Seikh Shahjahan | Kolkata High Court: `আমার কোনও সমবেদনা নেই, আগামী ১০ বছর আপনাকে খুব ব্যস্ত থাকতে হবে`, শাহজাহানের আবেদন-ই শুনল না হাইকোর্ট!
আদালতে শেখ শাহজাহানের আইনজীবী সব্যসাচী বন্দোপাধ্যায় হাজির হতেই, প্রধান বিচারপতি কড়া ভাষায় তাঁকে বলেন, `আপনার জন্যই আমরা অপেক্ষা করছিলাম।`
অর্ণবাংশু নিয়োগী: "আগামী ১০ বছর আপনাকে খুব ব্যস্ত থাকতে হবে। এই ব্যক্তির জন্য আমার কোনও সমবেদনা নেই।" গ্রেফতারির পর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতেই শেখ শাহজাহানের আইনজীবীর উদ্দেশে কড়া মন্তব্য প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের। সন্দেশখালিতে ইডি অফিসারদের উপর হামলার ৫৬ দিনের মাথায় গ্রেফতার শেখ শাহাজাহান। মিনাখাঁ থেকে এদিন ভোর রাতে গ্রেফতার হন সন্দেশখালির 'বাদশা'। গ্রেফতারির পর এদিন বসিরহাট আদালতে পেশ করা হয় ধৃত শেখ শাহাজাহানকে। পুলিসের তরফে শেখ শাহজাহানের ১৪ দিনের হেফাজত চাওয়া হয়। তবে বিচারক ১০ দিনের পুলিসি হেফাজত মঞ্জুর করেন। এরপরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ শেখ শাহজাহান।
কিন্তু শেখ শাহজাহানের কোনও আবেদন শুনল-ই না কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শেখ শাহজাহানের জন্য তাঁর কোনও সমবেদনা নেই। আদালতে শেখ শাহজাহানের আইনজীবী সব্যসাচী বন্দোপাধ্যায় হাজির হতেই, প্রধান বিচারপতি কড়া ভাষায় তাঁকে বলেন, "আপনার জন্যই আমরা অপেক্ষা করছিলাম।" আদালতে শেখ শাহজাহানের আইনজীবী জানান,"আগাম জামিনের আবেদন ২ দিন আগে খারিজ হয়েছে। নিম্ন আদালতে এখনও আমার চারটি আবেদন বিচারাধীন আছে। গতকাল মামলার কথা আমরা জানতাম না।" যার পালটা প্রধান বিচারপতি বলেন, "৪৩টা মামলাও আছে। আগামী ১০ বছর আপনাকে খুব ব্যস্ত থাকতে হবে। এই মক্কেলের অনেক কাজ করতে ব্যস্ত থাকতে হবে। ৪-৫ জন জুনিয়র রাখতে হবে। এই ব্যক্তির জন্য আমার কোনও সমবেদনা নেই।"
উল্লেখ্য, সন্দেশখালির বিক্ষুদ্ধ মানুষজন ও বিরোধীরা বারবার প্রশ্ন তুলছিল, কেন শাহজাহানকে গ্রেফতার করছে না পুলিস। এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে এডিজি স্পষ্ট করেন যে, "পুলিস ইচ্ছাকৃতভাবে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করছে না! এটা ঠিক নয়। এটা ভুল। আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল।" গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে সন্দেশালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে যায় ইডি। সেই সময় ইডি অফিসাররা তাঁর নাগাল পাননি। উলটে ইডির অফিসারদের উপরই শেখ শাহজাহানের অনুগামীরা হামলায় চালায় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় আহত হন ২ ইডি অফিসার। মাথা ফাটে ইডি অফিসারের। তাঁদের গাড়ি ভাঙচুরও করা হয়। সেই ঘটনার পর আর খোঁজ পাওয়া যানি শেখ শাহজাহানের। তাঁর নামে লুক আউট সার্কুলার জারি করে ইডি। দুদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারের ব্যাপারে কোনও বাধা নেই। তাকে গ্রেফতার করতে পারবে ইডি, সিবিআই ও রাজ্য পুলিস। গতকালই স্থগিতাদেশ উঠেছে। তারপরই এদিন ভোর রাতে গ্রেফতার।
শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারির পর এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে এডিজি সুপ্রতিম সরকার বলেন, একটি অভিযানের সময়ে ইডি আধিকারিকরা আক্রান্ত হন। সেই ঘটনায় ইডির ডেপুটি ডিরেক্টর একটি অভিযোগ দায়ের করেন ন্যাজাট থানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু সেই তদন্ত শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ইডির তরফে উচ্চআদালতে গিয়ে ওই তদন্তের উপরে স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়। সেই আর্জি উচ্চ আদালত মঞ্জুর করে। ফলে ওই মামলায় কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা ছিল। যে কারণে শাহজাহানের গ্রেফতারির ক্ষেত্রেও আইনি বাধা ছিল। তবে ইডির ক্ষেত্রে সেরকম কোনও বাধা ছিল না। তা সত্ত্বেও ইডি কেন তাঁকে গ্রেফতারে উদ্যোগ নেননি, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠা উচিত বলে মন্তব্য করেন এডিজি।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)