নিজস্ব প্রতিবেদন : অনেকটা বিনা মেঘে বজ্রপাত যেন! রাজ্যসভায় বক্তৃার মাঝেই নাটকীয় পদত্যাগ দিনেশ ত্রিবেদীর (Dinesh Trivedi)। 'দলে থেকে কাজ করতে পারছিলাম না, দমবন্ধ হয়ে আসছিল', এই অভিযোগ এনে দল ও পদ, দুই থেকেই পদত্যাগ করেছেন তিনি। বর্ষীয়ান সাংসদ আচমকা পদত্যাগ করতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। যে অর্জুন সিংয়ের কাছে ২০১৯ লোকসভা ভোটে হেরে গিয়েছিলেন দিনেশ ত্রিবেদী, তৃণমূল সঙ্গ ত্যাগ করতেই তাঁকে বিজেপিতে স্বাগত জানালেন অর্জুন সিং। পাশাপাশি, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ সহ সৌগত রায়, সুখেন্দুশেখর রায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সবাই-ই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, "কোনও ভালো, দায়িত্ববান মানুষ, যিনি বাংলার সেবা করতে চান, বাংলার মানুষের সেবা করতে চান, তাঁর তৃণমূলে কোনও সম্মান নেই। আত্মসম্মান রয়েছে, এমন কোনও ব্যক্তি-ই তৃণমূলে থাকতে পারবেন না। বিমানবন্দরে একবার ওনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তখনই উনি বলেছিলেন, পরিস্থিতি খুব খারাপ। কোনও কাজ করতে পারছি না।" তবে বিজেপি (BJP) যোগদান নিয়ে তাঁর সঙ্গে দিনেশ ত্রিবেদীর (Dinesh Trivedi) এখনও পর্যন্ত কোনও কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করেছেন, "ব্যালেন্স নেই মমতার, তাই সবাই দল ছাড়ছেন। মমতা নীরব দর্শকের ভূমিকায় থেকে যাবেন।"


দিনেশ ত্রিবেদী (Dinesh Trivedi) দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করতেই তাঁকে 'দাদা' বলে সম্বোধন করতে শোনা গিয়েছে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে। বলেন, "দিনেশ ত্রিবেদী আমার দাদার মত, বিজেপিতে এলে খুশি হব। আমি একটা সময় বলেছিলাম, দীনেশজি কাজ করেননি। আসলে ওঁকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। আমার বিরুদ্ধে আসল লড়াইটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করছিল। দীনেশদাকে সামনে রেখে লড়ছিল অন্যরা। আজ দীনেশদা বুঝতে পেরেছেন নিজের ভুল। ওঁর সঙ্গে কথা বলব। এখনই কথা বলব। ওয়েলকাম বলব। চলে আসুন বিজেপিতে।" প্রসঙ্গত, ২০১৯ লোকসভা ভোটে বারাকপুরে অর্জুন সিংয়ের কাছেই হারেন দিনেশ ত্রিবেদী। এরপর ২০২০-র ৩ এপ্রিল তিনি রাজ্যসভায় তৃণমূল (TMC) সাংসদ মনোনীত হন।


দিনেশ ত্রিবেদী (Dinesh Trivedi) দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করতেই কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে তৃণমূল (TMC) শিবির থেকেও। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, "অসন্তোষ ছিল। তবে এই পদক্ষেপ অপ্রত্যাশিত।" অন্যদিকে সুখেন্দশেখর রায় কটাক্ষ করেন, "একজন মানুষের কতবার দমবদ্ধ হয়? এক বছরও হয়নি রাজ্যসভায় এসেছেন। কেনই বা এলেন, কেনই বা গেলেন! কবে থেকে দমবন্ধ হল? তিন মাস নাকি এক বছর ধরে?" তোপ দাগেন, "আগেও দলকে ফাঁকি দিয়েছেন তিনি। এঁরা সুবিধাবাদী। ক্ষমতা ছাড়া থাকতে পারেন না। ভবিষ্যতে বড় পদ পাওয়ার আশা করেন খালি।"


এর পাশাপাশি তীব্র আক্রমণ করেছেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও। তোপ দাগেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওনাকে শ্রদ্ধা করেন। তাই হেরে যাওয়ার পরেও ওনাকে সাংসদ করেছিলেন। ৩ মাস আগেও দলের ভার্চুয়াল বৈঠকে বলেছিলেন, ব্যারাকপুরের সমস্ত দায়িত্ব আমার। তাহলে এখন পালিয়ে যাচ্ছেন কেন? বিজেপির সঙ্গে নিশ্চয়ই কোনও ডিল হয়েছে!" দিনেশ ত্রিবেদীর দলে থেকে কাজ করতে না পারার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরও বলেন, "কাজ করার জন্য আগ্রহ দেখাতে হয়। কাজ করার জন্য কেউ নিমন্ত্রণ পত্র দেবে না। উনি এতদিন কিচ্ছু করেননি।"  


প্রসঙ্গত, এদিন দলত্যাগের কারণ হিসেবে রাজ্যসভায় দাঁড়িয়েই দিনেশ ত্রিবেদী (Dinesh Trivedi) বলেন, "আমি আমার মনের কথা শুনেছি। তৃণমূলে আর কাজ করতে পারছিলাম না। আর চুপ করে থাকা সম্ভব হচ্ছিল না আমার পক্ষে। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম। দেশের জন্য, মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।" আর তারপরই উস্কে উঠেছে জল্পনা। এবার কি তবে তিনিও BJP-র পথে? 


আরও পড়ুন, শাহের সভার পরই 'মতুয়াদের ব্ল্যাকমেল' তোপ, 'বেসুরো' BJP বিধায়ক বিশ্বজিৎ