Kolkata Murder: `৭ জন পুরুষসঙ্গী স্ত্রীর, ফোনে প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের অডিও শোনায়!` দাবি লেদার কমপ্লেক্স খুনে ধৃত স্বামীর
KLC Murder: ২৯ নভেম্বর বিকালে স্বামী রাজুর সঙ্গে দেখা করতে কেএলসি এলাকায় আসেন অনিতা। ২ তারিখ উদ্ধার হয় দেহ।
নিজস্ব প্রতিবেদন : স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের পর কমপক্ষে ৭ জন পরপুরুষের সঙ্গে 'পরকীয়া'! শুধু তাই নয়, এক পুরুষসঙ্গীর 'ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে' লিপ্ত থাকা অবস্থায়, সেই মুহূর্তের অডিও ফোন করে শোনান স্বামীকে! আর তাতেই রাগে 'খুন' চেপে বসে স্বামীর মাথায়। এরপরই স্ত্রীকে দেখা করতে ডেকে কেএলসি এলাকার পরিত্যক্ত নির্জন আবাসনে শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করে স্বামী। ২ ডিসেম্বর কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় উদ্ধার হয় এক তরুণীর দেহ। সেই ঘটনায় অবশেষে খুনের কিনারা করল পুলিস। ধরা পড়ল খুনি ও সামনে এল খুনের 'মোটিভ'। স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামীকে। ধৃতের নাম রাজু লস্কর। ঘটকপুকুর বাসস্ট্যান্ড থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় স্ত্রী অনিতা হাওলাদারকে খুনের কথা কবুল করেছে ধৃত স্বামী রাজু লস্কর। সামনে এসেছে খুনের 'মোটিভ'ও। স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই তাঁকে সে খুন করে বলে জানিয়েছে ধৃত। আজ ঘটকপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ধরে অন্যত্র পালানোর চেষ্টা করছিল অভিযুক্ত রাজু। তখনই দুপুর দেড়টা নাগাদ তাকে গ্রেফতার করে পুলিস। ২ ডিসেম্বর লেদার কমপ্লেক্স থানার পরিত্যক্ত আবাসন থেকে উদ্ধার হয় অনিতা হাওলাদারের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। নিহত ২৯-৩০ বছরের ওই তরুণীর পরিচয় প্রথমে জানা যাচ্ছিল না। শেষে একের পর এক সূত্র ধরে খুনের কিনারা করল লেদার কমপ্লেক্স থানা।
ময়নাতদন্তের পরই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিস। কেএলসি এলাকায় প্রবেশের যেসব রাস্তা রয়েছে সেখানকার সিসিটভি ফুটেজগুলি খতিয়ে দেখা শুরু হয়। তাতেই কেএলসি-র এক নম্বর গেটের কাছে একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিসের হাতে আসে। যেখানে দেখা যায় যে, ২৯ নভেম্বর ওই মহিলা কেএলসি এলাকায় প্রবেশ করছেন। আর কানে ফোন নিয়ে ঢুকছেন। এরপরই তদন্তকারী অফিসাররা 'টাওয়ার ডাম্পিং' সিস্টেমের সাহায্য নেন। এই সিস্টেমের মাধ্যমে কেএলসি এলাকার দেড় হাজার ফোনের মধ্যে থেকে ওই মহিলার ফোন চিহ্নিত করে তাঁর শনাক্তকরণ করা হয়।
তখন জানা যায় যে, ওই মহিলার নাম অনিতা হাওলাদার। তিনি বাগুইআটিতে থাকেন। আদতে তিনি জীবনতলার বাসিন্দা। এরপর নানা সূত্র মারফত তদন্তকারী অফিসাররা আরও জানতে পারেন যে, নিহত অনিতা হাওলাদার একসময় তাঁর স্বামীর সঙ্গে কেএলসি এলাকাতেই কাজ করতেন। কিন্তু বর্তমানে তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না। এমনকি গত কয়েক মাস যাবৎ স্বামীর সঙ্গে থাকছিলেনও না অনিতা। পুলিসি জেরায় ধৃত রাজু দাবি করেছে যে, তার স্ত্রী অন্তত ৭ জন পরপুরুষের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এমনকি কয়েকদিন আগে প্রেমিকের সঙ্গে 'ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে'র অডিও তাকে ফোন করেও শোনান স্ত্রী। এরপরই রাগে তার মাথায় 'খুন' চেপে বসে। দেখা করার জন্য স্ত্রী অনিতাকে কেএলসি এলাকায় ডেকে পাঠায়।
রাজুর ডাকে ২৯ নভেম্বর বিকালে তার সঙ্গে দেখা করতে কেএলসি এলাকায় আসেন অনিতা। তখনই রাজু তাঁকে নিয়ে যান ওই পরিত্যক্ত আবাসনে। তারপর সেখানেই ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে স্ত্রী অনিতাকে।এখন খুনের ঘটনায় ধৃত রাজু লস্করের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসাররা। ডিসি ইস্ট গৌরব লাল সাংবাদিক বৈঠক করে জানান যে, ধৃত রাজু লস্কর ভাঙড়ের বাসিন্দা। তার আগেও একটি বিয়ে ছিল। সেই বিয়ে ভাঙার পরই অনিতার সঙ্গে সম্পর্ক ও বিয়ে। তাদের দুজনের একটি সন্তানও রয়েছে। কিন্তু অনিতার সঙ্গে সম্পর্কেও টানাপোড়েন শুরু হয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন, পুরভোটের ফল বেরনোর আগেই 'জয়ী' অনন্যা, পেলেন সর্বাধিক 'ভোট'!