Adenovirus: জ্বর-সর্দি-শ্বাসকষ্ট; ঘুম ওড়াচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ, মৃত্যু অন্তত ৬ শিশুর
এই মুহূর্তে কলকাতায় বি সি রায় শিশু হাসপাতালে শিশুদের ওয়ার্ডে অধিকাংশ বেড ভর্তি, ক্রিটিক্যাল ওয়ার্ড ভর্তি, এসএনসিইউর অধিকাংশ ভর্তি। এছাড়া বেসরকারি হাসপাতালগুলির যেখানে শিশুদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড রয়েছে সেখানে অধিকাংশ বেড জ্বরে আক্রান্ত শিশুতে ভর্তি
পিয়ালি মিত্র: আবহাওয়া বদলের সঙ্গে বহু মানুষ ভুগছেন জ্বর, সর্দি, কাশিতে। তবে কলকাতায় চিকিত্সকদের ঘুম ছুটিয়েছে অ্যাডিনোভাইরাস। জ্বর, সর্দি, কাশির জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরাল যে কলকাতার অধিকাংশ হাসপাতালের শিশুদের ওয়ার্ডগুলিই ভর্তি অসুস্থ শিশুতে। ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬ শিশুর।
আরও পড়ুন-দিল্লির বাইশ গজে এবার কোন নতুন রেকর্ড গড়লেন অশ্বিন? জেনে নিন
অ্যাডিনোভাইরাসের বাড়বাড়ন্তের কথা মাথায় রেখে শনিবারও রাজ্যের সব জেলার সিএমওএইচ, মেডিক্যাল কলেজের কর্তা ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
কলকাতায় অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণের এখন যে পরিস্থিতি তা বেশ উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আবহাওয়া বদলের সঙ্গে সঙ্গে বেশকিছু ভাইরাসের সংক্রমণ সাধারণভাবে দেখা যায়। এর মধ্য রয়েছে অ্যাডিনোভাইরাস, রাইনোভাইরাস, ইনফ্লুয়ে়ঞ্জা ভাইরাস। কিন্তু গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে দেখা যাচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণের জেরে বহু শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এই মুহূর্তে কলকাতায় বি সি রায় শিশু হাসপাতালে শিশুদের ওয়ার্ডে অধিকাংশ বেড ভর্তি, ক্রিটিক্যাল ওয়ার্ড ভর্তি, এসএনসিইউর অধিকাংশ ভর্তি। এছাড়া বেসরকারি হাসপাতালগুলির যেখানে শিশুদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড রয়েছে সেখানে অধিকাংশ বেড জ্বরে আক্রান্ত শিশুতে ভর্তি। আক্রান্তদের অনেককেই ক্রিটিক্যাল কেয়ার, কাউকে ভেন্টিলেশনে পর্যন্ত ভর্তি রাখতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এখনওপর্যন্ত অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণে ৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সবেমিলিয়ে পরিস্থিতি যথেষ্টই চিন্তার। স্বাস্থ্য়কর্তারা যেটা বলছেন, কলকাতা, হাওড়া ও শরহতলি এলাকায় অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও উচ্চরবঙ্গের কিছু জায়গাতেও এর সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে।
বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাস প্রসূন গিরি অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে বলেন, গত দেড় মাস ধরেই অ্যাডিনোভাইরাসের একটা সংক্রমণ চলছে। বাচ্চাদের মধ্যে যাদের বয়স ২ বছরের কম তাদেরই উপসর্গগুলি মারাত্মক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এদের জ্বরের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। অনেককেই অক্সিজেন দিতে হচ্ছে, ভেন্টিলেশনে রাখতে হচ্ছে। যাদের বয়স একটু বেশি অর্থাত্ ৬-৮ বছর তাদের জ্বর, গলাব্যথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থকাছে। রোজই ৫-৬টি বাচ্চা এমন আসছে যাদের ভেন্টিলেশন লাগবে। কিন্তু ভেন্টিলেশন না থাকার কারণে তা দেওয়া যাচ্ছে না। অবস্থা বেশ সংকটজনকই বলা যেতে পারে।
প্রভাসবাবু আরও বলেন, বাচ্চার যদি জ্বর, সর্দি কাশি থাকে তাহলে তা ভালো না হওয়া পর্যন্ত তাকে স্কুলে পাঠানো যাবে না। এতে স্কুলেও তা ছড়াবে। বড়রা যদি সর্দিকাশিতে আক্রান্ত হন তাহলে তারা নিজেরা শিশুদের কাছ থেকে দূরে থাকবেন। মাস্ক পরে থাকবেন। এক বা দুবছরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে তার ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করছে কিনা, নেতিয়ে পড়ছে কিনা, তাদের প্রস্রাব, পায়খানা নিয়মিত হচ্ছে কিনা। এসবে কোনও অস্বাভাবিকতা থাকলে সঙ্গে সঙ্গেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।