেছে। মানসিক আঘাত তো বটেই, শারীরিক চোট সারিয়ে উঠতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে অভিনন্দনের।


আরও পড়ুন: সারদাকাণ্ডে রাজীব সংক্রান্ত নথি –সহ তদন্তকারী অফিসারকে দিল্লিতে তলব


প্রাক্তন ডিরেক্টর এয়ার ডিফেন্স শুভাগত জোয়ারদারের মতে, অভিনন্দন মাটিতে ঠিক কীভাবে পড়েছিলেন, তাঁর ঠিক কোথায় চোট লেগেছে, তার ওপরই নির্ভর করছে কত তাড়াতাড়ি  সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি। সেটা ৪ মাসও হতে পারে কিংবা কয়েক বছর। তাঁর কথায়, “অভিনন্দন সাহসী ছেলে, আমরা চাইবো সে তাড়াতাড়ি ককপিটে ফিরে আসুক।


দেশে ফেরার পর অভিনন্দনকে আমরা যেভাবে দেখেছি, তাতে বোঝার উপায় নেই, শরীরের ওপর দিয়ে ঠিক কতটা ধকল গিয়েছে তাঁর। শুধু তিনি ও তাঁর সহকর্মী ও ঘনিষ্ঠরাই সেটা বুঝবেন। তবে  অভিনন্দনের মতো একজন ফাইটার পাইলটকে দ্রুতই স্কোয়াড্রনে দেখতে মরিয়া দেশবাসী।