দেবব্রত ঘোষ ও  অয়ন ঘোষাল: হনুমান জয়ন্তী নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। নিরাপত্তার কথা মাথায় শেষপর্যন্ত আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বের হয়েছে হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রা। কলকাতা, হাওড়ার পাশাপাশি হুগলি, উত্তরবঙ্গের মালবাজার-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় বেরিয়েছেন মানুষজন। লক্ষ্যনীয় বিষয় হল হনুমান জয়ন্তীর  মিছিল ও শোভাযাত্রার সঙ্গেই হাঁটছে পুলিস।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-লং মার্চে এসে সাঁকরাইলে গ্রেফতার ১৩ গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থী


সকালে বেলুড় থেকে হনুমান জয়ন্তীর একটি শোভাযাত্রা বের হয়। ওই শোভায়াত্রায় সামিল হন অসংখ্য মানুষজন। বেলুড় থেকে জিটি রোড ধরে শোভাযাত্রাটি কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সেটা যাবে দমদম। হাওড়ার অন্য একাধিক জায়গা থেকে এরকম আরও শোভাযাত্রা বের হয় কলকাতার উদ্দেশ্যে। হাওড়ার কাজিপাড়ায় রামনবমীর মিছিল ঘিরে অশান্তির সৃষ্টি হয়। সে কথা মাথায় রেখে কড়া পুলিস ব্যবস্থা করা হয়। মিছিলের সঙ্গে হাঁটতে থাকে পুলিস।


মোট ৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ কোম্পানি রয়েছে কলকাতায়। অন্য একটি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে ব্যারাকপুরে এবং তৃতীয়টি রয়েছে চন্দননগরে। লালবাজারের তরফে গতকাল নির্দেশ দেওয়া হয় শোভাযাত্রায় যারা অংশ নেবেন তাদের সচিত্র পরিচয়পত্র রাখতে হবে। যে কোনও ক্ষেত্রে পুলিস সেই পরিচয়পত্র দেখতে পারে। 


হাওড়ার বেলুড় থেকে একটি শোভাযাত্রা এসে পৌঁছয় বড়বাজারের রাজাকাটরায়। সেখান থেকে পোস্তা, গিরিশপার্ক হয় সেটি চলে যাবে দমদম হনুমান মন্দিরে। রাজাকাটরার হনুমান মন্দিরে শোভাযাত্রা প্রবেশ উপলক্ষ্যে এলাকাটিকে প্রায় দুর্গে পরিণত করে ফেলে পুলিস। কোথাও কোথাও সাইকেল পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়া হয়নি। প্রচুর সংখ্যাক মহিলা পুলিসও মোতায়েন করা হয়।


হনুমান জয়ন্তীকে গোলামালে আশঙ্কার মোতায়েন করা হয়েছে ৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। গতকাল হাইকোর্ট শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনীর কথাই বলেনি, বরং বলা হয় মিছিলের লোকজনের উপরে নজর রাখতে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশ ছিল হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষ্যে যেন নিরাপত্তার উপরে জোর দেওয়া হয়। গতকাল কেন্দ্রীয় বাহিনী হাতে পাওয়ার পর কলকাতা, ব্যারাকপুর ও  চন্দননগরে তাদের মোতায়েন করা হয়েছে। গতকালই লালবাজারের পক্ষ থেকে বলা হয় কোনও মিছিলে যেন একশোরও বেশি লোক না থাকে। পাশাপাশি কিউআরটি তৈরি রাখা হয়।


সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যারাকপুর কমিশনারেটে আসে, তারপর বিভিন্ন থানায় তাঁরা চলে য়ান। বিভিন্ন সময়ে তারা রাস্তায় বের হবেন ও রুটমার্চও করেন। তাদের সঙ্গে রয়েছে রাজ্যপুলিস। 


কলকাতা ও শহরতলি ছাড়াও জেলায় জেলায় বিপুল উত্সাহের সঙ্গে পালন হল হনুমান জয়ন্তী। দলপাইগুড়ির মাল ব্লকের ওদলাবাড়ি এলাকায় গতকাল রাতে টহল দিল বিশাল পুলিশ বাহিনী।  উপস্থিত ছিলেন, জলপাইগুড়ি জেলার অ্যাডিশনাল এস পি, মালের এস ডি পি ও, আই সি মাল। অনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে যাতে কোন রকম সমস্যা না হয়, তার জন্য রাত থেকে চলে পুলিশি টহল। 


উল্লেখ্য প্রতিবছর ওদলাবাড়ি কৃষ্ণ মন্দির হনুমান কমিটির পক্ষ থেকে একটি বড় মাপের শোভা যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এবারো শোভাযাত্রা বের হবার কথা ছিল কিন্তু রাত থেকে পুলিশের টহলদারির জন্য শোভাযাত্রা বন্ধ করল এই কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতেই হনুমান জয়ন্তির শোভাযাত্রা বন্ধ করা হয়েছে। সমস্ত অনুষ্ঠান মন্দির প্রাঙ্গনেই হবে। আইন শৃঙ্খলা যাতে বিঘ্ন না ঘটে তার জন্য এবছর শোভা যাত্রা হবে না। পুলিশের পক্ষ থেকে গতকাল রাতে হনুমান জয়ন্তীর ওদলাবাড়ি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন, সবরকম সহযোগিতার আস্বাস দেয় পুলিস। কোন কোন এলাকা দিয়ে শোভাযাত্রা হবে, সেইসব এলাকাও ঘুরে দেখেন পুলিশ আধিকারিকেরা।  তবে অনেক রাতে হনুমান জয়ন্তী কমিটি নিজেরাই বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, সুষ্ঠ ভাবে আইন শৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে, তার দিকে লক্ষ রেখেই শোভাযাত্রা বাতিল করা হয়েছে। 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)