পিয়ালি মিত্র: রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে প্রথম চার্জশিট পেশ করল ইডি। ওই চার্জশিটে নাম রয়েছে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ব্যবসায়ী বাকিবর রহমান-সহ ১২ জন। মোট ১৬২ পাতার চার্জশিটে যোগ করা হয়েছে পিএমএলএ ধারাও। চার্জশিটের সঙ্গে জমা দেওয়া হয়েছে প্রচুর নথি ও হার্ড ডিস্ক। ওই চার্জশিটে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি করেছে ইডি। সেখানে বলা হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়র হাত ধরে কমপক্ষে ৪৫০ কোটি টাকা তছরুপ হয়েছে। এমনটাই ইডি সূত্রে খবর।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- সাংসদ পদের পর এবার সরকারি বাংলো হাতছাড়া হচ্ছে মহুয়ার!


কীভাবে এমন দুর্নীতি? ইডি সূত্রে খবর, সরকারি কোষাগার থেকে টাকা চলে যায় কিছু ভুয়ো অ্য়াকাউন্টে। সেইসব ভুয়ো অ্যাকাউন্ট বানিয়েছিল জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। ইডির কাছে চাঞ্চল্যকর বয়ান দিয়েছেন বাকিবুরের সংস্থার অডিটরের। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে রেশন দুর্নীতির মূল পার্থক্য হল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির টাকা ছিল অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের। কিন্তু রেশন দুর্নীতির যে ৪৫০ কোটি টাকার যে কথা উঠছে তা একেবারে সরকারি টাকা।


গম বন্টনে দুর্নীতির তদন্ত করছিল ইডি। সেই তদন্ত করতে গিয়ে ধানের সহায়ক মূল্য নিয়ে দুর্নীতির খোঁজ পান ইডির তদন্তকারীরা। গম দুর্নীতিতে যে একশো কোটি টাকার তছরুপ হয়েছে তা জানিয়েছে ইডি। অন্যদিকে, কৃষকদের কাছ থেকে যে সহায়ক মূল্য দিয়ে ধান কেনা হয় তা কেনে সরকারি সংস্থা। ইডির তরফে উল্লেখ করা হচ্ছে বাকিবুরের যিনি অডিটর ছিলেন তিনি স্বীকার করেছেন বাকিবুর রহমানের সংস্থার ৫০ কর্মচারী কৃষক নন। তাদের কৃষক বানিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। ওইসব ভুয়ে কৃষকদের কাছে থেকে ধান কেনে রাজ্য সরকারের সংস্থা।  সেই ধান কেনার জন্য ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে ওয়েস্ট বেঙ্গল এসেনসিয়াল কমোডিটি কর্পোরেশন লিমিটেড। সেই সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর হাত ধরেই ওই বিপুল টাকা রিলিজ করা হয়েছে। সেই টাকা গিয়েছে ভুয়ো অ্যাকাউন্টে। ইডির তরফে বলা হয়েছে যে টাকা রিলিজ করা হয়েছে তার বিনিময় ধান কেনা হয়নি উল্টে টাকা চলে গিয়েছে ওই ৫০ জনের অ্যাকাউন্টে।


ইডি সূত্রে খবর যে ১০টি কেম্পানি এই দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত তার মধ্যে ৫টি কোম্পানি জ্যাতিপ্রিয় মল্লিকের এবং বাকী ৫টি কোম্পানি বাকিবুর রহমানের। যে টাকা বাকিববুর রহমানের কাছে গিয়েছে তা সাইফন করে জ্যোতিপ্রিয়র কাছে পাঠিয়েছে বাকিবুর।


রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে চার্জশিট নিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, দুর্নীতির বেশিরভাগ টাকা গিয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে। কিন্তু বারবার আমরা যে পয়েন্টির উপরে জোর দিচ্ছি সেটি হল টাকা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তো একা টাকা খায়নি! কারণ তাঁর নেত্রী বলেছেন একা খাবে না। ভাগ করে খাও। এখন দেখতে হবে ভাগীদার কারা ছিলেন। মাথায় কারা রয়েছেন। বাকিবুর রহমান তো মোহরা। ওপরে কারা রয়েছে তাদের নামগুলে বেরিয়ে আসা উচিত।


চার্জশিট দেওয়ার পর সবব হয়েছে তৃণমূলও। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, যখন কোনও এজেন্সি চার্জশিট জমা দেয় তখন বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য় সিদ্ধির জন্য তা করে। এইসব চার্জশিটকে ধ্রুব সত্য মনে করার কোনও কারণ নেই। কি নথি ওরা জমা দিয়েছে তা তো জানি না! তাই নথি মানেই বেআইনি তা ভেবে নেওয়ার কারণ দেখতে পারছি না। এখন দুর্নীতি যদি থাকে তাহলে তা চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা হবে।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)