নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা, জেলা থেকে বাংলার গণ্ডি পেরিয়ে গোটা দেশ।  জন্মদিনে নেতাজিকে স্মরণ করল বাম-ডান সব দলই। তবে, স্মরণ-শ্রদ্ধা সবকিছুকেই যেন ছাপিয়ে গেল রাজনীতি। প্রশ্নটা উঠে এল, নেতাজি তুমি কার? বামেদের দাবি, উনি সোশ্যালিস্ট ছিলেন। বিজেপির আবার বক্তব্য, সুভাষচন্দ্র বসু ছিলেন দেশপ্রেমিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার হিন্দু মহাসভাকে নিয়ে নেতাজির  উদ্ধৃতি স্মরণ করিয়ে দিলেন। সবমিলিয়ে ২৩ জানুয়ারি হয়ে উঠল রাজনীতির আখড়া।     


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

নেতাজির জন্মদিনে ভিডিয়ো টুইট করেন নরেন্দ্র মোদী। প্রচারের ব্যাপারে বাকিদের টেক্কা দেওয়ায় সিদ্ধহস্ত  প্রধানমন্ত্রী। ভিডিয়োয় নেতাজি টুপি পরে মোদীকে দেখা গেল। কোলাজে উঠে এল, আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫ বছরে লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন। লালকেল্লায় সুভাষ মিউজিয়ামের উদ্বোধন, আন্দামান নিকোবর
দ্বীপপুঞ্জে সুভাষচন্দ্রের স্মৃতিতে তিনটি দ্বীপের নতুন নামকরণ- কিছুই বাদ দিলেন না নমো। সঙ্গে লিখলেন,''ঔপনিবেশিক শাসনে বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কাছে দেশ চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকবে। ভারতবাসীর কল্যাণ, তাঁদের উন্নয়নের জন্য লড়াই করেন তিনি।'' 




প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতা নেতাজির বংশধর চন্দ্র বসু কাঠগড়ায় তুলেছেন কংগ্রেসকে। তাঁর কথায়,''বাংলা মানে নেতাজি। নেতাজিকে নিয়ে উন্মাদনার কোনও অধিকার নেই কংগ্রেসের।  নেহরু থেকে সরোজিনী নাইডু, পটেল সকলেই পিছন থেকে ছুরি মেরেছিলেন।  ১৯৪৪ সালে স্বাধীনতা এনেছিল আজাদ হিন্দ বাহিনী। গান্ধী ও নেহরুই তো ষড়যন্ত্র করেছে। সত্যিটা প্রকাশ করা হোক।''    



প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দলের লোকজন যখন সুভাষ-স্মরণে, তখনই নেতাজির মৃত্যু-রহস্য প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে নেতাজি যে বিজেপির মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন না, তাও মনে করিয়ে দেন। তৃণমূল নেত্রী বলেন,''নেতাজি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলতেন। ঝাড়গ্রামে হিন্দুমহাসভার সমালোচনা করেছিলেন।'' 


সুভাষ-স্মরণে সবাই। নেতাজির ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের কথা তুলে বিজেপিকে আক্রমণের সুযোগ ছাড়ল না সিপিএম ও তৃণমূল। ফিরহাদ হাকিম বলেন,''নরেন্দ্র মোদী টুইট করেছেন। এতই যদি প্রীতি তাহলে কেন তাঁর জন্মদিনে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করছে না কেন্দ্রীয় সরকার? সুভাষচন্দ্র বসু বাংলার গর্ব। আমাদের সরকার ছুটি দেয়।''



গত ১২ জানুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে কলকাতা বন্দরের নতুন নামকরণের কথা ঘোষণা করেন নরেন্দ্র মোদী। ওই প্রসঙ্গ তুলে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন,''নেতাজিকে নিয়ে কারও কোনও কথা সাজে না। ওরা শ্যামাপ্রসাদ ও সাভারকরকে নিয়ে চুপচাপ থাকুন। কলকাতা বন্দরে নেতাজি ডক রয়েছে। তার মাথার উপরে শ্যামাকে বসিয়ে নেতাজিকে অপমান করেছে। নেতাজিকে সামনে রেখে দেশপ্রেম দিবস পালন করব। এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি।''   


এদিন, রেড রোডে নেতাজি মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানান ফরওয়ার্ড ব্লক-সহ বাম নেতারা। সুভাষ বসুর জন্মদিন, দেশপ্রেম দিবস হিসাবে পালনের দাবিতে কলকাতায় মিছিল করে বামেরা। 
রেড রোডে শ্রদ্ধা জানান নেতাজির পৌত্র চন্দ্র বসুও। কলকাতা পুরসভায়, জাতীয় পতাকা তোলেন মেয়র। ময়দানে নেতাজি মূর্তিতে মালা দেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় ফিরহাদ হাকিমরা। 


আরও পড়ুন- 'হিন্দুরাষ্ট্র ইজ রেপিস্ট' ব্যানার, 'ভারত মাতা সে আজাদি' স্লোগান বাম পড়ুয়াদের