Kaliyaganj: কালিয়াগঞ্জকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হাইকোর্টের, পুলিসকে কড়া নির্দেশ!
আদালতে দাঁড়িয়ে পরিবার বলে, `পুলিস পরিবারের কাছে থেকে দেহ টেনে নিয়ে যায়। আমাদেরকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে।` অন্যদিকে আদালতে পুলিস দাবি করে যে, তথ্যপ্রমাণ বাঁচাতেই পুলিস দেহ ছিনিয়ে নিয়ে আসে।
অর্ণবাংশু নিয়োগী: কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় তদন্তের কী অগ্রগতি, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে হবে পুলিসকে। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিতে হবে পুলিসকে। নির্দেশ আদালতের। পাশাপাশি, আদালতের আরও নির্দেশ, ভিডিয়োগ্রাফি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। তবে এদিন আদালতে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি জানায় পরিবার। যদিও এখনই দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেননি বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা। বরং বিচারপতি মান্থা পরিবারকে পুলিসের রিপোর্টটি পড়ে দেখার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, পুলিসকে পরিবারের হাতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, এফআইআরের কপি তুলে দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেন। ২ মে মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, পুলিসের রিপোর্টে ধর্ষণের কোনও ইঙ্গিত নেই। বলা হয়েছে, শরীরে কোনও যৌন নিগ্রহের চিহ্ন নেই। নাবালিকার পেটে বিষ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু আদালতে ওই কিশোরীর পরিবার অভিযোগ করে যে সঠিকভাবে ময়নাতদন্ত হয়নি। পাশাপাশি ভিডিয়োগ্রাফি না হওয়া, প্রথমে এফআইআর না নেওয়ার মত আরও অনেক অভিযোগও করে পরিবার। আদালতে দাঁড়িয়ে পরিবার বলে, 'পুলিস পরিবারের কাছে থেকে দেহ টেনে নিয়ে যায়। আমাদেরকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে।' অন্যদিকে আদালতে পুলিস দাবি করে যে, তথ্যপ্রমাণ বাঁচাতেই পুলিস দেহ ছিনিয়ে নিয়ে আসে। কারণ, পুলিস যাতে না পায়, তার জন্য দেহ নিয়ে একটা মার্কেটে চলে যায়। ওখানে দেহের পাশে টায়ার জ্বালাতে শুরু করে উত্তেজিত জনতা।
পুলিস বলে, ২৮ এপ্রিল বিকেলে ঘটনাটি ঘটে। মেয়েটির বয়স ১৮-র নীচে আর ছেলেটির বয়স ১৮-র উপরে। তারা নিখোঁজ হয়ে যায়। পুলিস দুই পরিবারকেই জিডি করতে বলে। তারা করতে চায়নি। কিন্তু পুলিস তল্লাশি শুরু করে দেয়। ২৮ তারিখ রাত পর্যন্ত তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে একটি পুকুরের সামনে নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়। একটা বোতল পাওয়া যায় দেহের পাশ থেকে। সেইসময় সবাইকে বলা হয় পুলিসকে সাহায্য করতে। যাতে দেহের ময়নাতদন্ত করানো যায়! কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে জমায়েত শুরু হয়। তারপর পুলিস যাতে দেহ না পায়, তার জন্য একটা মার্কেটে নিয়ে যায় দেহ। ওখানে দেহের পাশে টায়ার জ্বালাতে শুরু করে উত্তেজিত জনতা। পুলিস নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ফোর্স ডাকে। তারপর দ্রুত দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিস। তাই পুলিসকে কিছুটা টেনে নিয়ে যেতে হয় দেহ।
আদালতকে পুলিস জানায়, এজন্য ৪ জন পুলিস অফিসারকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে। পাশাপাশি, তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই ঘটনায়। প্রসঙ্গত, তপ্ত কালিয়াগঞ্জে যুবকের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধারে ফের নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সূত্রের খবর, গতরাতে কালিয়াগঞ্জের গ্রামে অভিযানে যায় পুলিস। তাতেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, গুলি চালায় পুলিস। যদিও কে গুলি চালিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। পুলিসের তরফ থেকে সত্যতা স্বীকার করা হয়নি। তবে রাস্তায় পড়ে রয়েছে গুলির খোল। পুলিসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে এলাকাবাসী।
থমথমে গোটা এলাকা। এদিকে কালিয়াগঞ্জে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াতেই সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। বিজ্ঞপ্তি জারি করে একথা জানিয়েছে প্রশাসন। উল্লেখ্য, আগেই কালিয়াগঞ্জের ৪টি ওয়ার্ডে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ৪, ৫, ৬ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। একইসঙ্গে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াতেই কড়া নজরদারি চালাচ্ছে পুলিস।
আরও পড়ুন, Jalpaiguri: ১৩ বছরেও চোকাননি লোন, গা থেকে গয়না খুলে স্বামীর ঋণ পরিশোধ বিধায়ক পত্নীর!