জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই সমস্যায় রয়েছে শাসকদল ত্রিন্নমুল কংগ্রেস। একেরপর এক নেতা-কর্মী জড়িয়ে পড়েছেন সিবিআই-ইডির মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জালে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক সরকার থেকে শুরু করে হালের কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত বেশ কিছু নেতা বর্তমানে রয়েছেন জেলে। পাশপাশি আন্দোলনে নেমেছে বিভিন্ন সংগঠন। তাঁদের বিভিন্ন দাবির মধ্যে রয়েছে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবি। এই অবস্থায় কিছুদিন আগেই শাসকদলের তরফে আক্রমণ করা হয় বাম জমানাকে নিশানা করে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে বাম জমানায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের কথা বলেন। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর নিয়োগ নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন তিনি এবং তদন্তের কথা বলেন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী চাকরি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। তদন্তের আর্জি জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে। সেই প্রসঙ্গেই সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, 'ওনার ইন্টারভিউ হয়েছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়। তদন্ত হওয়া দরকার। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে করব। উনি মমতা সরকারের কাছ থেকে পেনশন নিচ্ছেন। মানে সরকারি কর্মচারী। এতদিন আমরা কিছু করিনি। সব জেনেও বলিনি। কারণ, আমাদের স্লোগান বদলা নয়, বদল চাই।'


এরপরে মুখ খোলেন প্রাক্তন বাম নেতা এবং তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী উদয়ন গুহ। কোচবিহারে একসময়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের দাপুটে নেতা ছিলেন উদয়ন গুহ। এরপর যখন রাজ্যে পালাবদল ঘটে, তখন তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। একুশে বিধানসভা ভোটের পর মন্ত্রী হন উদয়ন। বাম আমলে মন্ত্রী ছিলেন তাঁর বাবা কমল গুহও। উদয়নের দাবি, 'বাম আমলে কোটায় চাকরি হত। বাবাও অনেককে চাকরি করে দেন'।


পরে আরও একধাপ এগিয়ে উদয়ন গুহ বলেন, 'কোনও পরীক্ষা হত না। নাম কা ওয়াস্তে ইন্টারভিউ হত। সিপিএম-র মতো ফরওয়ার্ড ব্লকও টাকার ভাগ পেত'। কীভাবে? উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর দাবি, 'কোচবিহারে প্রাথমিকের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ সিপিএম, ৩৫ শতাংশ ফরওয়ার্ড ব্লক, আর ৬ শতাংশ ছিল সিপিআই, আরএসপি'। সঙ্গে ফেসবুক পোস্টও করেন তিনি। কিছু মানুষের নাম তুলে তিনি জানিয়ে দেন যে তাঁরাও বাম আমলে মেধার ভিত্তিতে নয় চারকি পেয়েছেন সুপারিশের ভিত্তিতে।


আরও পড়ুন: কীভাবে নিয়োগ দুর্নীতির ছক কষেন সুবীরেশ? চার্জশিটে চাঞ্চল্যকর দাবি সিবিআই-এর


তৃণমূল মুখপত্র জাগোবাংলার একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে এবার সেই দাবিকে আরও জোরদার করেছেন আরেক প্রাক্তন সিপিআইএম নেতা এবং বর্তমানে পিডিএস-এর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সমীর পুততুন্ড। সিপিআইএম-এর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রাক্তন সম্পাদক জানিয়েছেন, বাম আমলে সরকারি চাকরির নিয়োগে ব্যপক স্বজনপোষণ হয়েছে। এই ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য শিক্ষকতার চাকরি। প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে যে তিনি আরও দাবি করেছেন বাম জমানার শেষের দিকে অর্থের বদলেও চাকরি দেওয়া হয়েছে।


আরও পড়ুন: Kolkata Child Death: খুন করে রান্নাঘরে রাখা বস্তাবন্দি দেহ, পাশেই খাবারের আয়োজন অভিযুক্তের


জাগোবাংলার প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘বাম আমলে সরকারি চাকরি, বিশেষত শিক্ষকতার চাকরিতে নিয়োগে ব্যাপক স্বজন-পোষণ হয়েছে। বাম আমলের শেষদিকে অর্থের বদলে চাকরিও দেওয়া হয়েছে। সিপিএম জেলা সম্পাদক ছিলাম বলেই একথা জোর দিয়ে বলতে পারছি।‘ প্রতিবেদনে আরও লেখা হয়েছে, ‘সেই সময়ে পার্টিতে সিদ্ধান্ত হয় সরকারি চাকরি শুধু পার্টি কর্মীরাই পাবেন না। পার্টি কর্মী মানেই যোগ্য এই ধারণা বদলাতে হবে। যোগ্যদেরই চাকরি দিতে হবে। আমার জেলায় সাড়ে তিন হাজার নিয়োগের তালিকা আসে। পার্টির সিদ্ধান্ত মেনে করতে গিয়ে কেঁচে গণ্ডুষ। দলে ব্যাপক ঝামেলা। সবাই চায় নিজের লোকেদের ঢোকাতে। শেষ পর্যন্ত দুর্নীতি, স্বজন-পোষণ আর চাকরির বদলে অর্থের দাবিদারদেরই জিত হয়। কোথায় নীতি-নৈতিকতা? ওসব পার্টি মিটিংয়েই শুরু, পার্টি মিটিংয়েই শেষ। ওই সাড়ে তিন হাজার নিয়োগে ছাড়পত্র আমরাই সকলে দিয়েছিলাম এটা জেনেই যে চাকরি পাচ্ছেন যোগ্যরা নয়, পার্টি কর্মীরা।‘


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)