নিজস্ব প্রতিবেদন : "যদি কেউ ভুল করে থাকে, রাগ করবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মনে করবেন। এই ভোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট। তাঁর মতো এত উন্নয়ন আর কোথাও কোনও রাজ্য হয়েছে?" আজ বীরভূমে যুব যোগদান অনুষ্ঠানে ঠিক এইভাবেই 'হাতজোড়' করে আবেদন করলেন তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। যে অনুব্রত মণ্ডলের নামে বীরভূমে বাঘে-গরুতে একঘাটে জল খায়, আজ তাঁর মুখেই 'ভুল করার' কথা? খুব স্বাভাবিকভাবেই ভুঁরু কুঁচকাচ্ছেন অনেকেই। সমালোচকদের একাংশের দাবি, একুশের লড়াইয়ের 'আঁচ' হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই কোনওভাবেই একুশের লড়াইকে হাল্কাভাবে নিতে নারাজ শীর্ষ নেতৃত্ব। আদা-নুন জল খেয়ে তাই ময়দানে ঝাঁপিয়েছে ঘাসফুল শিবির।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

একদিকে করোনা ছিলই। তারপর 'গোদের উপর বিষফোঁড়া'র মত হাজির হয় আমফান। যাকে বলে 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা'! করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে ধুঁকতে থাকা জনজীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে দেয় আমফান। দুর্দিনে সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়। করোনা ও আমফান, দুক্ষেত্রেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই ক্ষতিপূরণ-ত্রাণ বণ্টনেও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। শাসকদলের নেতদের বিরুদ্ধে ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বারংবার সরব হয় বিরোধী শিবির। এমন পরিস্থিতিতে কড়া হাতে মোকাবিলার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের টাকায় ত্রাণ, ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতি করলে কাউকে বরদাস্ত করা হবে না বলে কড়া বার্তা দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর অপসারণও করা হয় বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতৃত্বকে। 


দুর্নীতি নিয়ে কড়া অবস্থানের পাশাপাশি একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে দলে বেশ কিছু সাংগঠনিক পরিবর্তনও ঘটান তৃণমূল নেত্রী। বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে জোর দেওয়া হয় দলের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে। আর এক্ষেত্রে সমাজে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে এমন তরুণ ও ব্যক্তিত্বদের তৃণমূলে যোগদানের ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তৃণমূলের রণনীতি গুরু প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্কপ্রসূত 'ইয়ুথ ইন পলিটিকস'-এর মাধ্যমে বাংলায় তৃণমূলের হয়ে নির্বাচনী লড়াই লড়ার জন্য সদস্য সংগ্রহের কর্মসূচি নেওয়া হয়। তারই সূচনা হল আজ। লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ যোগদান। কোথাও ৫০০, কোথাও ১০০০, কোথাও ৩০০ জন... এভাবে আজ প্রথমদিনে ১০ হাজার জন সদস্য যোগদান করেছেন বলে দাবি করেছে তৃণমূল। দলের তরফে এক সাংবাদিক বিবৃতি জারি করে একথা জানানো হয়েছে।


সাংবাদিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "কাজ করতে উৎসুক এই উদ্যমী যুবদের প্রত্যেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁদের রাজনৈতিক সফর শুরু করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।আজকের এই অনুষ্ঠানে তাঁরা শিশির অধিকারী, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মহুয়া মৈত্র ও লক্ষ্মীরতন শুক্লার মতো তৃণমূলের অভিজ্ঞ নেতাদের সঙ্গে কথোপকথনের সুযোগ পেয়েছেন।আগামী প্রজন্মের প্রতি সর্বদা দায়বদ্ধ থেকেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের বিশ্বাস 'ইয়ুথ ইন পলিটিক্সে' যাঁরা নিজেদের নথিভুক্ত করেছেন, তাঁরা সঠিক একটি মঞ্চ পাবেন।" সবমিলিয়ে একুশের বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ে বিজেপি যাতে এক ইঞ্চি জমিও না পায়, তাই একেবারে আঁটঘাঁট বেঁধে লড়াইয়ে ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূল।


আরও পড়ুন, হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে প্রকট 'গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব', ইউনিয়ন সভাপতির পদ খোয়ালেন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী