মোবাইল টাওয়ার লোকেশনই ধরিয়ে দিল অর্চনা পালংদার খুনে জড়িত `তৃতীয় ব্যক্তি`কে!
ধৃত বিজয় যাদব নিউমার্কেটের যে হোটেলে অর্চনা খুন হন, সেই হোটেলের ম্যানেজার হরিহরের ভাই।
নিজস্ব প্রতিবেদন : উল্টোডাঙার গৃহবধূ অর্চনা পালংদার খুনে গ্রেফতার করা হল আরও একজনকে। বুধবার রাতে বালি থেকে এক ক্যাব চালককে গ্রেফতার করল আনন্দপুর থানার পুলিস। জানা গিয়েছে, ধৃত ক্যাব চালকের গাড়িতে করেই অর্চনা ও বলরামের দেহ লোপাট করা হয়। উল্টোডাঙার গৃহবধূ খুনে এই নিয়ে মোট ২ জনকে গ্রেফতার করা হল।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ক্যাব চালকের নাম বিজয় যাদব। গোপন সূত্র মারফত পুলিস জানতে পারে বালি এলাকায় আত্মগোপন করে রয়েছে অভিযুক্ত ক্যাব চালক বিজয়। তারপর মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন দেখে বিজয় যাদবের নাগাল পায় পুলিস। প্রাথমিক জেরার পর পুলিস আরও জেনেছে, ধৃত বিজয় যাদব নিউমার্কেটের যে হোটেলে অর্চনা খুন হন, সেই হোটেলের ম্যানেজার হরিহরের ভাই। ঘটনার পর দেহ লাপোটের উদ্দেশে ভাই বিজয় যাদবকে ফোন করে ডেকে আনেন হরিহর। তারপরই বস্তাবন্দি করে আনন্দপুর পাম্পিং স্টেশন ও নোনাডাঙায় ফেলে আসা হয় অর্চনা ও বলরামের দেহ।
আরও পড়ুন, মেয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণ নিয়ে ধুন্ধুমার, মেরে মাথা ফাটাল পড়শি
১৭ সেপ্টেম্বর মোবাইল সারানোর নামে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান অর্চনা। ৩ দিন পর চৌবাগা লকগেটে গৃহবধূ অর্চনার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার করে আনন্দপুর থানার পুলিস। খুনের ঘটনায়, প্রথম থেকেই সন্দেহের তির গিয়ে পড়ে অর্চনার প্রেমিক বলরামের উপর। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন বলে একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় পুলিস। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল বলরাম। পরে বলরামের ফোনের কললিস্ট ঘেঁটে ধর্মতলার হোটেলকর্মী আশিস যাদবকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করে পুলিস। আশিসকে গ্রেফতারির পরই মোড় ঘুরে যায় আনন্দপুর হত্যাকাণ্ডের।
জেরায় ধৃত আশিস জানায়, অর্চনাকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছে বলরাম। আশিসকে জেরা করে পুলিস জানতে পারে, মৃত্যুর আগে ৬এ এস এন ব্যানার্জি রোডে অবস্থিত হোটেল আতলান্তিকে প্রেমিক বলরামের সঙ্গে উঠেছিলেন অর্চনা। বিগত কয়েক মাস ধরেই ওই হোটেলে আসা যাওয়া ছিল যুগলের। ১৭ সেপ্টেম্বর নিজেদেরকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেলে উঠেছিলেন অর্চনা ও বলরাম। কিন্তু পরদিন সকালে জলখাবার দেওয়ার জন্য ডাকতে গেলে কোনও সাড়া মেলেনি। বেশ খানিকক্ষণ ডাকাডাকির পরেও সাড়া না মেলায় 'মাস্টার কি' দিয়ে খোলা হয় ঘরের দরজা। তখনই বিছানার উপর থেকে উদ্ধার হয় অর্চনা ও বলরামের দেহ।
আরও পড়ুন, লক্ষ্মীপুজোর দিনই ঘরের জোড়া 'লক্ষ্মীর বিসর্জন'
আশিস জানায়, হোটেলের বদনাম এড়াতে এরপরই প্রমাণ লোপাট করতে সচেষ্ট হয়ে ওঠে হোটেল কর্তৃপক্ষ। রাতারাতি সরিয়ে ফেলা হয় যুগলের দেহ। বস্তাবন্দি করে অর্চনার দেহ ফেলে আসা হয় আনন্দপুর পাম্পিং স্টেশনে। অন্যদিকে নোনাডাঙায় ফেলা হয় বলরামের দেহ। বস্তাবন্দি জোড়া দেহ লোপাট করতে ডাকা হয়েছিল অ্যাপ ক্যাব। আশিসকে হেফাজতে নেওয়ার পর থেকে ওই অ্যাপ ক্যাবের চালককেই খুঁজছিল পুলিস। অবশেষে বুধবার রাতে পুলিসের হাতে এল অভিযুক্ত ক্যাব চালক বিজয় যাদব।