নিজস্ব প্রতিবেদন : ক্যান্সারের চিকিৎসায় ফের আশাতীত সাফল্য গড়ে নজির তৈরি করলেন কলকাতার চিকিৎসকরা। ৭৬ বছর বয়সী তুলসিবালা দেবীর কোলনে ছিল বিরল ক্যান্সার। শিকড়বাকড় ছড়িয়ে  টিউমার জড়িয়ে ধরেছিল শরীরের আরও ৬ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে। ধীরে ধীরে অকেজো হচ্ছিল সে সব। বিছানায় শয্যাশায়ী তুলসিবালা দেবীকে রাজ্যের,  ভিন রাজ্যের একাধিক হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছিল। বিরলতম সেই ক্যান্সারমুক্ত হয়ে এখন দিব্যি হেঁটেচলে বেড়াচ্ছেন ৭৬ এর বৃদ্ধা। সাফল্য মিলেছে এ শহরেই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রায় বিনা রক্তপাতে বেলুড়ের বাসিন্দা তুলসিবালা দাসের শরীর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে ফুটবলের আকারের টিউমার। প্রযুক্তি আর দক্ষতার মেলবন্ধনে এই অসাধ্য সাধন করেছেন কলকাতারই ডাক্তাররা। ঢাকুরিয়ায় বেসরকারি হাসপাতালের ক্যান্সার শল্য চিকিৎসক (Onco Surgeon) শুদ্ধসত্ত্ব সেন জানিয়েছেন, "রোগীর পেটে ছিল ১২-১৫ সেন্টিমিটারের রেট্রো পেরিটোনিয়াল টিউমার। প্রকাণ্ড সেই টিউমার থেকে শিকড় বেরিয়ে তা জড়িয়ে যায় স্পাইনাল কর্ডের নার্ভ, কিডনি, খাদ্যনালী, পিঠের মাংসপেশীতে।"



তিন ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে তুলসিবালা দাসের শরীর থেকে সেই টিউমার বাদ দেওয়া হয়েছে। পেটে ৮ ইঞ্চি কেটে অস্ত্রোপচার করা হয়। শরীর থেকে বের করা হয় মস্ত টিউমার। প্রযুক্তি ও দক্ষতার যুগলবন্দিতে সামান্য রক্তপাতেই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। রক্তপাত হয় মাত্র ৪০ থেকে ৫০ মিলিলিটার। অস্ত্রোপচার করে কোলন থেকে টিউমার বাদ দিয়ে ধীরে ধীরে নার্ভ কেটে ক্যান্সার কোষগুলিকে শরীর থেকে পৃথক করা হয়। তারপর নার্ভগুলিকে আবার জোড়া লাগানো হয়। একইভাবে ধীরে ধীরে অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি থেকেও আলাদা করা হয় ক্যান্সার কোষ।


আরও পড়ুন, 'এরাজ্যেও অনেকের গোপনীয়তা খর্ব হয়েছে', ফোন ট্যাপিং নিয়ে বিস্ফোরক রাজ্যপাল


অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই অপারেশন ৩ ঘণ্টা ধরে চলে। সবকিছু সুষ্ঠুভাবে হওয়ার পর হাসি ফোটে চিকিৎসকদের মুখে। চ্যালেঞ্জিং অপারেশন একশো শতাংশ সফল। তুলসিবালা দেবী এখন দিব্যি হেঁটে চলে বেড়াচ্ছেন। রোগীকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনার এই অভিজ্ঞতা হাসি ফুটিয়েছে ডাক্তারের মুখেও। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "সাধারণত এত বয়স আর এত জটিল বিরল ক্যান্সারে হাত দেওয়া হয় না। কারণ ঝুঁকিটা খুব-ই বেশি। এ শহরে দক্ষতার সঙ্গে কাজটা হয়েছে। সাহসী পদক্ষেপ। অভিনন্দন যোগ্য।"