নিজস্ব প্রতিবেদন: হাওড়া রেড জোন হওয়ার খেসারত দিলেন সন্তান সম্ভবা। প্রসব বেদনা নিয়ে এলেও NRS র প্রসূতি বিভাগ ঢুকতেই দিল না হাওড়া বাড়ি শুনে। বাধ্য হয়েই ফিরে গেলেন হাওড়ার বাড়িতে। সেখানেই তিনি শেষপর্যন্ত সন্তান প্রসব করলেন। তারপরেই মৃত্যু হল ওই সদ্যোজাতের।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ওই প্রসূতি জি ২৪ ঘণ্টাকে জানিয়েছেন, পরিবারের সদস্যরা হাতজোড় করে দ্রুত ভর্তি করার অনুরোধ জানান জুনিয়র ডাক্তারদের। প্রথমে বলা হলো,  এখানে ভর্তি হবে না। আপনারা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যান। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর ভর্তি তো দূরের কথা, গাইনি ইমারজেন্সিতে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের কেউ কেউ সাদা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললেন, "এখানে লিখে সই করে দিন আপনাদের রোগী এবং তার যে সন্তান জন্মাবে তাদের করোনা হলে হাসপাতাল দায়ি নয়।"


আরও পড়ুন-Live: রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ১৭৮, মৃত ১২ | দেশে আক্রান্ত ১৪৭৯২, মৃত ৪৮৮


তিনি আরও জানান, এখানেই শেষ নয়। তাঁরা আরও বললেন, "বাচ্চা জন্মানোর পর ১৪ দিন কেউ আপনার আসতে পারবেন না। তার মুখও দেখতে পারবেন না। একইসঙ্গে আমরা এই রোগীকে আইসোলেশন রেখে দেবো। কারণ আপনারা হাওড়া থেকে এসেছেন। ওই আইসোলেশনে কিন্তু কোন চিকিৎসা হয় না, মাথায় রাখবেন। "এভাবেই চলতে থাকে হুমকি।’


সুপারের অফিসে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই প্রসূতি। বললেন,  "আমার পেটের সন্তানকে বাঁচানোর আর্জি জানালাম। সিনিয়ররা বললেও একদল চিকিৎসক কোনোভাবে ভর্তি হতেই দিলেন না। বললেন,  হাওড়া রেড জোন। আমরা রিস্ক নেবো না।"


সুপারের অফিসের দ্বারস্থ হন ওই পরিবার। ভর্তি শেষমেষ সম্ভব হয়নি। প্রসব যন্ত্রণা নিয়েই বিভাগের দরজা থাকে ফিরে যান হাওড়ার বাসিন্দা। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ এমন অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী রইল এন আর এস মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।


আরও পড়ুন-লকডাউনের মধ্যেই হামলা জঙ্গিদের, সোপরে শহিদ ৩ আধাসেনা


এদিকে, বাধ্য হয়েই ওই প্রসূতি ফিরে যান তাঁর হাওড়ার বাড়িতে সেখানেই তিনি সন্তান প্রসব করেন কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই সন্তানের মৃত্যু হয়। ওই প্রসূতি জানান, আমার কন্ডিশন খুবই খারাপ ছিল। হাপাতালে আমাকে ওরা বলল করোনা রোগীর সঙ্গে থাকতে হবে। ওখানে জুনিয়র ডাক্তার থেকে সবাই আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। ওদের জন্য একজন পৃথিবীর আলো দেখতে পেল না।


সমগ্র বিষয়টি পৌঁছেছে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে। অধ্যক্ষ শৈবাল মুখার্জী বলেন,  "এমন ঘটনার কথা শুনলাম।  অভিযোগ পেয়েছি। আমি প্রসূতি বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। কারা আজকে সন্ধ্যায় দায়িত্বে ছিলেন তাদের নামের তালিকা চেয়েছি । কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনভাবে কোন রোগীকে কোন প্রসূতি মাকে ফেরানো যায় না।"