করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি, কালোবাজারির ভয়ে আশঙ্কিত একাংশ চিকিত্সক মহল
`মাসে ১৫ লক্ষ ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকাঠামো রয়েছে। তাতে দেশের সব মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে কমপক্ষে ১০ বছর সময় লেগে যাবে।`
নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনার টিকা নিয়ে রাজনীতি হতে পারে! হতে পারে কালোবাজারিও! এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন চিকিত্সক মহলের একটা বড় অংশ। প্রসঙ্গত, আজই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে কেন্দ্রের সঙ্গে একযোগে করোনার টিকা দিতে রাজ্য রাজি বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "অতিমারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে টিকাকরণ কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গও প্রস্তুত আছে। টিকাকরণের জন্য রাজ্যে প্রশিক্ষিত দক্ষ ব্যক্তি ও পরিকাঠামো প্রস্তুত। যত দ্রুত ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে, কেন্দ্র ও অন্যান্য সহযোগী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রেখে তত তাড়াতাড়িই কাজ শুরু করে দেবে বাংলা। যাতে সবাই দ্রুত ভ্যাকসিন পায়, তা নিশ্চিত করা হবে।" মোদীর সঙ্গে এই বৈঠকের পরই ভ্যাকসিন বিতরণ নিয়ে সামনে এল চিকিৎসকদের মতামত।
প্রাক্তন স্বাস্থ্যকর্তা তথা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মলয় মন্ডল বলেন, "প্রত্যেকটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিন সুনিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্ব কেন্দ্র এবং রাজ্য দুজনেরই। রাজ্যের ইনফ্রাস্ট্রাকচার বা পরিকাঠামো রয়েছে একদম গ্রামীণ লেভেলে মানুষকে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার। কেন্দ্রের সেই পরিকাঠামো নেই। তাই কেন্দ্র সাহায্য করুক। রাজ্য কাজ করুক। আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত, প্রত্যেকটি মানুষকে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া।"
চিকিৎসক কুণাল সরকার বলেন, "আগামী চার-পাঁচ মাস আমাদের দেশে কোনও ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে না। তারপর এদেশে ভ্যাকসিন মিলবে। কিন্তু জানুয়ারি থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়ে যাচ্ছে। সেই ভ্যাকসিন কালোবাজারি পথে যাতে এদেশে যাতে না ঢুকতে পারে, ভ্যাকসিন নিয়ে কালোবাজারি যাতে না হয়, জালিয়াতি যাতে না হয়, সেটা রাষ্ট্র এবং রাজ্যের দেখা দরকার। এই মধ্যবর্তী সময়টাতে বড় বড় কোম্পানিগুলোকে ব্যবসা করার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশে ১১৫ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকাঠামো কোথায়? মাসে ১৫ লক্ষ ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকাঠামো রয়েছে। তাতে দেশের সব মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে কমপক্ষে ১০ বছর সময় লেগে যাবে। পরিকাঠামো আরও দ্রুত বাড়ানো হোক। সকলের জন্য ভ্যাকসিন সুনিশ্চিত করা হোক। ৬০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে মানুষ মারার জন্য যুদ্ধবিমান কেনা যেতে পারে! সেখানে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে কয়েক লক্ষ আধুনিক ভ্যাকসিন যা ইতিমধ্যেই আমেরিকাতে চলে এসেছে, সেটা কেন সরকার নিয়ে আসবে না?"
চিকিৎসক সংগঠনের নেতা মানস গুমটা আবার বলেন, "ভোটের রাজনীতি চলছে ভ্যাকসিন নিয়ে। কী কেন্দ্র, কী রাজ্য! এসব বন্ধ হোক। কেন্দ্র এবং রাজ্য যৌথভাবে এই ভ্যাকসিন কর্মসূচি পালন করুক মানুষকে বাঁচানোর স্বার্থে। যা গতিপ্রকৃতি তাতে যেন ব্যবসাদারদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। সেটা যেন না হয়।"
আরও পড়ুন, মেরে চামড়া গুটিয়ে দিন তৃণমূল কর্মীদের : রাজু, আগে ছাগলের চামড়া গুটোতে শিখুক : উত্তম
আরও পড়ুন, করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শেষপর্যায়ে,মসৃন ভাবে টিকা বণ্টনের পরিকল্পনার তৈরি রাখুন: মোদী