নিজস্ব প্রতিবেদন: শিবের ভক্ত। বাড়িতে তিন-তিনটি শিব। প্রতি সোমবার এক একটির মাথায় চড়ে  ৫১টি, ২১টি, ১১টি বেলপাতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেও শিবের মাথায় বেল পাতা দেন তিনি। এমনকি প্রতি দিন মাকে প্রণাম করে কাজ শুরু হয় বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের। ফেস অফে মুখোমুখি হয়ে এমনই অকপটে স্বীকার করলেন বীরভূমের ‘কেষ্ট’।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- আমি কি চুড়ি পরে আছি? ফেস অফে বিজেপিকে পাঁচন দাওয়াইয়ের হুঁশিয়ারি অনুব্রতর


খেতে ভালবাসেন পোস্ত। আর বলতে ভালবাসেন বলিউড স্টাইলে ‘ডায়লগ’। ম্যাড়ম্যাড়ে বাংলা সিনেমার স্ক্রিপ্ট তাঁর কখনই পছন্দ নয়। তাই ‘চড়াম-চড়াম’, ‘গুড় বাতাসা’, ‘পাঁচন’ কিংবা ‘উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে’-এমন সব ডায়লগ দিয়ে সবসময়ই কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেন। মাঝে মধ্যে বেফাঁস মন্তব্যও করে ফেলেন। যার জেরে বিতর্কের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, ‘ওর মাথায় অক্সিজেন কম ঢোকে।’ কিন্তু অনুব্রতর অকপটে কবুল, আসলে ‘স্লিপ অব টাং’ হয়ে যায়। হিট অব দ্য মোমেন্টস-এ এমন কথা বেরিয়ে যায়।


বাড়িতে গিয়ে আফশোস হয় না! এমন কথা না বললেই হতো...


প্রশ্ন শুনেই অনুব্রত মণ্ডল বলেন, হয় বইকি! এই ধরুন না, ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন চলাকালীন বলে ফেলেছিলাম, পুলিসের গাড়িতে বোমা মারো। কিন্তু ওটা আমি বলতে চাইনি। নির্দলরা পুলিসের গাড়িতে বোমা মেরেছিল। অনুব্রতর দাবি, ‘আমি বলতে চেয়েছিলাম পুলিসকে বোমা মারলে পুলিস কিন্তু ছাড়বে না।’


কেষ্ট স্বীকার করেন, এমন কথা বলে ফেলার পরও তাঁর কষ্ট হয়। তাঁর আরও বেশি কষ্ট হয়, যখন তাঁর মেয়ে বলে, ‘বাবা, তুমি ওই কথাটা বলেছো? কেন বললে?’ আর বিতর্কিত মন্তব্য করে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বকুনি খান, তখন নাকি অনুব্রতের স্ত্রী-মেয়ে ভীষণ খুশি হন বলে স্বীকার করেন অনুব্রত।


আরও পড়ুন- মাকে প্রণাম ও শিব, দুর্গার জপ করে দিন শুরু করেন অনুব্রত


বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে অনুব্রত কখনই বিচলিত নন। সোজা সাপটা ব্যাখ্যা তাঁর ঠোঁটের কোণে সর্বদা মজুত রয়েছে।  ‘গুড় বাতাসা’, ‘চড়াম-চড়াম’, ‘পাঁচন’ এমন কথার পিছনে কোনও ইঙ্গিত রয়েছে? এমন প্রশ্নে অনুব্রত বলেন, গ্রামের বাড়িতে অতিথি এলে গুড়-বাতাসা দেওয়া হয়। বাতাসা যখনই গুড়ে ভিজে যেত, তার রং হয়ে যায় কালচে। রক্ত যেমন শুকিয়ে যায় ঠিক তেমন।


কিন্তু এই উদাহরণটা টানলেন কেন?


অনুব্রতের সরল উত্তর, একেই গ্রীষ্মকাল। এই গরমে শুধু জল দেওয়া যায়! গুড়-বাতাসা না দিলে হয়।


আর চড়াম চড়াম?


অনুব্রত বলেন, দেখুন উত্সবে ঢাক বাজাতে হয়। বুথ থেকে কিছু দূরে চড়াম চড়াম না ঢাক বাজালে হয়। একটু ভাল লাগলো শুনতে। তারাও আরাম পেল।


আর পাঁচন?


অনুব্রতের যুক্তি, দেখুন ভোটের আগে অনেক উর্বর জমি রয়েছে। সেখানে অনেক দিন চাষ হয়নি। পাঁচনের বাড়ি না খেলে হবে না।


এ কোন পাঁচন? ওষুধ না নিমের পাঁচন?


ব্যাখ্যা দিলেন অনুব্রত। তিনি বলেন, না –না- না। গরু তাড়ানোর জন্য মোটা এক হাত লাঠি।


তবে, শেষে অনুব্রত মণ্ডল ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়ে গেলেন, আগামী লোকসভায় আর চড়াম-চড়াম নয়, এই পাঁচন দিয়েই ‘ভোটের ভূত’ তাড়াবেন তিনি।