বিরোধী নেত্রী মমতার বক্তব্য হাতিয়ার করে বাংলায় এনআরসি-দাবি তুলবে বিজেপি
আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, কাটমানির মতো বিষয়গুলির সঙ্গে বিজেপির রণনীতিতে বড় জায়গাজুড়ে রয়েছে সীমান্তের অনুপ্রবেশকারী সমস্যা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: গোটা দেশে চালু হবে নাগরিকপঞ্জি। অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানো হবে। বুধবার রাজ্যসভায় অমিত শাহের এহেন বক্তব্যের পরই এরাজ্যে রণনীতি তৈরি করতে শুরু করল বঙ্গ বিজেপি। আগামী দিনে অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে প্রচারে ঝড় তুলতে চাইছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। আর সেই প্রচারের তীব্রতা বাড়াতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২০০৫ সালের সংসদের ভাষণই হাতিয়ার বিজেপির।
আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, কাটমানির মতো বিষয়গুলির সঙ্গে বিজেপির রণনীতিতে বড় জায়গাজুড়ে রয়েছে সীমান্তের অনুপ্রবেশকারী সমস্যা। আর তাদের হাতিয়ার ২০০৫ সালে সংসদে মমতার বক্তব্য। বিজেপির দাবি, বাম জমানায় এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তো সংসদে বলেছিলেন, বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অনু্প্রবেশের ফলে রাজ্যের জনসংখ্যার ভারসাম্য বদলে গিয়েছে। অথচ সরকারে আসার পর তিনিই বিরোধিতা করছেন। আসলে তখন সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ছিল বামেদের দখলে। এখন তাতে ভাগ বসিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। সে কারণেই মমতা বিরোধিতা করছেন।
বিজেপির কৌশল, ২০০৫ সালে সংসদে মমতার সেই বক্তব্য ছড়িয়ে দিতে হবে জনমানসে। স্পিকারের উদ্দেশে এক তাড়া কাগজ ছোড়ার ভিডিয়ো ক্লিপটিও ব্যবহার করা হবে। তাদের দাবি, মমতার দ্বিচারিতা তুলে ধরাই লক্ষ্য। ২০০৫ সালে অনুপ্রবেশকারী তাড়ানোর দাবিতে সোচ্চার নেত্রীই পরিবর্তনের জমানায় ভোটব্যাঙ্কের জন্য বাংলার ক্ষতি করছেন।
গোটা বিষয়টিতে যাতে সাম্প্রদায়িক ছোঁয়া না লাগে, তাও নিশ্চিত করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। মূলত, অনুপ্রবেশের সঙ্গে মানুষের দৈনন্দিন রুটি-রুজির সমস্যাকে যোগ করতে চাইছে তারা। প্রচারে বিজেপি প্রশ্ন তুলবে, দেশে চাকরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্যে অনুপ্রবেশকারীরা কেন ভাগ বসাবে?
লোকসভা ভোটেই নাগরিকপঞ্জি নিয়ে জমে উঠেছিল বিজেপি-তৃণমূলের তরজা। বিজেপি নেতৃত্ব, খোদ নরেন্দ্র মোদী এসে বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, অসমের মতো বাংলাতেও চালু হবে নাগরিকপঞ্জি। অনুপ্রবেশকারীদের রাজ্য থেকে বিতাড়ন করা হবে। তার বিরোধিতা করে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট জানিয়েছেন, বাংলায় নাগরিকপঞ্জি চালু করতে দেবেন না। বিজেপি ঠিক করে দেবে, কে দেশে থাকবে? লোকসভা ভোটে বিজেপির ইস্তাহারেও রয়েছে দেশজুড়ে নাগরিকপঞ্জি চালুর প্রতিশ্রুতি। সে কথা এদিনও মনে করিয়ে দিয়েছেন অমিত শাহ। লোকসভা ভোটে অনুপ্রবেশকারী নিয়ে লাগাতার প্রচারে কাজ হয়েছে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা। সে কারণে ২০২১ সালের আগে অনুপ্রবেশকারী তাড়ানোর দাবিতে প্রচারের মাত্রা তুঙ্গে নিয়ে যেতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন- রাজ্যের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সিরিয়া, পাকিস্তানে রয়েছি: সব্যসাচী দত্ত