কমলাক্ষ ভট্টাচার্য: নজরে এখন পঞ্চায়েত ভোট। সেই লক্ষ্যেই আজ সল্টলেকের ইজেডসিসিতে বিজেপির প্রদেশ মোর্চার বৈঠকে দলীয় নেতাদের ভোকাল টনিক দিলেন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদারের মতো শীর্ষ নেতারা। শুভেন্দু অধিকারীর সাফ কথা দীপবলির পর সবাই যাবে। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা বলেন, ইডির রিপোর্ট রাজ্যের নেতাদের দুর্নীতি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। দুর্গাপুজোর আগে ১ কুইন্টালরা গিয়েছে। কালীপুজোর আগে ১ কুইন্টালের নীচে যারা তারা জেলে গিয়েছে। দেওয়ালির পর সব যাবে। জামাই পালিয়েছে আমেরিকা। শালীকেও আমেরিকা যেতে হবে। সেই আবেদন খারিজ হয়ে গেছে। এইসব চোরেদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই করতে হবে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-'আমি তো চাই কারও চাকরি যেন না যায়'


শুভেন্দু বলেন,  এখন দেখছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্যে ইনসাফ সভা হচ্ছে। আমরা বলেছিলাম মোমিনপুরে ইনসাফ সভা কবে হবে। ওরা বলতে পারেনি। বলতে পারবেও না। সতর্ক থাকবেন। এদের সম্পর্কে বলে রাখলাম। রাজ্যে সাড়ে তিনশো বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া। ওইসব পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াতে হবে। তারা যাতে ডালভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে তা দেখতে হবে। গত দেড় বছর ধরে লাগাতার আন্দোলন করছি। বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড হয়েছি। কোথাও কিন্তু মাথা নোয়াইনি। পাবলিক অ্যাকাউ্নিটস কমিটির চেয়ারম্যানের পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ওরা ইডি সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কোনও রেজুলিউশন যখন করার চেষ্টা করেছে তখন বিধানসভায় লড়াই করে তা ভোটাভুটি পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছি।  


রাজ্যের পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ডিসেম্বর মাসের পরে এই সরকারটা সরকার হিসেবে থাকবে না। মর্নিং শোজ দ্যা ডে। দেখতে পাচ্ছেন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ বঞ্চিত প্রার্থীরা করুণাময়ীর সামনে লাগাতার অবস্থান করছেন। এই সরকার বলে কথায় কথায় কোর্ট হস্তক্ষেপ করে কাজ করতে দিচ্ছে না। সরকার চলে গিয়েছে কোর্টে। অবস্থানকারী চাকরিপ্রার্থীদের তোলার জন্য সরকার কোর্টে চলে গিয়েছে। অর্থাত্ যে সরকারে কোনও ক্ষমতা থাকে না সে কোর্টে চলে যায়। ডিসেম্বরের আগেই এই সরকার দুর্বল সরকারে পরিনত হয়ে গিয়েছে। সিপিএম আমলেও দেখেছি ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গণহত্যার পরে সরকারের কোনও সিদ্ধান কেউ মানত না। এই সরকারের সময়েও তা হয়েছে। 


পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন। শুভেন্দু বলেন, ভোটার তালিকা নিয়ে একটু বলি। ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় চলে গিয়েছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুনানি হবে। শুনে রাখুন, এই বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী যে ৯ জেলা রয়েছে সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস ও তার দলদাস প্রশাসনের একাংশ বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশীকে ভোটার তালিকায় না তোলার জন্য আবেদন করিয়েছে। তারা শুনানি করবেন নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন মেনে। নথি ভেরিফিকেশন না করে নাম তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। বারাসত ১ নম্বর ব্লকে সব না তুলে দেওয়া চেষ্টা হয়েছে।  চুরি করার দায়ে, হিসেব না দেওয়ার দায়ে একশো দিনের টাকা বন্ধ করা হয়েছে। কেন্দ্রের যে টিম তদন্তে এসেছিল তারা দেখেছে জালিয়াতি করে হাজার হাজার টাকা লুট হয়েছে। পুকুর নেই, অথচ তা কাটা হয়েছে। বাইরের রাজ্যে থাকে অথচ তার টাকা উঠেছে। রাজ্যে ১৪.৫ লাখ জব কার্ড বাতিল হয়েছে। আরটিআই করুন। দেখুন কী হয়েছে। উপর তলায় চোরদের ধরার দায়িত্ব তো কোর্ট আর এজেন্সি নিয়েছে। সুকান্ত মজুমদার লড়ছেন। আপনারা নিচুতলার চোরগুলোকে সামনে নিয়ে আসুন।  ইডির রিপোর্ট পাবলিক ডোমেনে এসেছ। পরিস্কার হয়ে গেছে কারা কারা ভেতরে যাবে। সভাপতি বলছিলেন শ্রমিক মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে আনে আর রানী তা চেটেচেটে খান।


অন্যদিকে, অনুষ্ঠানে সুকান্ত মজুমদার বলেন, বিজেপির অস্তিত্ব তার মোর্চা পরিবারকে নিয়েই। এই সরকারকে নবান্ন অভিযানের মাধ্যমে ধাক্কা দেওয়া শুরু করেছি। তার জন্য ওরা এখন ভুল বকছেন। বারবার এই সরকারকে ধাক্কা দিতে হবে। এই সরকারের এমন অবস্থা যে একটা ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে। নবান্ন অভিযানে যে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে যে মুখ্যমন্ত্রী এখন অসংলগ্ন কথা বলছেন। তাঁর ভুল বকা এমন যায়গায় পৌঁছেছে যে তিনি বলছেন টাটাকে আমরা সিঙ্গুর থেকে তাড়াইনি। আমি কিছু করিনি। দিদিমনি একটা মিথ্যে কথা বলার আগে তার প্রমাণতো লোপাট করুন! তাঁর পরিচালিত স্কুলে ক্লাস এইটের বইয়ে টাটাদের তাড়নোর জন্য তিনি কী কী করেছেন তা তিনি ভালো করে লিখে রেখেছেন। ওনার লেখা বেস্ট সেলার বই হবে আমি কিছু জানি না। সংগঠন গড়ে আন্দোলনেই সরকারকে উৎখাত করতে হবে। সকলে মিলে আন্দোলনকে সামনের দিকে নিয়ে যাব। 


রাজ্যে বিজেপি সভাপতি আরও বলেন, খেলা সবে শুরু হয়েছে। সবে দুটো উইকেট পড়েছে। আরও প্রচুর উইকেট পড়বে। হরেকমালের মত চাকরী বিক্রি হয়েছে। শ্রমিক মৌমাছি মধু এনে দিলে উনি চেটেচেটে খান। সময় চলে এসেছে নবান্নে গেরুয়া পতাকা উড়বে। প্রতি গ্রামে গ্রামে পার্থ আছে। যারা কাজের সময় থাকে না তারা মিডিয়ার সামনে বড়বড় ভাষণ দিচ্ছেন। এগিয়ে আসুন। চ্যালেঞ্জ নিন। শত্রুকে চিনুন। নিজেদের মধ্যে লড়াই না করে আসল শত্রুুর বিরুদ্ধে লড়ুন। সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে যান। আমাদের একজন নেতা নরেন্দ্র মোদী। আমি একজন সাধারণ কর্মী।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)