অঞ্জন রায়


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আর কটা দিন। তারপরই দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে উঠবে বাঙালি। কিন্তু এবার দুর্গাপুজোর আগে বেঁধে দিয়েছে দক্ষযজ্ঞ। দুর্গাপুজোয় দলকে সামিল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। সেই নির্দেশ পালনে শহরের পুজো কমিটিগুলি শাসক দলের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু সংগঠনের খুঁটির জোর না থাকায় লাঠির ঘা খেয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে বিজেপি নেতাদের। 


বাম জমানাও দুর্গাপুজোয় যুক্ত থাকতেন সিপিএম নেতারা। কিন্তু দলের আদর্শ মেনে আড়ালে থাকতেন তাঁরা। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সবে জনসংযোগের মওকা কেই বা ছাড়তে চায়! তবে প্রতিটি পুজোয় থাকে বাম মনোভাবাপন্ন বইয়ের দোকান। রাজ্যে পালাবদলের পর পুজো কমিটিগুলিতে জাঁকিয়ে বসেন তৃণমূল নেতারা। অরূপ বিশ্বাস, ববি হাকিম, পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের পুজো তো জনমানসেও হিট। আর পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুজো উদ্বোধনের সংখ্যাও। গতবছর মহালয়ার আগে থেকে শুরু হয়ে গিয়েছিল মমতার পুজো উদ্বোধন। সংস্কৃতি, ধর্ম, নিষ্ঠার সঙ্গে বঙ্গের পুজোয় জড়িয়ে গিয়েছে রাজনীতি, গ্ল্যামারের ছটা, পুরস্কার থেকে থিমের বাহার। 



এতদিন ফাঁকা মাঠেই রাজত্ব করেছে তৃণমূল। তাদের চ্যালেঞ্জ করার কেউ ছিল না। কিন্তু লোকসভা ভোটে ১৮টি আসনপ্রাপ্তির পর পুজো উদ্বোধন দলীয় নেতাদের দিয়ে করিয়ে দিল্লিতে নম্বর বাড়াতে উত্সাহী হয়ে উঠেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। তার উপরে আবার খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নির্দেশ এসেছে, দুর্গাপুজোয় জড়াতে হবে দলীয় নেতা-কর্মীদের। মিশে যেতে হবে বাঙালির আবেগের সঙ্গে। 


কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি অনুধাবন না করেই পুজো দখল করতে ছুটে গিয়েছেন বিজেপি নেতারা। আর সেটা করতে গিয়ে মুখ পুড়েছে দলের। লোকসভা ভোটে ১৮টি আসনপ্রাপ্তির পর বিজেপি নেতারা ভেবেছিলেন, এটা বোধহয় তাঁদের সংগঠনের কৃতিত্ব। কিন্তু বাস্তববোধ না থাকলে যা হয় আর কি! সংঘশ্রীর পুজোর খুঁটি পুজোয় গেলেন এক বিজেপি নেতা। কিন্তু খুঁটি আর ধরে রাখতে পারলেন না। মঙ্গলবার আবার ওই নেতাই রাসবিহারীতে গিয়ে ঝামেলা পাকিয়েছেন। দলের মধ্যেই উঠছে প্রশ্ন, সংগঠন নেই। বাস্তব স্বীকার করে কেন আগ বাড়িয়ে পুজোয় দখলদারি করতে গিয়ে তামাশার পাত্র হচ্ছেন ওই নেতা। এতে সংগঠনের হাঁড়ির হাল তো আরও বেপর্দা হয়ে গেল।  


পুজোর আবহেই এক কোটি সদস্য সংগ্রহের টার্গেট দিয়েছেন অমিত শাহ। সেটা জোগাড় করতে গিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে গোটা দল। এহেন পরিস্থিতি অযথা শাসক দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার মানে হয় না বলেও মনে করে নেতৃত্বের একাংশ। তার উপরে পাড়ার পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকা সাধারণ নেতা-কর্মীরাও চলে এসেছেন তৃণমূলের সন্দেহের নজরে। তাঁরাও অভিযোগ করেছেন, রাজ্য নেতারা দিল্লিতে নম্বর বাড়াতে গিয়ে পাড়ায় সম্পর্ক নষ্ট করছেন।   
   
বিজেপি নেতাদের আগ বাড়িয়ে পুজো দখলের চেষ্টায় ডিভিডেন্ট পেয়ে গিয়েছে শাসক দল। এক তো তারা দেখিয়ে দিয়েছে, ১৮টা আসন জিতলেও এখনও সাংগঠনিক শক্তিতে বিজেপি নেহাতই শিশু। তার উপরে কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে দখলদারি রাজনীতির অভিযোগও করেছেন তৃণমূল নেতারা। দিনের শেষে কাজের কাজ তো হলই না, উল্টে দলের মুখে চুনকাম মাখিয়ে চলে আসল নেতৃত্ব।  


আরও পড়ুন- ইজরায়েলেও মোদী ম্যাজিক, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে করমর্দনরত ছবি দেখিয়ে ভোটপ্রচার