কমলিকা সেনগুপ্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কৃষি আন্দোলনের কথা বলতেই মাথায় আসে 'তেভাগা'। বাংলা গর্জে উঠেছিল, 'লাঙল যার জমি তার'। আর স্বাধীনতার পর থেকে লাল পার্টিই বাংলার কৃষকদের আশা-ভরসার ঠাঁই। বামেরা প্রায়ই দাবি করে, ৩৪ বছরের সরকারে অন্যতম সাফল্য 'ভূমি সংস্কার'। খেটেখাওয়া মানুষ পেয়েছিলেন জমির অধিকার। কালের নিয়মে সিঙ্গুর অধ্যায়ে কৃষক আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে কৃষক ভোট হাতছাড়া হল সিপিএমের। রাজ্যে পটপরিবর্তন। একুশের ভোটের আগে কৃষি বিল নিয়ে আরও একবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল 'কৃষি ও কৃষক'। কৃষিপথেই কি ফের বাজিমাতের অঙ্ক দেখছেন মমতা? পিছিয়ে নেই বামেরাও। কৃষকদের বিশ্বাস ফিরে পাওয়ার আশায় মাঠে নেমে পড়েছে তারাও। পাল্টা কৃষি বিলের সুফল বোঝাতে ময়দানে বিজেপিও।  


৭৭ সালে কংগ্রেসের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছিল বামেরা। নেপথ্যে ছিল- কৃষক ও ভূমিহীন। ফল, বাংলায় বাম শাসনের সূচনা। ৩৪ বছরের বাম সরকারের অবসান করল 'কৃষক আন্দোলন'। সিঙ্গুরে বৃত্তটা সম্পূর্ণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামনে একুশের লড়াই। লোকসভা ভোটে বাংলায় বিজেপির উত্থানের পর নিঃসন্দেহে একুশে হতে চলেছে কঠিন লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে কৃষিতে ফিরছে তৃণমূল। তার সুরটা বেঁধে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কৃষি বিলের প্রতিবাদে ৮ সাংসদ সাসপেন্ড হওয়ার পর মমতা টুইট করেছেন,''কৃষক স্বার্থে ৮ সাংসদকে বহিষ্কার দুভার্গ্যজনক। এটা সরকারের একনায়কতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতিফলন। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আইনকে সম্মান দেয় না সরকার। আমরা মাথানত করব না। ফ্যাসিস্ত সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় ও সংসদে লড়াই চালাব।''


 



শুক্রবার গোটা দিন গান্ধীমূর্তিতে অবস্থান করে তৃণমূল। রক্ত দিয়ে লেখা হয়, 'আইন মানব না'। ছেঁড়া হয় বিলের প্রতিলিপি। সিঙ্গুর-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছিলেন কৃষকরা। তৃণমূল নেতা বেচারাম মান্না স্মরণ করিয়ে দিলেন,''আমরাই কৃষকদের জন্য কাজ করি। সিঙ্গুরের মতোই আন্দোলন করব। কালা কানুন লাগু হতে দেব না।'' 


বাংলার রাজনৈতিক পাটিগণিতে বরাবরই কৃষকের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে এখানে সিংহভাগই ছোট কৃষক। স্বাভাবিকভাবেই ময়দানে নামতে দেরি করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষয়িষ্ণু শক্তিকে যতটা সম্ভব পুনরুদ্ধারে কৃষি বিলের বিরোধিতাকে হাতিয়ার করছে বামেরাও। সঙ্গত দিচ্ছে কংগ্রেস। তার পাল্টা আবার বিলের সুফল তুলে ধরে প্রচারে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। রাজনীতির কারবারিদের মতে, একুশ যেন এগারো। কৃষি ও কৃষকই হতে চলেছে ভোটের নির্ণায়কশক্তি। কৃষকের লাঙল নয়, আঙুলই ঠিক করবে পালাবদল না 'মমতাদি আর এক বার'?


আরও পড়ুন- 'নেহি হ্যায়' নির্মলার; ৪৭,২৭২ কোটি GST ক্ষতিপূরণ অন্যত্র খরচ, ফাঁস CAG-র