নিজস্ব প্রতিবেদন: পুরনো মেজাজে ফিরছে মহানগর। জনতার ভিড়, বাসের হর্ন, কনডাক্টরের হাঁকডাক সঙ্গে অটোর দৌরাত্ম। এখনও এই রণমূর্ত চেহারা না নিলেও, সকাল থেকে গোলপার্ক টু গড়িয়া, বেলঘরিয়া টু ধর্মতলা ঘুরে দেখা গেল কার্যত তেমনই ছেঁড়া চিত্র। কোথাও ঘনঘন বাস মিলছে, কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টার অপেক্ষা করে বাসের দেখা নেই এমনও ছবি ফুটে উঠলো। তেমনই, অটোয় বেশি ভাড়া নেওয়া, সোশ্যাল ডিসটেন্স না মানার অভিযোগও শোনা গেল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহানগরের যানবাহনের চিত্রটা কেমন ছিল, দেখে নেওয়া যাক এক নজরে।


ফুলবাগান থেকে গণেশ টকি:


স্বাভাবিক নিয়মে চলছে অটো। সামাজিক দূরত্ব মেনে অটোয় যাত্রী তোলা হচ্ছে। বেশি ভাড়া নিচ্ছেন? প্রশ্নে অটো চালক সুভাষ বসু জানালেন, পুরনো ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এক টাকাও বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। তিনি আরও জানান, ন্যূনতম ভাড়া ৭টাকা। ফুলবাগান থেকে গণেশ টকি পর্যন্ত ১৬টাকা। যাত্রীরা যদি দুজনের বেশি না যেতে চান, তাহলে তাঁদের এক একজনকে ১৬ টাকা দিতে হবে। যাত্রীরা কোন ভাড়ায় যেতে চান, ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের উপরেই।


মল্লার গেট থেকে তারাতলা:


এখানে আবার অটোয় যাত্রী তোলার ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। যাত্রীরা জানাচ্ছেন, আগে দু’জন উঠলে ভাড়া নেওয়া হতো ২৫ টাকা, এখন ২০ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কিন্তু যাত্রী তোলা হচ্ছে ৩ জন। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন যাত্রীরা।


গোলপার্ক থেকে গড়িয়া:


পুরনো ভাড়ায় এই রুটে চলছে অটো। তবে, সোশ্যাল ডিসটেন্সের বিধি শিকেয় উঠেছে। চার জন করে যাত্রী তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে, অটো চালকদের দাবি, নিজেদের সুরক্ষার কথা ভেবে ২ জন করে যাত্রী ওঠার কথা বলা হচ্ছে। চার জন যাত্রী উঠলে আপত্তি নেই বলেও জানান তাঁরা।



রুবির মোড় থেকে গড়িয়া হাট:


এই রুটে ন্যূনতম ভাড়া ৮টাকা। সর্বোচ্চ ভাড়া ১২ টাকা। প্রায় সাড়ে চারশো থেকে ৫০০ অটো চলাচল করে এই রুটে। প্রীতম সর্দার নামে ওই রুটের এক চালক বলেন, "যাত্রীরা যদি দুজনের বেশি না যেতে চান তাহলে তাঁদের এক একজনকে (১৬+১৬) ৩২ টাকা দিতে হবে।"


প্রীতম বাবু জানান, যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়টিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যেমন যাত্রীরা চাইবেন, সেই মোতাবেক অটো চলাচল করবে।



রাসবিহারি মোড়:


ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় যাত্রীরা। কিন্তু বাসের দেখা নেই। এমনই চিত্র দেখা গেল রাসবিহারি মোড়ে গিয়ে। এক যাত্রী একরাশ ক্ষোভ নিয়ে বলেই দিলেন, খুব কষ্ট হচ্ছে। কখন বাস পাবো বুঝতে পারছি না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। বেসরকারি বাসের দেখা নেই বলে অভিযোগ বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের।



গড়িয়াহাট:


এখানেও একই চিত্র দেখা গেল। পর্যাপ্ত পরিমাণে বাস নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা। বেলঘড়িয়ার বাসিন্দা সুজিত রাজ গোরিয়া তারাতলার একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তিনি জানান, ঘন্টা খানেক হতে চলল, বাসের দেখা নেই। বেলঘড়িয়া থেকে কোনওমতে গড়িয়াহাট পর্যন্ত আসতে পেরেছি। ২৩৪ নম্বর রুটের একটি বেসরকারি বাসে এসেছেন। ভাড়া নেওয়ার কথা ছিল ১২ টাকা। তাঁর কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা।


নাকতলা, টালিগঞ্জের ৮০ এ রুটের বেসরকারি বাস:


এই রুটের বাসের কনডাক্টরের দাবি, যত আসন ততই যাত্রী বসে আছেন। পুরনো ভাড়াই নেওয়া হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া কাউকেই উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, বেসরকারি বাস মিলছে না। এক ঘণ্টার উপর দাঁড়িয়ে থাকার পর এই রুটের বাসটি পাওয়া গিয়েছে। পুরনো ভাড়াই নেওয়া হয়েছে তাঁদের কাছ থেকে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।



ধর্মতলার বাস উধাও!


রাস্তায় নেমে নিত্যযাত্রীদের আরও অভিযোগ, ধর্মতলা যাওয়ার বাস মিলছে না ১২বি, ১২সি এবং ২৪১ নম্বর  রুটের এই বাসগুলি মেটিয়াব্রুজ, গার্ডেনরিচ হয়ে ধর্মতলার দিকে যায়। এর মধ্যে ১২সি রুটের বাসটি মেয়োরোড পর্যন্ত এসে সেখান থেকে হাওড়ার দিকে চলে যায়। খিদিরপুর থেকে যারা ধর্মতলার দিকে যাবেন বলে বাস স্ট্যান্ডে অপেক্ষারত, তাঁদের অভিযোগ, বেসরকারি বাস দেখাই মিলছে না। যাত্রীরা বলছেন, খিদিরপুর থেকে ধর্মতলা রুটের ট্রাম চলাচল চালু হয়ে গেলে খুব ভালো হয়। অন্তত হয়রানির হাত থেকে বাঁচা যাবে এমনটাই বলছেন যাত্রীরা।