`মাপকাঠি কী?` প্রশ্ন তুলে পুজোয় সরকারি অনুদানে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়াল হাইকোর্ট
রাজ্যের ২৮ হাজার পুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন : পুজোয় সরকারি অনুদানের উপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়িয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। অন্যদিকে এই মামলা আদালতে গ্রহণযোগ্য কি না? এদিন শুনানির সময় সেই বিষয়টিও বিবেচনার জন্য ওঠে। সেই বিষয়ে আগামীকাল বুধবার রায় ঘোষণা করবে আদালত।
এদিন শুনানির সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিষ করগুপ্ত প্রশ্ন তোলেন, "কোন মাপকাঠিতে ২৮ হাজার পুজো কমিটিকে আর্থিক অনুদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়?" জবাবে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল যুক্তি দেন, "অনুদান কে পাবে তা ঠিক করার অধিকার সরকারের। আদালত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।" এরপরই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত জানতে চান, "অনুদান বিলির ক্ষেত্রে কোনও লিকেজ হচ্ছে কি না?" আদালত লিকেজ বন্ধ করতে চায় বলে জানান ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। যারপরই আবেদনকারীর তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য যুক্তি দেন, "পুজোর জন্য এই বরাদ্দ অসাংবিধানিক। কারণ, আদালত ইমাম ভাতাও অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে।" শুনানি-পাল্টা শুনানির পর এদিনের মতো মামলা স্থগিত হয়ে যায়। স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবশিষ করগুপ্ত।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের ২৮ হাজার পুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ অনুদান বিলিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেয়। স্থির হয়, ৯ অক্টোবর মঙ্গলবার মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে কোনও ক্লাবকে অনুদান দেওয়া যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিষ করগুপ্ত।
উল্লখ্য, শুক্রবার শুনানির সময় রাজ্য সরকারের কৌঁসুলির কাছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিষ করগুপ্ত জানতে চান, জনসাধারনের টাকা ঠিক কী পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবহার করা হচ্ছে? গাইডলাইন ছাড়াই কি প্রত্যেক পূজো কমিটি টাকা পাচ্ছে? চেক ভালভ কি কিছু আছে? এই সব প্রশ্নের উত্তর হলফনামা দিয়ে রাজ্যকে জানাতে নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।
আরও পড়ুন, স্কুলের শৌচালয়ে মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী দশম শ্রেণির ছাত্র
উত্তরে সরকারি কৌঁসুলি সেদিন জানিয়েছিলেন, ক্লাবকে দেওয়া এই টাকা সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারি কৌঁসুলির মুখে একথা শুনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিষ করগুপ্ত পাল্টা সতর্কবাণী শোনান। বলেন, "মনে রাখবেন, এটা জনসাধারনের টাকা।" একইসঙ্গে, রাজ্যের ভাঁড়ারে যদি টাকা না-ই থেকে থাকে, তবে সেক্ষেত্রে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রকল্প কতটা যুক্তিযুক্ত? সে প্রশ্নও সেদিন তুলেছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।