শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর জেরে তোলপাড় হয় রাজ্য। সেই ঘটনার পর পড়ুয়াদের সুরক্ষায় ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানোর দাবিতে সরব হয় জি ২৪ ঘণ্টা। এনিয়ে বিরোধিতাও হয় প্রবল। কিন্তু শেষপর্যন্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালের ক্যাম্পাসে বসছে সিসিটিভি। আজ থেকে শুরু হল ক্যামেরা বসানোর কাজ। মোট ২৬টি ক্যামেরা বসছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায়। এছাড়াও ইন্ডোরে বসছে ৩টি ক্যামেরা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-BMW না দেওয়াতেই ড্রাইভারের আক্রোশ, খুন! নাগেরবাজার হত্যাকাণ্ডের কিনারা


আপাতত শুরু হয়েছে পোল বসানোর জন্য খোঁড়াখুঁড়ি। এরপর ফাইবার অপটিকস পাতা হবে ও সার্ভার রুম তৈরি করা হবে। তারপরেই বসবে ক্য়ামেরা বসানোর কাজ। মোট ৩ ধরনের ক্যামেরা বসছে ১০টি জায়গায়। এনপিআর, বুলেট ও ডোম ক্যামেরা বসছে বিভিন্ন জায়গায়। গাড়র নম্বর প্লেট বোঝা যাবে শক্তিশালী এনপিআর ক্যামেরা থেকে, সাধারণভাবে গেট দিয়ে লোকজনের ঢোকা বের হওয়ার উপরে নজরদারি করার জন্য বসানো হচ্ছে বুলেট ক্যামেরা। ইন্ডোরে বসছে ডোম ক্যামেরা। সার্ভার রুমের মধ্যেও বসছে ক্যামেরা। পনের দিনের মধ্যে ক্য়ামেরা বসানো শেষ হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।


গত ১০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে মৃত্যু হয় প্রথমবর্ষের এক ছাত্রের। তার পর থেকে জি ২৪ ঘণ্টা সরব হয়েছিল ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানো হোক। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে একাধিক গাফিলতি সামনে চলে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাল তদন্তেও এখনওপর্যন্ত স্পষ্ট নয় যে ছাত্রটি কীভাবে হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে গেল। তাকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল নাকি সে লাফাতে গিয়ে পড়ে যায়। ফলে হস্টেলে সিসিটিভির দাবি উঠেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। পাশাপাশি ছাত্রদের একাংশ সিসিটিভির বিরোধিতা করে। তবে শেষপর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর জন্য যাদবপুরকে ৩৮ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।


র‌্যাগিং বন্ধ নিয়ে মামলা করেছিলেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। এনিয়ে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি র‌্যাগিং বন্ধের জন্য মামলা করেছিলাম। এর পাশাপাশি আরও একটি মামলা হয় সিসিটিভি বসানো নিয়ে। সেই মামলায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ছাত্রছাত্রীদের কথা শোনার পরে আমি আমার মতামত ব্যক্ত করব। সেই মামলা এখনও চলবে। কিন্তু সিসিটিভি লাগালে কি সমস্যা? সিসিটিভি তো হল। কিন্তু রাজ্য সরকার ছাত্রমৃত্যুর দায় ঝেড়ে ফেলতে পারে না। সেই তদন্তের কী হল?


শেষবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব স্টেক হোল্ডারদের যে বৈঠক হয়েছিল সেখানে পড়ুয়ারা দাবি করেছিল কোথায় সিসিটিভি বসবে তা পড়ুয়াদের জানাতে হবে। নজরদারি কীভাবে হবে তাও জানাতে হবে। সিসিটিভি বসানো নিয়ে বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, এই পদক্ষেপকে স্বাগত। আগে যদি এই কাজটা করা হত তাহলে ওই বাচ্চা ছেলেটার প্রাণটা বেঁচে যেতে। সবই হল। তার জন্য একটা মৃত্যুর কেন প্রয়োজন হল তা বুঝতে পারলাম না। বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার জায়গা। ওটা গাঁজা চাষের জায়গা নয়। ওটা মানুষ খুন বা র‌্যাগিংয়ের জায়গা নয়। পড়ুয়ারা আশাকরি এটা বুঝবেন।


মোট ১০টি জায়গায় ক্যামেরা বসছে যাদবপুরের দুটি ক্যাম্পাসে। সবকটি গেটে বসছে ক্য়ামেরা। পাশাপাশি হেস্টেলের গেটেও ক্য়ামেরা বসানো হচ্ছে। একটি ক্যামেরার সঙ্গে অন্য একটি ক্য়ামেরাকে মুখোমুখি করে রাখা হচ্ছে যাতে কেউ যদি কোনও একটি ক্যামেরার ক্ষতি করতে চায় তা যেন অন্য ক্যামেরাতে ধরা পড়ে। ধরে নেওয়া যেতে পারে পুজোর আগেই ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হয়ে যাবে।


সিসিটিভি বসানো নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুদীপ রাহা বলেন, দেখতে হবে কোন কোন জায়গায় সিসিটিভি বসছে। দেখতে হবে সেইসব সিসিটিভি যেন রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। এনিয়ে আমি একটি মামলা করেছিলাম। মনে করিয়ে দেওয়া যেতে পারে, ওই মামলা কোনও জনস্বার্থ মামলা নয়, এমআইএল অর্থাত্ মাদার্স ইন্টারেস্টেড লিটিগেশন। যাদবপুরের মতো একটি প্রাইম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতে পড়াশোনার পরিবেশ বজায় থাকা সেটার লক্ষ্যেই ওই মামলা।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)