বাংলা মিডিয়ামে পড়ে মানুষ হওয়া যায় না, দাবি করলেন দিলীপ ঘোষ
মঙ্গলবার বিধাননগরে বিজেপির দীপাবলি ও বিজয়ার অনুষ্ঠানে আরও একবার জয়েন্টে রাজ্য সরকারের বাংলা ভাষার দাবি নিয়ে কটাক্ষ করলেন দিলীপ ঘোষ।
অঞ্জন রায়: জয়েন্টের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বাংলা ভাষাকে ব্রাত্য করার প্রতিবাদে সোমবার ধরনায় বসে তৃণমূল। গোটাটাই নাটক বলে দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন তুললেন, বাংলা মিডিয়ামে পড়ে কতজন পড়ুয়া জয়েন্ট দিতে পারে? বুঝিয়ে দিলেন, সমালোচনা সত্ত্বেও গতকালের দাবি থেকে এক চুলও সরছেন না। এর পাশাপাশি আরও একবার বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন দিলীপ। দাবি করেছেন, বাংলা মিডিয়ামে পড়ে মানুষ হওয়া যায় না।
মঙ্গলবার বিধাননগরে বিজেপির দীপাবলি ও বিজয়ার অনুষ্ঠানে আরও একবার জয়েন্টে রাজ্য সরকারের বাংলা ভাষার দাবি নিয়ে কটাক্ষ করলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, জয়েন্ট নিয়ে নতুন নাটক শুরু হয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন,''ওনারা আবেদনই করেননি। প্রশ্ন উঠছে, বাংলা মিডিয়ামে পড়ে কতজন জয়েন্টে বসতে পারেন? কতজনের যোগ্যতা আছে? মাস্টারমশাই ও নেতানেত্রীর ছেলেমেয়েরাও পড়ে না। সেখানে পড়ে মানুষ হওয়া যায় না। তাই জয়েন্ট দেয় না। ডিগ্রিধারী বেকার হওয়া যায়। আর তারা জয়েন্টে বসবে, পাশ করবে? সেই স্ট্যান্ডার্ড আছে? সকাল থেকে নাটক করছেন বাংলার মানসম্মান বাঁচাতে আগ্রহী হলে বাঙালির জন্য নাগরিকত্ব বিল আনছি। সংসদে বিলকে সমর্থন করুন।'' বলে রাখি, ঝাড়গ্রামে বাংলা মিডিয়ামেই পড়াশুনো করেছিলেন দিলীপ ঘোষ।
জয়েন্টে বাংলা ভাষা ব্রাত্য কেন? প্রশ্ন তুলে ধর্মতলায় সোমবার ধরনায় বসেন তৃণমূল নেতানেত্রীরা। লড়াইকে সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেছেন, "বাংলার প্রতি বঞ্চনা করা হচ্ছে, বাঙালির প্রতি বঞ্চনা করা হচ্ছে, যতদিন বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি না দেওয়া হবে ততদিন এই লড়াই চলবে। দিল্লির বুক থেকে বাংলা নিজের অধিকার ছিনিয়ে নেবে।''
বিজেপি অবশ্য শুরু থেকে দাবি করে আসছে, বাংলা ভাষার জন্য ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির কাছে আবেদন করেইনি তৃণমূল সরকার। এখন নাটক করছে তারা। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ২০১৩ সালে জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষায় সম্মত হয়েছিল সবকটি রাজ্য। ওই বছরেই সব রাজ্যগুলিকে অনুরোধ পাঠানো হয়েছিল। শুধুমাত্র গুজরাট তাদের রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য গুজরাটিতে প্রশ্নপত্র করার আবেদন করে। ২০১৪ সালে মরাঠি ও উর্দুতে প্রশ্নপত্র করার আর্জি করে মহারাষ্ট্র। ২০১৬ সালে আবেদন প্রত্যাহার করে মহারাষ্ট্র। তবে গুজরাটি ভাষা চালু থাকে। আর কোনও রাজ্য ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির কাছে আবেদন পাঠায়নি।
রাজ্য সরকার একটি চিঠি প্রকাশ করে। ৭ নভেম্বরের চিঠিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ পড়ুয়াই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়াশুনো করে। কিন্তু ২০২০ সালে জয়েন্টের প্রবেশিকা পরীক্ষা হতে চলেছে ইংরেজি, হিন্দি ও গুজরাটিতে। এর ফলে সমস্যায় পড়বেন বাংলার সম্ভাবনাময় ছাত্রছাত্রীরা। কেরিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় সকলের সমান সুযোগ পাওয়া উচিত। ভারতীয় সংবিধানের ৮ নম্বর তপশিলীতে রয়েছে ২২টি অফিসিয়াল। তার মধ্যে বাংলাও আছে বলে মনে করিয়ে দেয় রাজ্য।