নিজস্ব প্রতিবেদন: গণপিটুনিতে মৃত্যু রুখতে বিধানসভায় কড়া বিল পাশ করাল রাজ্য সরকার। শুক্রবার সর্বসম্মতিকে পাশ হয়ে গেল ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রিভেনশন অব লিঞ্চিং বিল বা গণপিটুনি প্রতিরোধ বিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, কেন্দ্র আইন করতে পারেনি, বাংলা করে দেখাল। তবে বিলকে নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্কও। চূড়ান্ত বিল ও খসড়ার মধ্যে রয়েছে ফারাক।   


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গণপ্রহার ঠেকাতে কড়া হাতে রাশ ধরল রাজ্য। বাংলার বিধানসভায় সর্বসম্মতিতে পাশ হয়ে গেল গণপিটুনি প্রতিরোধ বিল। এখন থেকে আইনত, গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। এদিন আলোচনার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ যখন একটা অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন বাংলা বড় ভূমিকা পালন করল। কেন্দ্র আইন করতে পারেনি, বাংলা করে দেখাল।



বিলের যে প্রাথমিক খসড়াটি বিধায়কদের হাতে দেওয়া হয়, সেখানে সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবজ্জীবনের সুপারিশ করা হয়েছিল। শেষবেলায় খসড়া বদল করে মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান করা হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পিটিয়ে মারা হলে আইনের চোখে খুন হিসেবে ধরা হয়। খুন করা হলে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী, সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। গণপিটুনিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলে সাজা লঘু হয়ে যাচ্ছিল। কেন্দ্রীয় আইন ও রাজ্যের আইন সংঘাত হতে পারে না। তা চ্যালেঞ্জ হয়ে যেতে পারত আদালতে। ৩০২ ধারার মতোই খসড়ার ভুল শুধরে একই সাজার সংস্থান করা হয়েছে।


গণপিটুনিতে কঠিন আইনে আপত্তি নেই, কিন্তু কেন হাউসে সংশোধনী পেশ না করেই বিলে বদল হল? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। বলেন,''আমাদের সরকারের উদ্দেশ্য গণপিটুনির সঙ্গে যুক্ত তারা যেন কঠোর শাস্তি পায়। কিন্তু যে পদ্ধতিতে তা করা হল, তা সমর্থনযোগ্য নয়। এতে আমাদের শঙ্কা হচ্ছে।'' এদিন বিরোধীরা দাবি করেন, পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনার জন্য বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হোক। যদিও শেষমেশ কড়া আইনের পক্ষেই সর্বসম্মত ভাবে সায় দিয়েছে বিধানসভা। সিপিএমের বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেন, ''বিলে প্রশাসন ও পুলিসকে দায়বদ্ধ করা হচ্ছে না। সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি করেছিলাম। কিন্তু ফাস্ট বয় প্রমাণ করতে তাড়াহুড়ো করে পাশ করিয়ে দিলেন। আমরা সমর্থন করেছি। তবে শঙ্কা রয়েছে আমাদের।'' 


কী বলছে এই বিল?  


গণপিটুনিতে মৃত্যুর অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ন্যূনতম যাবজ্জীবন জেল এবং ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা।


২ জন বা তার বেশি লোকজন মিলে কাউকে মারলে তা গণপিটুনি হিসেবে গণ্য হবে।


গণপিটুনিতে কেউ গুরুতর আহত হলে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা 


গণপিটুনিতে অল্প আহত হলে অভিযুক্তদের ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা।


গণপিটুনি রুখতে রাজ্য পুলিসের ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকবেন আইজি পদমর্যাদার এক নোডাল অফিসার।


কলকাতা পুলিসের ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার এক নোডাল অফিসার।


গণপিটুনির ঘটনায় রাজ্যের যে কোনও সব থানার ওসির ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে।


গণপিটুনি প্রতিরোধে আইন তৈরি করে নজির গড়ল বাংলা। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, এটাই নবজাগরণের শুরু।


আরও পড়ুন- দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ২৫ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিলে ২৫% ছাড়, ফের কল্পতরু মমতা