নিজস্ব প্রতিবেদন: ইতিহাস বলছে, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন সিরাজউদ্দৌলা। তিনি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ঐতিহাসিক এই যুদ্ধ পলাশি নামক স্থানে সংঘটিত হয়েছিল, তাই এ যুদ্ধ পলাশির যুদ্ধ নামে পরিচিত। ১৭৫৭ সালের জুন ২৩ তারিখে, অর্থাৎ, ঠিক আজকের দিনে এই যুদ্ধ ঘটেছিল। যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হন। এবং এই ঘটনার সূত্রেই ভারতে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সূচিত হয় বলে মনে করা হয়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

স্বাধীনতার ৭৫ বছরের ইতিহাসের বছরে পলাশির যুদ্ধের ২৬৫ বছর আলাদা করে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে পড়ল। কেননা, এদিনই দেখতে গেলে বাঙালির পরাধীনতার প্রথম লগ্ন সূচিত হয়েছিল। তাই স্বাধীনতার ৭৫ বছরে অন্য এক স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে তাকাল 'জি ২৪ ঘণ্টা'। এডিটর গৌতম ভট্টাচার্যের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বললেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর অধ্যাপক রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায়। যাঁর অন্যান্য অনেক কাজের পাশাপাশি পলাশির যুদ্ধ নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। 


পলাশির আলোচনায় নানা চরিত্রের আনাগোনা ঘটে। স্বয়ং সিরাজ এবং ক্লাইভ ছাড়াও মীরজাফর, মীরকাশিম, জগৎ শেঠ প্রমুখ নানা জন এসে হাজির হন। তখনই কথাপ্রসঙ্গে মীরকাশিমের কথা ওঠে। মীরজাফরের জামাই মীরকাশিমও ইংরেজের হাতে পুতুল হবেন, তেমনই আশঙ্কা ছিল। কিন্তু নানা দিকে নানা পুতুল বা ষড়যন্ত্রকারীদের মাঝে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন মীরকাশিমই। মীরকাশিম ইংরেজদের বাড়াবাড়ি বরদাস্ত করেননি। প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু মীরকাশিম কি তাঁর যোগ্য সম্মান পেয়েছেন?


রুদ্রাংশুবাবু স্বয়ং আশ্চর্য হয়ে জানান, মীরকাশিমের উপর কোনও বই নেই! সম্মান কোথায়, আলোচনাটাই তো নেই। মীরকাশিম প্রসঙ্গে রুদ্রাংশুবাবু আবার একবার বাক্সার যুদ্ধের কথা বলেন। বলেন, যদি মীরকাশিমরা ওই যুদ্ধ জিততেন তা হলে বাংলার ইতিহাস সত্যিই বদলাত।


কেন পলাশির একদিকে শুধুই সিরাজ, অন্যদিকে মীরজাফর? 


ইতিহাসবিদ ব্যাখ্যা করেন, আমরা সাধারণত ইতিহাসের ঘটনাকে হিরো আর ভিলেনে ভাগ করে দেখতে ভালোবাসি। প্রথম পরাধীন নবাব মীরজাফর। কী করে তিনি নবাব হলেন, সেটা দেখতে গিয়ে আমরা পলাশির যুদ্ধের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখি, তিনি সেদিন যুদ্ধে অংশগ্রহণই করেননি। সিরাজকে বিভ্রান্ত করেছিলেন। ফলে বলতেই হয় মীরজাফর ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিলেন। আর তিনি এই ষড়যন্ত্রে অংশ না নিলে হয়তো বাঙালিরা আরও কিছুদিন স্বাধীন থাকতে পারত। 


কথাপ্রসঙ্গে, সিপাহি বিদ্রোহের প্রসঙ্গ উঠলে রুদ্রাংশুবাবু জানান, পলাশির ১০০ বছর পরে ভারত থেকে ইংরেজদের তাড়িয়ে দেওয়া যাবে-- এ নিয়ে একটা ভবিষ্যদ্বাণী হয়েছিল। মূলত উত্তর ভারতে এটা ঘটেছিল। সেটাই সাধারণ মানুষের মনে গেঁথে গিয়েছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, আমরা যুদ্ধ করে শুধু ভবিষ্যদ্বাণীকে বাস্তব করে তুলব।


শেষ বিচারে রুদ্রাংশবাবু পরিষ্কার করে বলেন, পলাশির যুদ্ধের চেয়ে এর পরবর্তী বাক্সারের যুদ্ধ অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। পলাশির একশো বছর পরে ঘটা সিপাহি বিদ্রোহের একটা উৎসমুখ যেন খুলে গিয়েছিল এই বাক্সারের যুদ্ধে।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 


আরও পড়ুন: Battle of Plassey: ক্লাইভ একজন লুটেরা, 'ক্লাইভ অফ ইন্ডিয়া' কথাটার কোনও মানেই হয় না: রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায়