অঞ্জন রায়


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

অপ্রত্যাশিত সাফল্য লোকসভা ভোটে। রাজ্যে প্রতিদিনই বিরোধী শিবির ছেড়ে নেতা-কর্মীরা ভিড়ছেন গেরুয়া শিবিরে। তারপরেও দিশাহীন রাজ্য বিজেপি। 'নাম কে ওয়াস্তে' একটা-দুটো বিক্ষোভ কর্মসূচি হলেও রাজনীতির ময়দানে 'মিস্টার ইন্ডিয়া' নেতানেত্রীরা। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে দলবদল বিতর্ক। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই বা বাদ যায় কেন! মুরলিধর লেনের বাড়িটায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, পুরনো ও নব্য বিজেপির লড়াই। তার একটা দিকে রয়েছেন মুকুল রায়, অপরপ্রান্তে পুরনো নেতারা। 


সাফল্যের কৃতিত্ব সকলেই নিতে চায়, কিন্তু ব্যর্থতা তো একা- লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির ১৮টি আসনপ্রাপ্তির পর এটাই চুম্বকে বিজেপির অন্দরের ছবি। রাজ্যে গেরুয়া উত্থানের কারিগর কে? সেনিয়েই বেঁধেছে গোল। পুরনো নেতৃত্বের একটা অংশ নিজেদের পিঠ চাপড়াচ্ছেন। আর খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করছেন মুকুল রায়কে। ওই অংশের মতে, দীর্ঘদিন ধরে সংগঠন তৈরি করেছেন তাঁরা। সেই ফসল ঘরে তুলেছে দল। একইসঙ্গে দলে তৃণমূল বা অন্য দলের নেতাদের অন্তর্ভূক্তিতেও রাশ টানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কেন? অনেকেরই আশঙ্কা, তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতারা দলে আসলে তাঁদের জায়গা হারাতে হবে।                             



লোকসভা ভোটের বছর দুয়েক আগে বাংলায় এসে অমিত শাহ বার্তা দিয়েছিলেন, বিরোধী দল ভাঙিয়ে নেতাদের আনতে হবে। তা না হলে বিজেপির পক্ষে ভালো ফল করা সম্ভব নয়। সেই রণনীতিতেই মুকুলের আগমন বিজেপিতে। তাঁর হাত ধরে এক এক করে দলে এসেছেন খগেন মূর্মূ, সৌমিত্র খাঁ, অর্জুন সিং ও নিশীথ প্রামাণিকরা। কিন্তু এবার দলবদলে লাগাম টানার চেষ্টা করছে বিজেপির মুকুল বিরোধী অংশ। ইতিমধ্যেই অমিত শাহের কাছে জমা পড়েছে একাধিক অভিযোগ। এরপরই তিন সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গড়ার নির্দেশ দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। আপাতত বিরোধী শিবির থেকে আসা নেতাদের দলে নেওয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার দেওয়া হয়েছে দিলীপ ঘোষকে। অনেকেই বলছেন, লোকসভা ভোটের আগে অনুপম হাজরা বাদে মুকুলের আনা নেতারাই পদ্ম ফুটিয়েছেন। অথচ ভোটের পর অন্য দল থেকে লোক আসলে বেসুরো গাইছেন নেতারা।
                             
নির্বাচনের পর দিল্লিতেই রয়েছেন রাজ্য বিজেপির সিংহভাগ নেতা। পর্যবেক্ষকরাও সংসদ নিয়ে ব্যস্ত। এমতাবস্থায় কোনও ইস্যুতেই বড়সড় আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না বিজেপি। কাটমানি নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে বটে। কিন্তু শাসক দলকে চাপে ফেলে দেওয়ার মতো কর্মসূচি নিতে পারেনি বিজেপি। বলা চলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দিশাহীন অবস্থা গেরুয়া শিবিরের। হতাশ দলে যোগদানকারী নেতা-কর্মীরাও। বুঝেই উঠতে পারছেন না, নতুন দলে তাঁদের ভূমিকাটা ঠিক কী? তৃণমূল ছেড়ে কী ভুল করেছেন? বিজেপির নিচুতলার কর্মীরাও মনে করছেন, যেভাবে আন্দোলন হওয়ার দরকার ছিল তা হচ্ছে না। আর এই সুযোগে ঘর গুছিয়ে নিচ্ছে শাসক দল।   


সবমিলিয়ে নব্য ও পুরনোর লড়াইয়ে এখন অথৈ জলে রাজ্য বিজেপি। ২০২১ সালের আগে দলীয় কোন্দলের মীমাংসা না করতে পারলে বিজেপিকে চড়া দাম চোকাতে হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।  


আরও পড়ুন- বাংলার স্কুলপাঠ্যে ক্ষুদিরাম বসু 'সন্ত্রাসবাদী', ভুল স্বীকার শিক্ষামন্ত্রীর