Coromandel Express Accident: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় রাজ্যে এখনওপর্যন্ত মৃত্যু কত জনের, জানাল নবান্ন
Coromandel Express Accident:ইতিমধ্যেই দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ক্যানিং পশ্চিম, ক্যানিং পূর্ব, বাসন্তী, গোসাবায় একাধিক আহত, সাত জন মৃত, ও একাধিক পরিবারের নিখোঁজ বলে জানা যাচ্ছে প্রশাসন সূত্রে। বাসন্তীতে ৬ জন ও ক্যানিংয়ে ১ জনের রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত প্রায় ৬৫০। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে কারণ বহু আহত যাত্রী ভর্তি রয়েছেন ওড়িশার বিভিন্ন হাসপাতালে। ত্রাণ ও উদ্ধারের জন্য রাজ্য সরকার বালাসোর ৭০টি অ্য়াম্বুল্যান্স ও ৩৪ জন চিকিত্সক পাঠিয়েছে বলে সূত্রের খবর। চেন্নাইগামী করমণ্ডল ছেড়েছিল শালিমার থেকে। ফলে ট্রেনে ছিলেন বাংলার বহু যাত্রী। তাদের অনেকই প্রাণ হারিয়েছেন। আহতের সংখ্য়া কয়েকশো। অনেককেই ঘটনাস্থল থেকে এনে মেদিনীপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপারেশনের প্রয়োজনে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালেও আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-দোষীরা কঠোর শাস্তি পাবেই, বালেশ্বর থেকে আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছে, বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের মতো ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে যারা করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন। আহত হয়েছেন ৫৪৪ জন। এদের মধ্যে ২৫ জন ওড়িশায় ও ১১ জন রাজ্যের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। প্রসঙ্গত, এই সংখ্যা আরও বেড়েছে। তবে সরকারিভাবে জানা যায়নি এদের সংখ্যা কত।
হাওড়া স্টেশনে আহত যাত্রীদের নিয়ে আসছে স্পেশাল ট্রেন। হাওড়া স্টেশনে মেডিকেল ক্যাম্প খোলা হয়েছে। সমস্ত বিষয় সরোজমিনে দেখতে হাওড়া স্টেশনে এলেন পুরো নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এদিকে খবর পাওয়া য়াচ্ছে ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত ৫২ জন যাত্রী এখনও পর্যন্ত মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ইতিমধ্যেই আটজনের মৃতদেহ এসে পৌঁছেছে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তাদের ময়নাতদন্ত করা হবে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য শংকর সারেঙ্গী জানান, সমস্ত হাসপাতালে চিকিৎসক নার্সদের ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে সুষ্ঠুভাবেই। নবান্ন থেকে আসা ২ জন সচিব সবকিছু খতিয়ে দেখে যান।
ইতিমধ্যেই দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ক্যানিং পশ্চিম, ক্যানিং পূর্ব, বাসন্তী, গোসাবায় একাধিক আহত, সাত জন মৃত, ও একাধিক পরিবারের নিখোঁজ বলে জানা যাচ্ছে প্রশাসন সূত্রে। বাসন্তীতে ৬ জন ও ক্যানিংয়ে ১ জনের রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া রেল দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে, বাসন্তীতে ১৯ জন, ক্যানিং পশ্চিমে ২০ জন, ক্যানিং পূর্বে ৬ জন ও গোসাবায় ১৭ জন। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন ক্যানিং পূর্বে ২ জন, গোসবায় ৭ জন, বাসন্তীতে ৩ জন, ক্যানিং পশ্চিমে ২ জন।
ওড়িশায় করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তরুণ রায় নামে এক শ্রমিকের। ৩০ বছরের তরুণ ময়নাগুড়ি ব্লকের মাধবডাঙা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। দুর্ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তরুণ। জেলা প্রশাসনের কাছেও তাঁর সম্পর্কে কোনও তথ্য ছিল না। অবশেষে শনিবার বিকেলে তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু সন্ধ্যায় জানান, তরুণ রায়ের মৃতদেহ আনার জন্য বিকেলে একটি অ্যাম্বুলেন্স ওড়িশায় পাঠানো হয়েছে।
বাবা ও ছেলে মিলে কেরালায় কাজে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল, এরপরই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। আহত ছেলেকে তড়িঘড়ি সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসে শনিবার কালনা মহকুমা হসপিটালে ভর্তি করে, ট্রেনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন আহত, পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের আকবপুর এলাকার বাসিন্দা হাফিজ উদ্দিন শেখ এবং তার ছেলে রহিম শেখ লেবারের কাজে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে, গতকালই করমন্ডল এক্সপ্রেস এ চেপেছিলেন এমন সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের ট্রেন। তার ছেলে ছিটকে পড়ে যায় ট্রেনের মধ্যে। কোন রকমে ট্রেন থেকে ছেলেকে নামিয়ে বাস ধরে ফিরে আসেন এই রাজ্য। অন্যদিকে কাজে যাওয়ার সময় সেই একই ঘটনার সাক্ষী রইলেন কালনার মন্তেশ্বরের বাসিন্দা,এরপরই মন্তেশ্বর প্রাথমিক ও কালনা মহকুমা হসপিটালে ভর্তি করে তার ছেলেকে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রহিম শেখ।
গতকাল ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত হাওড়ার নলপুরের বাসিন্দা সেখ মুন্না(৩৩)র দেহ পৌঁছল হাওড়ায়। যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে গতকাল তামিলনাড়ু থেকে হাওড়ায় বাড়ি ফেরার পথেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তার মৃত্যু হয়। রুটি রুজির তাগিদে পরিবার পরিজন ছেড়ে তাকে এরাজ্য থেকে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়েছিল। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর গতকাল যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে বাড়ি ফিরছিলেন। শনিবার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর মৃতদেহ শনাক্ত করেন। প্রশাসনের সহায়তায় এদিনই তার দেহ এসে পৌঁছয় হাওড়া হাসপাতালে। সেখান থেকে মল্লিকফটক মর্গে। ময়না তদন্তের পর দেহ তুললে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে।