সুখবর সঙ্গে নিয়েই এলেন হাসিনা, আসছে টন টন পদ্মার ইলিশ
আগামিকাল মঙ্গলবার প্রথম দিনে ১০০ থেকে ১৫০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারে আসার কথা। এরপর প্রতিদিনই একই পরিমাণ মাছ ঢুকবে। ফিস ইমপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকার এখনঅ ইলিশ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে। তবে এবারের ইলিশ রফতানি বিশেষ নির্দেশের বলে
দেবব্রত ঘোষ:কিছুদিন আগেই ডায়মন্ড হারবারে ওঠে ৫০ টন ইলিশ। যদিও সেই ইলিশের স্বাদ বাঙালি পায়নি খুব বেশি। অনেকেই মনে করেছিলেন এরপরে কমবে ইলিশের দাম। কিন্তু তাও জোটেনি খাদ্যরসিকদের কপালে। সোমবার ভারতে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার কি পশ্চিমবঙ্গবাসী পাবে রুপালি শস্যের স্বাদ? এবার রাত পোহালেই আসতে চলেছে বাংলাদেশের ইলিশ।পুজোর উপহার হিসাবে ওপার বাংলা থেকে আসতে চলেছে পদ্মার ইলিশ। গতকাল বাংলাদেশ সরকার এই ব্যাপারে চিঠি দিয়ে ইলিশ পাঠানোতে সম্মতি দেয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর চলাকালীন এপার বাংলায় ইলিশ আমদানিতে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্কে অন্য মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার ইলিশ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তারপর থেকে কলকাতার বাজারে ইলিশ আসা কার্যত বন্ধ ছিল। ফলে খাদ্যরসিক বাঙালি পদ্মা অথবা মেঘনার ইলিশের স্বাদ থেকে বঞ্চিত ছিল। কিন্তু গত তিন বছরের মত এই বছরেও দুর্গা পুজোর আগে ইলিশ রফতানিতে সম্মতি দেয় বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রক। সেইমতো গতকাল ফিস ইমপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনে তারা চিঠি পাঠায়। এই বছরে ২৪৫০ মেট্রিক টন বাংলাদেশি ইলিশ আমদানির অনুমতি দেয় ওই দেশের সরকার। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ মাছ আমদানি সম্পূর্ণ করতে হবে।
আগামিকাল মঙ্গলবার প্রথম দিনে ১০০ থেকে ১৫০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারে আসার কথা। এরপর প্রতিদিনই একই পরিমাণ মাছ ঢুকবে। ফিস ইমপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকার এখনও ইলিশ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে। তবে এবারের ইলিশ রফতানি বিশেষ নির্দেশের বলে আসছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাইছি বাংলাদেশ সরকার পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক। তাহলে সারা বছর ইলিশ আমদানি করা যাবে। হাওড়ার মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর ইলিশ সংক্রান্ত বিষয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ভাল হবে। ইলিশ রফতানিতে এপারের বাঙালির আবেগের কথা মাথায় রেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন প্রধানমন্ত্রী এমনটাই তাঁদের আশা। ওপার বাংলার ৪৯ জন ইলিশ রপ্তানিকারীকে ভারতে মাথাপিছু ৫০ মেট্রিক টন করে ইলিশ রপ্তানির সবুজ সঙ্কেত। আগামি ২৫ দিনে সীমান্ত পেরিয়ে রাজ্যে প্রবেশ করতে চলেছে মোট ২৪৫০ মেট্রিক টন রুপোলি শস্য। কাল ভোর রাতের মধ্যেই ঢুকে যাওয়ার কথা দশ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ।
রাজ্যে ১৫ মে থেকে ১৫ জুন মৎস শিকার নিষেধ। কারণ জলের মধ্যে বাড়তে থাকা খয়রা এবং খোকা ইলিশকে বাড়তে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সমুদ্রে জাল পড়েছে ১৬ জুন থেকে। প্রতি বছর ১৮ থেকে ২০ জুনের মধ্যে কলকাতার বাজারে ইলিশ ভরে যায়।
বর্ষার খামখেয়ালিপনায় এই বছর বাজারে নেই ইলিশ। দক্ষিণবঙ্গে ১৩ জুন মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করলেও ২২ জুন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হয়নি দক্ষিনবঙ্গে। উপকূলবর্তী দুই জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। এইসময় রাজ্যের ইলিশের ন্যূনতম দৈনিক চাহিদা ৮০ থেকে ১০০ মেট্রিক টন। বর্তমানে জোগান রয়েছে মাত্র ৩৫ মেট্রিক টন।