`সংশোধনী অসাংবিধানিক নয়`, হাইকোর্টের রায়ে কাটল মেয়র নির্বাচনের কাঁটা
১৯৮০-র পুর নিগম আইনে সংশোধনী এনে মেয়র পদে ফিরহাদ হাকিমকে মনোনীত করে রাজ্য সরকার।
নিজস্ব প্রতিবেদন : মেয়র নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে জয় পেল রাজ্য সরকার। মেয়র পদে ফিরহাদ হাকিমের নির্বাচন অসাংবিধানিক। এই মর্মে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন সিপিআইএম-এর কাউন্সিলর বিলকিস বেগম। আজ আদালতে খারিজ হয়ে গেল সেই মামলা।
৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিলকিস বেগমের দায়ের করা মামলা এদিন খারিজ করে দেয় বিচারপতি দেবাংশু বসাকের সিঙ্গল বেঞ্চ। প্রসঙ্গত এর আগেই মেয়র নির্বাচনের উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি হাইকোর্ট। নির্ধারিত দিন ৩ ডিসেম্বর-ই হয় কলকাতা পুরসভার মেয়র নির্বাচন। ফিরহাদের বিরুদ্ধে মীনাদেবী পুরোহিতকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছিল বিজেপি। তবে তাতে নির্বাচনের ফলাফলে কোনও প্রভাব পড়েনি। মীনাদেবী পুরোহিতকে হেলায় হারিয়ে নিশ্চিত জয় হাসিল করেন ফিরহাদ হাকিম। কলকাতা পুরসভার মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন ফিরহাদ হাকিম।
মেয়র নির্বাচনে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ না দেওয়ায়, তখনই মনে করা হচ্ছিল যে মামলায় রাজ্য সরকার-ই জয় পেতে চলেছে। এদিন রায় ঘোষণা হতেই দেখা গেল যে মেয়র নির্বাচন মামলায় রাজ্য সরকারেরই জয় হয়েছে। এরফলে মেয়র পদে ফিরহাদ হাকিমের দাঁড়াতে আর কোনও সমস্যা রইল না। শুনানির সময় সিপিআইএম কাউন্সিলরের আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, সংবিধানের ২৪৩-R ধারায় পুরসভার মেয়র হতে পারেন একমাত্র নির্বাচিত কাউন্সিলররাই। কাউন্সিলর হিসবে অনির্বাচিত কোনও ব্যক্তির কোনও যোগ্যতা-ই নেই মেয়র পদে বসার।
এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ১৯৮০-র পুর নিগম আইনে সংশোধনী এনে মেয়র পদে ফিরহাদ হাকিমকে মনোনীত করে। সংশোধিত আইনে বলা হয়, কাউন্সিলর হিসেবে অর্নিবাচিত কোনও ব্যক্তি মেয়র পদে আসীন হতে পারেন, তবে তাঁকে ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচনে জিতে আসতে হবে। এই সংশোধনী নিয়েও আপত্তি জানান বিলকিস বেগমের আইনজীবী। আদালতে তিনি দাবি করেন, আইন সংশোধনের জন্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদন জরুরি। কিন্তু এক্ষেত্রে আইন সংশোধনের সময় রাজ্য সরকার রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নেয়নি।
আরও পড়ুন, মুখ্যমন্ত্রী DA ঘোষণা বিভ্রান্তিমূলক, অভিযোগ কর্মী সংগঠনগুলির
বিরোধীপক্ষের আইনজীবীর সেই যুক্তি খারিজ করে দেন রাজ্য সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। রাজ্য সরকার আদালতে যুক্তি দেয়, সংবিধান মেনেই কলকাতা পুর নিগম আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধিত আইন সংবিধানের পরিপন্থী নয়। আর তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী পদের ক্ষেত্রেও বাইরে থেকে কাউকে পদে বসালে সেই ব্যক্তি নির্বাচিত হয়ে আসতে পারেন। তাহলে মেয়র পদে কেন নয়? আর আইন সংশোধনের জন্য রাষ্ট্রপতির অুনমোদনের কোনও প্রয়োজন নেই। এদিন রায় ঘোষণার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের যুক্তিতেই সিলমোহর দিল হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের সিঙ্গল বেঞ্চ।