`আদর্শহীন, বিশ্বাসঘাতক, পর পর মিথ্যে বলে গেলেন`, শুভেন্দুকে (Suvendu Adhikari) কড়া আক্রমণ কল্যাণের (Kalyan Banerjee)
`আদর্শের কথা আপনি কী বলবেন? মেদিনীপুরের মাটিতে, বিদ্যাসাগর ও ক্ষুদিরামের দেশে এরকম আদর্শহীন, বিশ্বাসঘাতক! শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) যেখানে যেখানে জেলার পর্যবেক্ষক ছিলেন, সেখানে সেখানে ভোট বেড়েছিল বিজেপির (BJP)। এর থেকেই বোঝা যায় কত বড় চক্রান্ত করেছেন। ২০১৪ সাল থেকে অমিত শাহর (Amit Shah) সঙ্গে ওর যোগাযোগ ছিল।``
নিজস্ব প্রতিবেদন : 'আদর্শহীন, বিশ্বাসঘাতক।' বিজেপিতে (BJP) যোগদান ইস্যুতে শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) কড়া আক্রমণে বিঁধলেন তৃণমূল (TMC) সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। এদিন মেদিনীপুর কলেজ মাঠে অমিত শাহের (Amit Shah) সভায় ২১ বছররে সম্পর্ক ছিন্ন করে ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মশিবিরে নাম লেখান শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন বিধায়ক সাংসদ সহ ১০ হেভিওয়েট। বিজেপিতে যোগদান উত্তর বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলকে কড়া আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। একদিকে শুভেন্দুকে 'ভাই' বলে সম্বোধন করেন অমিত শাহ। অন্যদিকে অমিত শাহকে 'বড়ভাই' বা 'দাদা' বলে সম্বোধন করেন শুভেন্দু। একইসঙ্গে সভামঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারী স্লোগান তোলেন, 'তোলাবাজ ভাইপো হঠাও, বাংলাকে নরেন্দ্র মোদীর হাতে তুলে দিতেই হবে।' দলের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে এসে যার জবাবে তীব্র আক্রমণ করলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
হুগলির শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, "অধিকারী পরিবারতন্ত্রের আদৌ কি কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা আছে? প্রশ্ন তুলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ২০১৪ সালে লোকসভায় জিতে আবার ২০১৬-তে ফিরে আসেন শুধু মন্ত্রী হওয়ার জন্য। শুধু আপনার জন্য একটা উপনির্বাচন করতে হয়েছিল। কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছিল তাতে। শুভেন্দু বলছেন, দলটা একেবারে পচে গিয়েছে। তাহলে এতদিন আপনি ছিলেন কেন? এক, আপনার ব্রেনের থিঙ্কিং প্রসেসটা অত্যন্ত স্লো যে আপনার বুঝতে বুঝতেই ১০ বছর সময় লেগে গেল। নইলে বুঝতে হবে যে নিজের ডিফেন্সের জন্য পর পর মিথ্যে কথা বলে গেলেন।" তোপ দাগেন, "আজ যে প্রণাম শুভেন্দু অমিত শাহকে (Amit Shah) করলেন, একই রকমভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও (Mamata Banerjee) একদিন করেছিলেন! আপনাকে ৩-৩টে মন্ত্রিত্ব, ৪-৫টা জেলার পর্যবেক্ষক করা হয়েছিল। আর কী সম্মান দেবেন? মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারটা দিয়ে দিতেন? যে কোনও মিটিংয়েই মুখ্যমন্ত্রী শুভেন্দুকে খুঁজতেন, শুভেন্দু না এলে মিটিংই শুরু করতেন না। আদর্শের কথা আপনি কী বলবেন? মেদিনীপুরের মাটিতে, বিদ্যাসাগর ও ক্ষুদিরামের দেশে এরকম আদর্শহীন, বিশ্বাসঘাতক! মানুষ ভাবতে পারে না। শুভেন্দু যেখানে যেখানে জেলার পর্যবেক্ষক ছিলেন, সেখানে সেখানে ভোট বেড়েছিল বিজেপির (BJP)। এর থেকেই বোঝা যায় কত বড় চক্রান্ত করেছেন। ২০১৪ সাল থেকে অমিত শাহর সঙ্গে ওর যোগাযোগ ছিল।"
আরও পড়ুন, BJP-তে Suvendu Adhikari, Amit Shah এর সভায় পদ্মশিবিরে মেগা যোগদান
একইসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশে চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিয়েছেন কল্যাণ ব্যানার্জি (Kalyan Banerjee)। বলেন, "এত বড় নেতা হলে, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৪ সালে হারলেন কেন? লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে? আসন্ন নির্বাচনে আবার নন্দীগ্রামেই দাঁড়ান, দয়া করে আসন বদলাবেন না। কিন্তু আসনটা আমরাই জিতবই। ২০২১-এ যে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) নামে ঝড় উঠবে।" উল্লেখ্য, এদিন নিজের বক্তব্যে বাংলা থেকে তৃণমূলকে উত্খাতের ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। 'তোলাবাজ ভাইপো হঠাও' বলে কড়া আক্রমণ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Avishek Banerjee)। যে প্রসঙ্গে কল্যাণের কটাক্ষ, "কাপুরুষ, বুকের পাটা নেই। তাই ভাইপোর নাম মুখে নিতে পারলেন না শুভেন্দু। বুকের পাটা থাকলে, মুখে নাম নিয়ে দেখুন।" একইসঙ্গে তাঁর সাফ প্রশ্ন, "পরিবারতন্ত্র নিয়ে বলা হচ্ছে, অধিকারী পরিবারতন্ত্র নিয়ে তাহলে চুপ কেন?" আরও বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারে কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে চান না। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করেছে বাংলার মানুষ।"
আরও পড়ুন, হাতে হাত ধরে অভিবাদন জনতাকে, মেদিনীপুরের সভামঞ্চে Amit Shah ও Suvendu Adhikari
এদিন মেদিনীপুর কলেজ মাঠের সভায় স্থানীয় মানুষ তেমন ছিলেন না বলেও দাবি করেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি দাবি করেন, এদিন মেদিনীপুরের মাঠ ভরেনি। মাঠ ভরাতে পারেননি শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। যাঁরা তাঁর সঙ্গে আজ BJP যোগদান করেছেন, তাঁরা প্রচুর লোক নিয়ে গিয়েও মাঠ ভরাতে পারেননি। মাঠে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা বেশিরভাগই সব বাইরের লোক। মেদিনীপুরের কেউ নন। আজকের সভা ফ্লপ সভা।