জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শুক্রবার বালাসোরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় ২৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই এক্সপ্রেসে ছিলেন রাজ্যের বহু মানুষ। তাদের অনেকেই এখনও নিখোঁজ, অনেকে ওড়িশার হাসপাতালে ভর্তি। অনেককে এনে রাজ্যের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এনিয়ে বিস্তারিত জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি জানান, করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বাংলার ৬২ জনের। এখনওপর্যন্ত এদের সনাক্ত করা গিয়েছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- লাশ সনাক্ত করাই কঠিন, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ জানালেন রেলমন্ত্রী


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনা ঘটার পর থেকেই গোটা ঘটনার উপরে নজর রাখছি আমরা। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছে।  অনেক পরিবার এখনও জানে না তাদের প্রিয়জন এখন কোথায় রয়েছে। মানস ভুইয়া, দোলা সেন ও আমার সিএমওতে কাজ করেন মানস সাহাকে ওখানে পাঠিয়েছিলাম। মোট ১৫০টি অ্যাম্বুল্যান্স, ৫০ জন ডাক্তার পাঠিয়ে, নার্স পাঠিয়ে অন্যান্য ক্ষেত্রের লোক পাঠিয়ে উদ্ধারকাজে সাহায্যে করি। কেন্দ্র কথা বলে বেশি, কাজ করে কম। ওড়িশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা কাজটা করেছি।


মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় আরও বলেন, সবার খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অনেকে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও অন্য ট্রেনটির অসংরক্ষিত কামরা থাকে। সেখানে অনেকেই উঠে যান। তাদের তালিকা থাকে না। সেসব লিস্ট এখনও আমাদের হাতে আসেনি। এখনওপর্যন্ত বাংলারই ৬২ জন মারা গিয়েছেন। এদের সনাক্ত করা গিয়েছে। আরও অনেকে রয়েছে। ওড়িশা থেকে নিয়ে এসে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে ২০৬ জনকে ভর্তি করেছি। ওড়িশাতেও আমাদের রাজ্যের ৭৩ জন ভর্তি রয়েছেন। চিকিত্সার পর ছাড়া হয়েছে ৫৬ জনকে। ১৮২ জনকে সনাক্ত করা যায়নি। 


করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতির উপরে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলানো হচ্ছে। এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, খড়গপুর থেকে, সাঁতরাগাছি থেকে খোঁজখবর করা হচ্ছে। নবান্নতেও কেন্দ্র রয়েছে। রাজ্যের কয়েকজন আইএএস অফিসার খড়গপুর, মেদিনীপুরে, রাজ্যের সীমান্তে ডিউটি করছে। যখনই দেখছে তারা আমাদের এখানকার পেশেন্ট তখন তাদের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। কালও ৭০০ জনকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। যখনই কোনও দুর্ঘটনা হতো তখন আমার আমলে মৃতদের পরিবারের একজনকে চাকরি দিতাম। আমার সময়ে ম্যানড লেভেল ক্রসিং ছিল না। সব ছিল আনম্যানড। আমার সময়ে সিগন্য়াল চেঞ্জ করি, টেলিকম সিস্টেম চেঞ্জ করি। সব আনম্য়ানড লেভেল ক্রসিং ম্যানড করি। প্রায় ৪০০। আমি নিজে মাডগাঁও গিয়েছিলাম। অ্যান্টি কলিসন ডিভাইস দেখেছিলাম। যখন দেখলাম এটি সফল তখন তা বসানোর ব্যবস্থা করেছিলাম। তার পর থেকে দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে গিয়েছে। এটা কারও কৃতিত্ব নয়। এই সরকারের তো নয়ই।


উল্লেখ্য, দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের জল্পনা ছিল। আজ এনিয়ে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো। রবিবারও দুর্ঘটনাস্থলে যান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো। সেখানেই তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ জানা গিয়েছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ 'একটি ইলেকট্রনিক ইন্টালকিংয়ে রদবদল'। বৈষ্ণো বলেন, রেল সেফটি কমিশনার বিষয়টির তদন্ত করেছেন। সেই রিপোর্ট আসবে। তবে দুর্ঘটনার কারণ জানা গিয়েছে। কারা এর জন্য দায়ী তাদেরও চিহ্নিত করা গিয়েছে। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিংয়ে রদবদল করার জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আপাতত আমাদের সব ফোকাস রেল পরিষেবা শুরু উপরেই রয়েছে।


দুর্ঘটনার পরপরই বিরোধী শিবিরের তরফে দাবি করা হয়, অ্যান্টি কলিসন ডিভিইস যাকে 'কবচ' বলা হচ্ছে তা থাকলে এমন দুর্ঘটনা ঘটত না। গতকালই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, এমন এক গুরুত্বপূর্ণ রুটে অ্যান্টি কলিসন ডিভাইস ছিল না। রবিবার রেলমন্ত্রী সংবাদসংস্থা এএনআইকে বলেন, কবচের সঙ্গে এই দুর্ঘটনা কোনও সম্পর্ক নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল যা বলেছেন তা ঠিক নয়। ইলেকট্রনিক ইন্টালকিংয়ে বদল করার জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।


অন্যদিকে, আজ রেল বোর্ডের অপারেশন ও বিজনেস ডেভলপমেন্টের সদস্য জয়া ভার্মা সিনহা বলেন, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে সিগন্যালিংয়ের জন্যই এই দুর্ঘটনা।  রেল সেফটি বোর্ডের রিপোর্টের জন্য আমরা এখনও অপেক্ষা করছি। দুর্ঘটনার সময়ে ট্রেনটির গতি ছিল ১২৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। রেলমন্ত্রী গত ৩৬ ঘণ্টা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। সেখানে তিনি উদ্ধারকাজ, পরিষেবা চালু করার কাজ তদারকি করছেন।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)