Primary TET: অভিযানের পরই `নিখোঁজ`! খারাপ ব্যবহার করেনি পুলিস, বলছেন সেই অর্ণব-ই
`থানায় আমাদের সঙ্গে কোনও দুর্ব্যবহার করা হয়নি। আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করছিল পুলিস। আমরাও জানাই কীরকম দুর্নীতি আমাদের সঙ্গে হয়েছে। আমাদের কোনও আটক করা হয়নি।`
শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্য়ায়: মধ্যরাতে পুলিসি অভিযান। করুণাময়ীতে এপিসি ভবনের সামনের অবস্থান থেকে ২০১৪-র টেট চাকরিপ্রার্থীদের তুলে দেয় পুলিস। অভিযোগ, বলপ্রয়োগ করে আন্দোলনকারীদের তুলে দেয় পুলিস। রীতিমতো টেনে হিঁচড়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে অসুস্থও হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন। এককথায় মধ্যরাতে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সল্টলেক করুণাময়ী। আন্দোলনকারীদের মধ্যে বহু মহিলাও ছিলেন। তাই তাঁদের সরানোর জন্য মহিলা পুলিসও নিয়ে আসা হয়েছিল। রীতিমতো চ্যাংদোলা করে বহু চাকরিপ্রার্থীকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় পুলিস। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় অবিলম্বে ১৪৪ ধারা সুনিশ্চিত করার জন্য। এমনকি পুলিস 'পাওয়ারলেস' কিনা? সেই প্রশ্নও তোলে আদালত। তারপর থেকেই উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছিল। ওদিকে হাইকোর্টের নির্দেশের পর রণকৌশল পাল্টে ফেলেছিলেন ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণরাও। সবাই একসঙ্গে না থেকে ৪ জন-৪ জন করে দল তৈরি করে আলাদা আলাদাভাবে বসেন তাঁরা। তবে শেষমেশ মধ্যরাতে পুলিস আন্দোলনকারীদের তুলতে 'পাওয়ার' প্রয়োগ করে।
এখন আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পরই তাঁরা অভিযোগ করেন যে, তাঁদের ৩ জন নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। কে কে? অচিন্ত্য ধারা, অর্ণব ঘোষ ও অচিন্ত্য সামন্ত। তাঁদের কোথাও খোঁজ মিলছে না! এই প্রসঙ্গে আন্দোলনকারীদের মধ্যে কেউ বলেন, অচিন্ত্য ধারা বিধাননগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ছিলে। সেখান থেকে পুলিসের এক অফিসার তাঁকে ডেকে নিয়ে যান। কেউ বলেন, অর্ণব ঘোষকে আলাদা প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছে, সেটা দেখেছেন। আবার কেউ বলেন, অচিন্ত্য সামন্তকে বিধাননগর পূর্ব থানায় শেষবার দেখেছিলেন। ফোন চার্জ করতে বসিয়েছিলেন অচিন্ত্য। একজন তাঁকে ডেকে অন্য ঘরে নিয়ে যায়। তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই তাঁর! শেষে শুক্রবার সকালে খোঁজ মেলে 'নিখোঁজ' ৩ চাকরিপ্রার্থীর।
আরও পড়ুন, বাংলায় গণতন্ত্রের পরিবেশ নেই, চাকরিপ্রার্থীদের ওপর পুলিসের লাঠিচার্জ প্রসঙ্গে সরব দিলীপ
পুলিস সূত্রে জানা যায়, তাঁদের বিধাননগর পূর্ব থানায় আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। এরপরই 'নিখোঁজ' অর্ণব ঘোষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয় জি ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধি। পুলিসের গাড়িতেই তখন হাইকোর্ট যাচ্ছিলেন অর্ণব। আদালতে যাওয়ার পথে ফোনে অর্ণব ঘোষ বলেন, 'আমাদের বিভিন্ন থানায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছিল। তারপর বিধাননগর পূর্ব থানায় নিয়ে আসা হয়। থানায় আমাদের সঙ্গে কোনও দুর্ব্যবহার করা হয়নি। আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করছিল পুলিস। আমরাও জানাই কীরকম দুর্নীতি আমাদের সঙ্গে হয়েছে। আমাদের কোনও আটক করা হয়নি।' অর্থাৎ, অর্ণব ঘোষ সাফ জানান যে, পুলিস তাঁদের সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করেনি।