৫৬ ঘণ্টা পার, এখনও জ্বলছে বাগরি, হিমশিম দমকলকর্মীরা
আজই বাগরি মার্কেট থেকে নমুনা সংগ্রহ করবেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। সোমবারও বিশেষজ্ঞরা বাগরি মার্কেটে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করতে পারেননি।
নিজস্ব প্রতিবেদন : দু'দিন কেটে গিয়েছে। তবু এখনও ধিকিধিকি জ্বলছে বাগরি মার্কেট। ইতিমধ্যে চাঙর খসে পড়ছে কোথাও কোথাও। সব মিলিয়ে বাগরি মার্কেটের আগুন এখনও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বাগরি মার্কেটের সব জায়গা থেকে দ্রাহ্য বস্তুও সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। এর ফলে ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে বাগরি মার্কেটে দমকলকর্মীদের কাজ। দু'দিন পেরিয়ে গিয়েছে। বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন দমকল কর্মীরা। কিন্তু এখনও বাগে আসেনি বিধ্বংসী আগুন। এর উপর সোমবার সন্ধ্যায় ফের নতুন করে আগুন লাগে মার্কেটের ৪ তলায়। আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে দমকলের ৩৫টি ইঞ্জিন। সোমবার সারা রাত বাগরি মার্কেটেই ছিলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন, কেন সেনা ডাকা হল না? বাগরির আগুনে বাড়ছে ক্ষোভ
মঙ্গলবার সকাল হতেই বাগরি মার্কেট চত্বরে চলে আসেন কলকাতার পুলিস কমিশনার রাজীব কুমার। মার্কেটের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পুলিস কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। এই মুহূর্তে মার্কেটের তিন ও চারতলায় দমকল ও পুলিসকর্মীরা একসঙ্গে বেশিজন উঠতে পারছেন না। কারণ, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, একসঙ্গে বেশিজন উঠলে কম্পনে ছাদের বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই, বিল্ডিংয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি ফাটল তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে, এদিনই বাগরি মার্কেট থেকে নমুনা সংগ্রহ করবেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। সোমবারও বিশেষজ্ঞরা বাগরি মার্কেটে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করতে পারেননি। বাগরি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায় বর্তেছে কলকাতা পুরসভার কাঁধে। সূত্রের খবর, ২০১০-এ স্টিফেন কোর্টে আগুন লাগার পর পরই বাগরি মার্কেটের মালিকদের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থায় নজর দিতে বলা হয়। কিন্তু, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। তা সত্ত্বেও বাগরি মার্কেটের ট্রেড লাইসেন্স রিনিউ করে কলকাতা পুরসভা। বাগরিদের কাছে যায় শুধুমাত্র সতর্কতার নোটিস। কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি পুরসভা।
আরও পড়ুন, পদ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সহবাস! গ্রেফতার বিজেপি নেতা, অভিযুক্ত আরও ৪
উল্লেখ্য, শনিবার রাত ২টো নাগাদ আগুন লাগে কলকাতার বড়বাজার এলাকার বাগরি মার্কেটে। দাহ্যবস্তু মজুত মার্কেটে মুহূর্তে বিধ্বংসী চেহারা নেয় আগুন। প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, একটি পারফিউমের দোকানে প্রথমে আগুন লাগে। একের পর এক ডিওডোরান্টের ক্যান ফাটতে থাকে পারফিউমের দোকানের ভিতর। অন্যদিকে, রাস্তার ধারেই রয়েছে ল্যাম্প পোস্ট। সবমিলিয়ে একের পর এক বিস্ফোরণে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সোমবারই মার্কেটের মালিক রাধা বাগরিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু, বালিগঞ্জ প্লেসে তাঁর বিশাল বাড়িতে গিয়ে পুলিস দেখে, দরজায় তালা। রাধা বাগরি ফেরার। তাঁর খোঁজে এখন তল্লাশি শুরু হয়েছে।