হাতজোড় করে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে `কড়া বার্তা` রাজ্যপালের, ভূয়সী প্রশংসা করলেন মোদীর
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্যের কড়া সমালোচনার পাশাপাশি আজ মোদীর স্তুতিও শোনা গিয়েছে রাজ্যপালের কথায়। প্রসঙ্গত, রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কথা বলছেন। পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছেন। এই অভিযোগে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
নিজস্ব প্রতিবেদন : "উনি যা বলছেন, তা সত্যি নয়। ওনাকে বলব, উনি প্রকৃত তথ্য যাচাই করে সত্য বলুন।" কলকাতায় চিকিৎসকদের এক সম্মেলনে যোগ দিতে এসে নাম না করে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে ফের ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এদিকে, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্যের কড়া সমালোচনার পাশাপাশি আজ মোদীর স্তুতিও শোনা গিয়েছে রাজ্যপালের কথায়।
সম্মেলন সেরে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যপাল। দৃশ্যত হাতজোড় করে রাজ্যপাল বলেন, "উনি রাজ্য সরকারের একজন অভিজ্ঞ মন্ত্রী। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের সময়ও উনি মন্ত্রী ছিলেন। ওনাকে বলব, আপনি সরকারের কাছে থাকা রেকর্ড যাচাই করে দেখুন। প্রকৃত তথ্য যাচাই করে সত্যিটা সবাইকে বলুন। আমার বক্তব্য খুব স্পষ্ট। আমার কাছে সমস্ত রেকর্ড রয়েছে। রাজভবনের তরফেও এই বিষয়ে বিবৃতি জারি করা হয়েছে।" উল্লেখ্য, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনকে কটাক্ষ করেছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "আমি পঞ্চাশ বছর ধরে বিধায়ক। এর আগে তো কখনও শুনিনি কোনও রাজ্যপাল নিরাপত্তার অভাব বোধ করেছেন। উনি তো নিজেই সাংবিধানিক প্রধান। উনি চাইলেই এখানে সবরকম নিরাপত্তা পেতে পারেন। কিন্তু কেন যে দিল্লিতে গিয়ে ওভারটেক করে এটা করলেন, তা উনিই বলতে পারবেন।"
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের পরই শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট মিটিংয়ে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রীদের ব্যবহার নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। রাজ্যপাল বলেন, "কেউ রাজ্যপালকে ট্যুরিস্ট বলছে, কেউ আবার শিলিগুড়ি যাত্রাকে গিমিক বলছেন।" একইসঙ্গে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়েও মুখ খোলেন জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে না জেনেই মন্তব্য করা হয়েছে। তাঁর কথায়, "আমি আমার আমার লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম করিনি।" এ প্রসঙ্গে তাঁর পাল্টা দাবি, "কিছু না জেনেই মন্তব্য করা হচ্ছে।"
প্রসঙ্গত, প্রকাশ্যে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করায় রাজ্যপালের উপর হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। দিল্লির কাছে রিপোর্ট পৌঁছয় যে, যেকোনও সময় তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ হতে পারে। রিপোর্ট পর্যালোচনা করে বিপদ এড়াতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজ্যপালকে জেড প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাঁর নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয় ৪-৫ জন আধাসেনাকে। রাজ্যপালের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের এই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি রাজ্য সরকার। সমালোচনায় সরব হয় তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যপাল নিজের সীমারেখা অতিক্রম করছেন, বলে তোপ দাগেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন, ফের রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত, জগদীপ ধনখড়ের নিরাপত্তায় এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী
আজ ফের একবার সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সেই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন রাজ্যপাল। তবে একদিকে যখন রাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের সমালোচনায় সরব রাজ্যপাল ধনখড়, ঠিক তখনই প্রধানমন্ত্রী মোদী ভূয়সী প্রশংসা শোনা গেল তাঁর মুখে। কেন্দ্রীয় সরকারের 'স্বচ্ছ ভারত' প্রকল্পে শৌচালয় নির্মাণের প্রশংসা করেন তিনি। প্রসঙ্গত, রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কথা বলছেন। পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধারের পর থেকেই এই অভিযোগে সুর চড়িয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এখন আজকের পর সেটা অন্য মাত্রা পাবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।