CMC: ডাক্তারির প্রথমবর্ষের পড়ুয়াদের `চরক শপথ` পাঠ, তুমুল বিক্ষোভ কলকাতা মেডিক্য়ালে
এনিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ডাক্তাররা হিপোক্রিটাসের নামে শপথ নেয়। আর চরকের নামে শপথ নিলে সাম্প্রদায়িকতা হয়ে যায়?
নিজস্ব প্রতিবেদন: ডাক্তারি পড়ুয়াদের প্রথাগত হিপোক্রেটসের নামে শপথের পরিবর্তে প্রাচীন আয়ূর্বেদ চিকিত্সক মহির্ষি চরক-র নামে শপথ নেওয়াকে কেন্দ্র করে তুমুল বিতর্ক শুরু হল কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজে। এনিয়ে বিক্ষোভ দেখাল এআইডিএসও।
কিছুদিন আগে হিপোক্রেটসের পরিবর্তে চরক-এর নামে শপথ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ। ন্য়াশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের কোনও নির্দেশ না আসলেও কেন এরকম সিদ্ধান্ত তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। গতকাল ছিল মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস পড়ুয়াদের প্রথম বর্ষে ক্লাসের শুরু। সেখানে কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজে 'হিপোক্রেটিক ওথ' এর পরিবর্তে পাঠ করানো হয় 'চরক শপথ'। এনিয়ে অধ্যক্ষের কাছে বিক্ষোভ দেখায় এআইডিএসও। ডেপুটেশনও দেওয়া হয়।
এআইডিএসও-র রাজ্য কাউন্সিল সদস্য সৌম্যদীপ রায় বলেন, সাধারণভাবে প্রথম বর্ষের ক্লাসের শুরুতে একটা হোয়াইট কোর্ট সেরিমনি হয়। সেখানে দেখা গেল হিপোক্রেটাস ওথ-এর পরিবর্তে ছাত্রদের 'চরক শপথ' পড়ুয়াদের দিয়ে পাঠ করান হল। প্রশ্ন হল এই চরক শপথ এল কোথা থেকে? এনএমসির ওয়েবসাইটে দেখবেন চরক শপথ নেই। কিন্তু ইন্টারনেটে সার্চ করলে দেখবেন গুজরাটে আরএসএসের শাখা সংগঠন এনএমও ২০১৭ সাল থেকে চরক শপথ চালু করেছে। এখানে মেডিক্য়াল কলেজ কর্তৃপক্ষে সেটাই কপি করে চালাচ্ছে। আমরা এরে বিরোধতি করছি। এনএমসির কোনও নির্দেশিকা নেই। তাহলে কেন এই চরক শপথ?
এনিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ডাক্তাররা হিপোক্রিটাসের নামে শপথ নেয়। আর চরকের নামে শপথ নিলে সাম্প্রদায়িকতা হয়ে যায়? চরক এদেশের মানুষ। তাঁর নামে শপথ নেওয়ায় সমস্য়া কী? বিদেশি একজনের নামে শপথ নেওয়া যায় আর দেশের একজনের নামে শপথে নিয়ে আপত্তি? বামপন্থী ঐতিহাসকরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছে বিদেশি যা কিছু তার সবই ভালো। ভারতীয় কোনও কিছু তা ভালো নয়।
উল্লেখ্য, ডাক্তারি পড়ুয়ারা সাধারণভাবে শপথ নেন গ্রিক দার্শনিক ও চিকিত্সক হিপোক্রেটাসের নামে। এটিকে বলা হয় 'হিপোক্রেটিক ওথ'। সেই শপথে একজন ডাক্তারি পড়ুয়া অঙ্গীকার করেন, 'চিকিত্সার নামে কারও ক্ষতি করব না। রোগীর স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেব। তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় গোপন রেখে তাঁর জীবন রক্ষার চেষ্টা করব।' এই শপথের পরিবর্তে এবার নেওয়া হয়েছে চরক-এর নামে শপথ। এনিয়ে অনেক আগেই সরব হয়েছিল আরএসএস। তবে এনএমসির গাইডলাইন মেনেই শপথ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজের অধ্যক্ষ।
আরও পড়ুন-"ছেলেটা মুসলিম তাই সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছে", আনিসকাণ্ডে বিস্ফোরক দিলীপ