নিজস্ব প্রতিবেদন : পুরভোটের আগেই দলীয় সমীক্ষায় নামছে তৃণমূল। শুরু হচ্ছে 'দিদিকে বলো'র পরবর্তী ধাপ। তৃণমূল সূত্রে খবর, ওয়ার্ড ভিত্তিক সার্ভে করা হবে কর্পোরেশন এলাকায়। আগামী বছর রাজ্যের প্রায় ১০৭টি পুরসভায় নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে দলের সংগঠন কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে, মানুষের মধ্যে জনভিত্তি কতটা মজবুত, পাশাপাশি বর্তমান কাউন্সিলারদের এলাকাভিত্তিক ভাবমূর্তি কেমন, এসব কিছু মেপে দেখতেই  সমীক্ষায় নামতে চলেছে তৃণমূল। খুব স্বাভাবিকভাবেই সমীক্ষার সেই কাজ করবে পিকের টিম।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আগামী ১৫ অক্টোবর তৃণমূল ভবনে বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে দলের সব ব্লক ও ওয়ার্ড সভাপতিদের ডাকা হয়েছে। বৈঠকে একইসঙ্গে উপস্থিত থাকবেন জেলা সভাপতিরাও।  বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, যুব সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অবশ্যই তৃণমূলের রণনীতিগুরু প্রশান্ত কিশোরের। বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সূত্রের খবর, পুজোর মধ্যেই তৃণমূলের শীর্ষ মহলের তরফে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে বেশকিছু নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রতি রাস্তা পিছু লোকজনের নাম-ঠিকানা চেয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। শহরের ক্ষেত্রে প্রতি ওয়ার্ড এবং গ্রামীণ এলাকার প্রতি ব্লকের বিভিন্ন রাস্তা পিছু ৫ জন করে স্থানীয়ের নাম জমা করতে বলা হয়েছে। প্রতি ওয়ার্ড বা ব্লক থেকে আপাতত সর্বাধিক ২০ জনের নাম-তালিকা দিতে হবে। পরের ধাপে আরও নাম চাওয়া হতে পারে।



প্রতি ব্লক অথবা ওয়ার্ড সভাপতিকে সেই ২০ জনের নামের তালিকা , রাস্তার নাম-ঠিকানা-ফোন নম্বর সহ দলের কাছে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে জমা করতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেই ২০ জনের মধ্যে দলীয় নিচুতলার কর্মীদের সঙ্গে রাজনীতির বাইরে আমজনতা ও বিশিষ্টদের নামও যেন থাকে সেই দিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, প্রতি বুথে ৩ জন করে কর্মীরও নাম ব্লক সভাপতিদের থেকে চাওয়া হয়েছে। এদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখবে শীর্ষ নেতৃত্ব | প্রয়োজনে সরাসরি এদের সঙ্গে কথা বলে সেই বুথ সম্পর্কে খোঁজ খবর নেবেন খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


শহর কলকাতায় প্রতি ব্লক বা ওয়ার্ডে মোটামুটি ৬০-৬৫  থেকে সর্বোচ্চ ৮০-৮৫টি বুথ থাকে। সেখানে শহরতলি কিংবা গ্রামীণ এলাকায় সেই সংখ্যা ব্লক পিছু প্রায় গড়ে ২০০-২৫০টি বুথ। সেক্ষেত্রে প্রতি বুথে ৩ জন করে বুথকর্মী তৈরির পদক্ষেপ ২০২০-র পুরসভা নির্বাচন বা ২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের বুথস্তরের সংগঠনকে আরও মজবুত করার প্রচেষ্টা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। জেলা সভাপতি ও ব্লক সভাপতিদের নিয়ে বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই নামের তালিকা চাওয়া হবে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। যদিও সমীক্ষা সম্পর্কে দলের মধ্যে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি।


আরও পড়ুন, যাদবপুরে যারা মন্ত্রীকে মেরেছিল, অনেক শহিদবেদী তৈরি করে দেব, হুঙ্কার দিলীপের


কেমন হবে এই সমীক্ষা? প্রতি বুথে নির্দিষ্ট ৩ জন বুথ কর্মীদের দিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হবে। তাদের মাধ্যমে স্থানীয়দের মতামত সংগ্রহ করা হবে। অন্যদিকে, প্রতি বুথ ভিত্তিক যে ২০ জনের নামের তালিকা চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের থেকেও ফোন করে মনোভাব বোঝার চেষ্টা চলবে। কোন কাউন্সিলারের ভাবমূর্তি কেমন? এলাকায় কোন তৃণমূল নেতার কেমন আচরণ? কাকে কাউন্সিলারের টিকিট দিলে ওই এলাকায় সন্তোষজনক হবে ভোটের ফল? এলাকায় মানুষ কাকে চাইছেন? এলাকাভিত্তিক কী কী সমস্যা? বাড়ি বাড়ি ঘুরে কিংবা ফোন করে মানুষের সেই মনোভাব জানবে টিম পিকে। সেইমতো তৈরি হবে রিপোর্ট। আর তা জমা পড়বে তৃণমূল নেত্রীর কাছে। সেই রিপোর্ট পুঙ্খানুপুঙ্খ কাটাছেঁড়া করেই তৈরি হবে পুরভোটের প্রার্থী তালিকা।