অয়ন ঘোষাল: এক নয়, দুই নয়, তিন তিনটি মেগা মিছিলে বুধবার নাভিশ্বাস উঠেছিল শহরে। আর ঠিক এদিনই কলকাতায় মেট্রোয় ফের এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যেতে পারত। কিন্তু মেট্রো কর্মীদের তৎপরতায় পাতালপথে বিপর্যয় ঘটতে ঘটতেও রোখা সম্ভব হল। এদিন দুপুর ১২টা ১৪ মিনিট নাগাদ মহাত্মা গান্ধী রোড স্টেশনের ডাউন লাইনে তখন ট্রেন ঢুকছে। অকস্মাত ঝাঁপ দেন ৫৮ বছরের এক প্রৌঢ়। সতর্ক ট্রেনের চালক ইমার্জেন্সি ব্রেক কষেন সঙ্গে সঙ্গে। প্রৌঢ় যে লাইনে পড়ে যান, ঠিক তার আগে একটা ঝটকা মেরে থেমে গেল ট্রেন। দৌড়ে এলেন কর্তব্যরত আরপিএফ কর্মীরা। জীবনযুদ্ধে হার মানা বিপর্যস্ত মানুষটিকে, লাইন থেকে দু'মিনিটের মধ্যে টেনে তুললেন তাঁরা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Rallies In Kolkata: বাম-বিজেপি সহ ৬ মিছিলে আজ মিছিলনগরী কলকাতা, তীব্র যানজট-ভোগান্তির আশঙ্কা


১২ টা ১৬ মিনিটের মধ্যে শেষ হল অপারেশন রেসকিউ। প্রৌঢ়কে নিয়ে যাওয়া হয় স্টেশন মাস্টারের ঘরে। ব্যক্তি জানান যে, পারিবারিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে তিনি চরম পথ বেছে নিতেই বেরিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। আর আত্মহত্যার ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেন মেট্রোকেই। দুপুর সাড়ে ১২টায় তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে, স্ত্রী ও ভাইকে ডাকা হয় স্টেশনে। এক মিনিটের জন্যও ব্যাহত হয়নি মেট্রো পরিষেবা। আজ সড়কপথে তিন মিছিল। যানজট ও ভোগান্তি এড়াতে শহরের লাইফ লাইন মেট্রো যদি এই কারণে বন্ধ হয়ে যেত, তাহলে মানুষের বিপত্তি আরও বাড়ত। আর চালক তৎপর না হলে চলে যেত এক অমূল্য জীবন। তাই ঘটনার প্রাথমিক অভিঘাত কাটিয়ে চওড়া হাসি মেট্রো কর্তাদের মুখে।


এই ঘটনার সঙ্গেই কিন্তু জড়িয়ে রয়েছে গত ১১ জুলাইয়ের এক ঘটনা। এই এমজি রোজ স্টেশনেই, দুপুর ২ টো ২৭ নাগাদ এক দম্পতি চলন্ত মেট্রোর সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহননের চেষ্টা করেছিলেন। তবে বরাত জোরে তাঁরা বেঁচে যান। মেট্রোর ট্র্যাকের বিদ্যুৎ সংযোগ ব্লক করে দিয়ে তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। ওই দুর্ঘটনার পর চিকিৎসার জন্য তাঁদের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। জানা গিয়েছিল ওই দম্পতি খড়গপুর ও মেদিনীপুরের বাসিন্দা। তবে সম্প্রতি তাঁরা পাতিপুরে এসে থাকছিলেন। শ্বশুর বাড়িতে। জানা যাচ্ছে যে, শ্বশুরের চিকিৎসার বিরাট খরচ সামলাতে না পারায় ওই ব্যক্তি ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। তাই তাঁরা জীবন শেষ করে দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও এই ঘটনার জেরে সেদিন সাময়িক মেট্রো পরিষেবা বন্ধ ছিল। সেই সময় কবি সুভাষ থেকে ময়দান এবং দক্ষিণেশ্বর থেকে দমদমের মধ্যে পরিষেবা চালু ছিল। তবে সাময়িক ব্যাহতির পর ফের মেট্রো চলাচল স্বাভাবিক হয়েছিল। বলাই বাহুল্য এই ঘটনায় যাত্রীদের চূড়ান্ত দুর্ভোগ হয়েছিল। এদিন তেমনটা আর ঘটল না।


আত্মহত্যা রুখতে মেট্রোর তরফে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্টেশনে এলইডি স্ক্রিনে আত্মহত্যা কমানোর জন্য বিশেষ প্রচারও চালানো হয়েছে। মানসিক সমস্যায় জর্জরিত ব্যক্তির সাহায্যের জন্য হেল্পলাইন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। তবে এত কিছুর পরেও কিন্তু মেট্রোয় আত্মহত্যার ঘটনা রোখা যাচ্ছে না। নিরাপত্তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই বারবার এরকম ঘটনা ঘটছে। এর ফলে নিত্যযাত্রীদের চূড়ান্ত ভোগান্তি হচ্ছে। কারণ মেট্রো এই শহরের লাইফলাইন। বহু মানুষের জীবন জীবিকা এই মেট্রোর উপর ভর করেই নির্ভর করে। সেখানে বারবার আত্মহত্যার ঘটনা বা আত্মহত্যার চেষ্টার জন্য ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেলে, অনেকেই সমস্যায় পড়েন।


আরও পড়ুন: Bus Accident: রেষারেষির জের, রাতের কলকাতায় ফের বাস দুর্ঘটনা, আহত একাধিক



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)