Fake Police: বেনজির কাণ্ড, বন্দিকে ছাড়াতে পুলিসের `ভেক` ধরে সোজা বিচারকের ঘরে!
এমন ঘটনায় রীতিমত তাজ্জব পুলিস কর্তারাও। তাঁরা বলছেন, `এত ডাকাবুকো আচরণ!` দুজনেই নিজেদের অন্ধ্র পুলিসের সিনিয়র অফিসার (Fake Police) বলে দাবি করে।
অয়ন ঘোষাল : লালবাজারের ইতিহাসে বেনজির ঘটনা। বন্দিকে ছাড়াতে পুলিসের 'ভেক' ধরে সোজা বিচারকের ঘরে পৌঁছে গেলেন ভিন রাজ্যের ২ অপরাধী। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। ঘটনাস্থলেই হাতেনাতে ধরা হয় 'ভুয়ো' পুলিস (Fake Police) আশিস প্রকাশ পন্ডিত এবং যশপাল শর্মাকে।
জানা গিয়েছে, বুধবার বেলা আড়াইটে নাগাদ ভুয়ো পরিচয়পত্র সহ ব্যাঙ্কশাল কোর্টের অতিরিক্ত জেলা বিচারকের ঘরে প্রবেশ করে আশিস প্রকাশ পন্ডিত এবং যশপাল শর্মা নামে মধ্যবয়সী দুই ব্যক্তি। তারা দুজনেই নিজেদের অন্ধ্র পুলিসের সিনিয়র অফিসার বলে দাবি করে। বিচারকের ঘরে ঢুকেই তদ্বির শুরু করে তারা। অন্ধ্রের বাসিন্দা রবি ওঝা নামে এক বিচারাধীন বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য তদ্বির শুরু করে দুজনই। কিন্তু কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় তাদের পরিচয় খতিয়ে দেখা হয়। তখনই দেখা যায় যে দুজনই ভুয়ো। সঙ্গে সঙ্গে বিচারকের ঘর থেকে ভুয়ো পুলিস (Fake Police) ২ জনকে গ্রেফতার করে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিস।প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, নিজেদের গোষ্ঠীর বন্দি ওই ব্যক্তিকে সুকৌশলে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এমন অভিনব পরিকল্পনা করেছিল ২ দুষ্কৃতী।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রীতিমত রেইকি করেছিল ২ জন। কিছুদিন আগেই কলকাতায় চলে আসে। কলকাতায় এসে বড়বাজারের একটি হোটেলে ছিল ২ জন। রবি ওঝা নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল লালবাজার ডাকাতি দমন শাখা। তাকে ছাড়াতেই এসেছিল ধৃতরা। গতকাল জেল হেফাজতে থাকা রবি ওঝার শুনানি ছিল। সেই খবর ধৃতদের কাছে আগে থেকেই ছিল। তাই শুনানি শুরুর ঠিক আগে, একেবারে মোক্ষম সময়ে তারা বিচারকের ঘরে ঢোকে। রবি ওঝাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রভাবিত করতে চেষ্টা করে।
কিন্তু বিচারক সঙ্গে সঙ্গে কোর্ট ইনসপেক্টরকে ডাকেন। খতিয়ে দেখতেই দেখা যায়, তাদের আই-কার্ডটি ভুয়ো। জাল আই-কার্ড দেখার পরই হেয়ার স্ট্রিট থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিস এসে দুজনকেই গ্রেফতার করে। ধৃতদের অতীত অপরাধের কোনও রেকর্ড আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে অন্ধ্র পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে হেয়ার স্ট্রিট থানা। এমন ঘটনায় রীতিমত তাজ্জব পুলিস কর্তারাও। তাঁরা বলছেন, "এত ডাকাবুকো আচরণ! এর আগে একাধিক ভুয়ো পুলিস ধরা পড়েছে। তবে তারা মূলত এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও তোলাবাজির মধ্যেই নিজের কার্যকলাপ সীমাবদ্ধ রেখেছে। কিন্তু বিচারকের ঘরে ঢুকে অপরাধী ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো সাহস কেউ দেখায়নি!"