Kolkata: অনলাইন গেমে হেরে `আত্মহত্যার চেষ্টা` স্কুল-পড়ুয়ার, পুলিসের তৎপরতায় উদ্ধার
অনলাইন পড়াশোনার সুবাদে পড়ুয়াদের দীর্ঘক্ষণ অনলাইন থাকার অভ্যাস তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ, পড়ুয়াদের `স্ক্রিন অ্যাক্টিভিটি` বেড়েছে। যার জেরে তাদের নানা মানসিক সমস্যাও বেড়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: দ্বিতীয় হুগলি ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা স্কুল পড়ুয়ার। পুলিশের তৎপরতায় রক্ষা। বেহালার বাসিন্দা একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র রবিবার দুপুরে বিদ্যাসাগর সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করে বলে জানা যায়। যা প্রকারান্তরে আত্মহত্যারই চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন তার এই আত্মহত্যার চেষ্টা?
বেহালার এই কিশোরকে কাউন্সেলিং করার পর পুলিস প্রাথমিক ভাবে যা জানতে পেরেছে তা হল-- গত কয়েকমাস ধরেই ওই কিশোরের মধ্যে অনলাইন গেমে আসক্তি দেখা যাচ্ছিল। এজন্য বিভিন্ন সময়ে সে তার পরিবারের সদস্যদের থেকে বকাঝকাও খেত বলে জানা গিয়েছে। টালিগঞ্জের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র একটি অনলাইন গেমে এন্ট্রি নেওয়ার জন্য বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে বাবাকে না জানিয়ে টাকা তোলে। কিন্তু সেই গেমটিতে সে হেরে যায়। এজন্য সে নিজেও অবসাদে ছিল, আর তার পরিবারের লোকজনও তাকে বকাঝকা করেছেন বলে জানা যায়। সব মিলিয়ে হয়তো সে ভেঙে পড়ে। আর তারই জেরে আজ, রবিবার সে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে চলে আসে। এবং সেখান থেকে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করে।
পুলিসসূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি দুপুর ২টো১৫ নাগাদ ঘটে। এক পুলিসকর্মীর কিশোরটির হাবভাব সন্দেহজনক লাগে, তিনিই প্রাথমিক ভাবে নজর করেন যে ছেলেটি ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিদ্যাসাগর ব্রিজ গার্ড'য়ে খবর দেন। তাদের পেট্রোলিং ভ্যান এসে কিশোরকে উদ্ধার করে।
কিন্তু সামান্য গেমের জন্য এত বড় সিদ্ধান্ত? গেমের প্রতি এত আসক্তি যে নিজের জীবন তুচ্ছ হয়ে যাচ্ছে? কী বলছেন মনোবিদ?
এ শহরের অন্যতম মনোবিদ সহেলি গঙ্গোপাধ্যায় বিষয়টির বিশ্লেষণ করে জানান, ইদানীং অনলাইন পড়াশোনার সুবাদে পড়ুয়াদের অনলাইন থাকার একটা অভ্যাস তৈরি হয়েছে। আগে যেটা পড়ার ফাঁকে ফাঁকে হত, এখন সেটা পড়ার সুবাদেই পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটছে। অনেক সময়ে বোঝাও যাচ্ছে না। অর্থাৎ, পড়ুয়াদের 'স্ক্রিন অ্যাক্টিভিটি' অনেক বেড়েছে।
এই ধরনের পড়ুয়াদের সমস্যা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার সূত্রে মনোবিদ জানান, তিনি ক্লিনিকে দেখেছেন ইদানীং পড়ুয়াদের 'অনলাইন ইনভলভমেন্ট' বেড়েছে। তাদের 'স্ক্রিন অ্যাক্টিভিটি'র উপর বাবা-মায়ের নিয়ন্ত্রণ আর আগের মতো দেখা যাচ্ছে না। এর ফলে বাচ্চাদের মনোভঙ্গির পরিবর্তন ঘটছে। তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে আগ্রাসন। কমছে কনফিডেন্স-লেভেলও। গেমে হারলে বা জিতলে সেটা তার আত্মাভিমানের সঙ্গে সরাসরি বিজড়িত এমন একটা ভাবনায় ভেসে গিয়ে তারা এগুলি ঘটাচ্ছে।