পদ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সহবাস! গ্রেফতার বিজেপি নেতা, অভিযুক্ত আরও ৪
রাজ্য বিজেপির পদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য না কি জাতীয় স্তরের অনেক নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনেও বাধ্য করেছিলেন অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: দিল্লির করলবাগ থেকে গ্রেফতার করা হল জাতীয় স্তরের বিজেপি নেতা তথা আরএসএস প্রচারক অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এক মহিলা বিজেপি কর্মীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার সহবাস করেছেন তিনি। এবং একই সঙ্গে রাজ্য বিজেপি-তে পদ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে আরও অনেক নেতার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনেও বাধ্য করেছেন তিনি।
ওই মহিলা বিজেপি কর্মী পুলিস-কে দেওয়া গোপন জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, ২০১৬ সাল থেকেই রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। মহিলা বিজেপি কর্মীর অভিযোগ, তাঁর সিঁথি-তে সিঁদুর দিয়েছেন অমলেন্দু। এরপরই না কি তাঁর উপর অবাধ যৌনাচার চালানো হয়। পুলিসের কাছে মহিলা বিজেপি কর্মী দাবি করেন, কলকাতায় থাকাকালীন রাতের পর রাত তাঁর বাড়িতেই কাটাতেন আরএসএস প্রচারক অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়। এমনকি কলকাতার বাইরে, জেলাতেও তাঁকে সঙ্গী করে নিয়ে যেতেন ওই নেতা।
জানা গিয়েছে, মহিলা বিজেপি কর্মীর ছেলে অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়কে ‘মায়ের সামাজিক স্বীকৃতি’র জন্য অনুরোধও করে। সেই সময় রাজি হলেও পরে বেঁকে বসেন অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়। আসতে আসতে যোগাযোগ কমিয়ে দেন, পরে তাঁর এবং তাঁর ছেলের সঙ্গে আরএসএস প্রচারক একেবারেই যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন বলে দাবি করেন মহিলা বিজেপি কর্মী। উপায় না পেয়ে অবশেষে পুলিসের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা বিজেপি কর্মী ও তাঁর ছেলে। অভিযোগ দায়ের করেন বেহালা থানায়। সেই ঘটনায় এ দিন (সোমবার) দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়কে।
সূত্রের খবর, ওই মধ্য বয়স্ক মহিলার মেডিক্যাল পরীক্ষার পর সহবাসের অভিযোগে সিলমোহর বসিয়েছে পুলিস। আরও জানা গিয়েছে, ওই মহিলা বিজেপি কর্মী রাজ্য বিজেপির পদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য না কি জাতীয় স্তরের অনেক নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনেও বাধ্য করেছিলেন অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়। এমনকি বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। তবে, অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর যে ‘ভালবাসার সম্পর্ক’ তৈরি হয়েছিল সে কাথাও স্বীকার করেছেন ওই মহিলা বিজেপি কর্মী। এই ঘটনায় অমলেন্দু চট্টোপধ্যায় ছাড়াও নাম জড়িয়েছে আরও ৪ আরএসএস প্রচারকের। ঘটনাচক্রে তাঁদের মধ্য অনেকেই আবার রাজ্য বিজেপির বড় পদে রয়েছেন। সব মিলিয়ে এলপিজি কেলঙ্কারিতে রণজিত্ মজুমদারের গ্রেফতারের পর এবার যৌন কেলেঙ্কারিতে প্রবীণ নেতা অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়ে পড়ায় অস্বস্তিতে মুরলিধর সেন স্ট্রিট। আরও চাপে রাজ্য বিজেপি।
এই ঘটনায় দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ব্যক্তিগত দু জনের বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে যেভাবে গ্যাস তদন্ত এবং এই ঘটনায় যে নামগুলো আসছে, তাতে মনে হচ্ছে সবটাই চক্রান্ত। সবই প্রায় একই নাম। অর্থাত্ শাসক দলের বক্তব্য খুব পরিষ্কার, ভয় পাইয়ে দাও। কোনও ভাবেই বিজেপি-কে আটকাতে পারছে না বলেই এই পথ বেছে নিয়েছে শাসক। যেভাবে কৈলাস বিজয়বর্গীয় থেকে শিবপ্রকাশের নাম জড়াচ্ছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে চক্রান্ত হচ্ছে।