জাতীয় সংগীত গাওয়াতে গিয়ে খুন হতে বসেছিলেন, আজ পদ্মশ্রীতে সম্মানিত কলকাতার শিক্ষক মাসুম আখতার
শিক্ষা ও সাহিত্যে এবার পদ্মশ্রী পুরস্কার পাচ্ছেন যাদবপুর কাটজুনগর স্বর্ণময়ী স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজী মাসুম আখতার। কিন্তু কেন ভারত সরকারের এই সম্মান? কী অবদান তাঁর?
নিজস্ব প্রতিবেদন: শিক্ষা ও সাহিত্যে এবার পদ্মশ্রী পুরস্কার পাচ্ছেন যাদবপুর কাটজুনগর স্বর্ণময়ী স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজী মাসুম আখতার। কিন্তু কেন ভারত সরকারের এই সম্মান? কী অবদান তাঁর?
এই মুসলিম প্রধান শিক্ষক মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়াতে গিয়ে মৌলবাদীদের হাতে প্রায় খুন হয়ে যাচ্ছিলেন। ২০১৫র ২৬শে মার্চ। তখন মেটিয়াবুরুজের এক সরকার পোষিত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ছিলেন মাসুম সাহেব। মাদ্রাসার প্রার্থনাসভায় ছাত্র ছাত্রীদের জাতীয় সংগীত জনগণমন গাইয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এলাকার বাল্যবিবাহ বন্ধে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়াতেও তাঁকে টার্গেট করেছিল মৌলবাদীরা। লোহার রড দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেও কলম ধরেছেন তিনি। তিন তালাকের বিরুদ্ধে এক লক্ষ মানুষের স্বাক্ষর নিয়ে ছুটেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর দফতরে।
নিরাপত্তার কারণে ওই মাদ্রাসা থেকে ২০১৬র মে মাসে মাসুম সাহেবকে কাটজুনগর স্কুলে বদলি করে রাজ্য সরকার। গত ৩ বছরে এই রুগ্ন স্কুলকে কলকাতার অন্যতম সেরা স্কুলের পরিচয় দেন এই শিক্ষক। ক্লাসে ক্লাসে ছাত্র সংখ্যা দ্বিগুণ করে দেখিয়েছেন তিনি। প্রজাতন্ত্র দিবসে নিজের স্কুলে ছাত্রদের সঙ্গে আজ অন্য মুডে কাটালেন এ বারের সাহিত্য-শিক্ষায় পদ্মশ্রী প্রাপক মাসুম সাহেব। স্কুল জুড়ে দেখা গেল উৎসবের পরিবেশ। মাসুম আখতার বলেন “ এই সম্মান আমাকে দিল আমার দেশ। যতই হুমকি, হামলা হোক দায়িত্ব পালন থেকে এক মুহূর্ত সরব না।”
আরও পড়ুন- প্রজাতন্ত্র দিবসে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা মোদী-শাহ-মমতার
স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র অভীক রায় বলেন “স্যার আমাদের আইডল। আজকের এই বিশেষ দিনে স্যারের পদ্মশ্রী পাওয়ার খবরে স্কুলে হইচই পড়ে গেছে।” স্কুলের শিক্ষিকা প্রীতিকণা হাজরা বলেন“ব্যান্ড বাজাতে বাজাতে আজ স্যারকে মেন গেট থেকে স্কুলে বরণ করে এনেছে ছাত্রেরা। আমরা সত্যিই গর্বিত।”