অঞ্জন রায় : রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের জন্য ফের দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। আজও এই দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যের দুই বিজেপি সাংসদ। বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ বর্মন আজ দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে বিজেপি কার্যকর্তা খুনে একদিকে যেমন সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন, তেমনই ফের একবার রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের পক্ষে সওয়াল করলেন। আর এতেই উঠছে প্রশ্ন। কী চাইছেন তাঁরা? 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বার বার রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ৩৫৬ ধারা রাজ্যে প্রয়োগের জন্য কেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করছে? রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের বাকি আর ১০ মাস। ঠিক তারই আগে থেকে কখনও রাজ্যপালের কাছে, কখনও কেন্দ্রীয়  নেতৃত্বের কাছে, আবার কখনও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এই দরবার করা হচ্ছে। তবে কি রাজ্য বিজেপি এটাই চাইছে যে, এরাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে তারপর বিধানসভা ভোট হবে? সূত্রে খবর, রাজ্য বিজেপি নেতারা যে এই কাজগুলি করছেন তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশেই করছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছে, যেভাবে প্রশাসনের রাজনৈতিকরণ হয়েছে, পুলিস-আমলা থেকে শুরু করে সবাই তৃণমূলের দালালি করছে, যেভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, আইনশৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি ঘটেছে, বিজেপির বহু কার্যকর্তা খুন হয়েছেন এবং বহু কর্মী ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা বাড়িছাড়া, এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ ছাড়া আর কোনও বিকল্প পথ নেই। 


এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে রাজ্য নেতৃত্ব একই দাবি করলেও, রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে এনিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ আবার মনে করছে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করলে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুকূলেই যাবে। বিধানসভা নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে। 'শহিদ'-এর সহানুভূতি নিয়ে সেক্ষেত্রে ভোটে জিতে 'চ্যাম্পিয়ন' হয়ে ফিরবেন তৃণমূল নেত্রী। রাজ্য বিজেপির একাংশ তাই মনে করে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এখন কোণঠাসা। তাই ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে তাঁকে শহিদ বানানোর কোনও দরকার নেই। রাজ্যে নেতৃত্বের এই বক্তব্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আবার একমত নয়। 


প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে দিল্লিতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের যে ৪ দিনের বৈঠক ছিল, তাতে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। ঠিক হয়েছে, চলতি অগাস্টে এই বিষয় নিয়ে ফের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বসবেন। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের পক্ষেই সওয়াল করেছেন তিনি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেছেন রাজ্যপাল। এমনকি জানা যাচ্ছে, রাজ্যের বিভিন্ন বিরোধী দল রাজ্যপালের কাছে রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা নেই, প্রশাসনিক দুর্নীতি, প্রশাসনের রাজনৈতিকরণ, গণতন্ত্র নেই- এইসব যে অভিযোগ করেছে, তার সবই তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। 


এখন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব মনে করে, রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের জন্য এটাই বিরাট কারণ। কারণ, সব বিরোধী দল এককাট্টা হয়ে একই দাবি করছে। কোনও রাজ্যে যদি ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা না থাকে, তবে সেই সরকারের থাকার যৌক্তিকতা কোথায়? শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব বিরোধীদলের এককাট্টা অভিযোগকেই এবার হাতিয়ার করতে চাইছে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও তারা মনে রাখছে, ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করলে শাসকদল আদালতে যেতে পারে। তাই সবদিক দেখে তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ে জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।


আরও পড়ুন, ঘুম ছুটেছে নির্মলের! মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নপূরণে দিনে ১৬ ঘণ্টা মেডিকেলে চরকি পাক কাটছেন