মৌমিতা চক্রবর্তী


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

লোকসভা ভোটের আগে বামেদের জেতা মুর্শিদাবাদ ও রায়গঞ্জ আসন দুটি নিয়ে গোঁ ধরেছিল কংগ্রেস। সোমেন মিত্রদের আবদার মানতে চায়নি আলিমুদ্দিন। ভেস্তে গিয়েছিল জোট। ফলপ্রকাশের পর সম্বিত ফেরে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের। উপনির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রার্থী দেয় কংগ্রেস। কিন্তু পুরভোটের আগে যেন লোকসভার 'রিক্যাপ'। আবারও আসন নিয়ে বায়না জুড়ল কংগ্রেস। তার জেরে পুরভোটে নিয়ে মঙ্গলবার সিপিএম-কংগ্রেস নেতৃত্বের সাড়ে ৩ ঘণ্টা বৈঠকের পরও অধরা রফাসূত্র। আগামিকাল, বুধবার ফের বৈঠক। আলোচনার টেবিলে বসবে শীর্ষ নেতৃত্ব।  


কলকাতা পুরভোটে ৪৫টি আসন দাবি করেছে কংগ্রেস। কিন্তু কলকাতায় কি তাদের সেই সংগঠন রয়েছে? উঠছে প্রশ্ন। কংগ্রেস নেতারা দাবি করেন, ২০১১ সালের পর নাকি তাদের সংগঠন বেড়েছে! এমনকি শরিক সিপিআইয়ের জেতা ওয়ার্ডও দাবি করে বসেছেন কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের ব্যাখ্যা, ওই ওয়ার্ডে সিপিআইয়ের সংগঠন নেই। সেখানে কংগ্রেস জিততে পারে। কংগ্রেস দাবি, ৪৫টির কম আসনে পেলে তৃণমূল স্তরের কর্মীদের মনোবল ভাঙবে। এমনকি কার্যত ব্ল্যাকমেলিংও করা হয়েছে বলে খবর। কংগ্রেস নেতারা বলেছেন, সম্মানজনক আসন পেলে বামেদের ভোট না-ও দিতে পারেন দলের কর্মীরা। 


কলকাতা জেলার সিপিএম নেতৃত্ব স্পষ্ট করে দেয়, ৩০ থেকে ৩৫টির বেশি আসন ছাড়া যেতে পারে। শরিকদের জেতা আসন দেওয়া যাবে না। গত পুরভোটে যে যেখানে প্রথম বা দ্বিতীয় হয়েছে, সেই আসনগুলি তাদের ছাড়া হবে। এমন যুক্তি মানতে নারাজ কংগ্রেস। তাদের দাবি, যার যেখানে শক্তি আছে, সেই আসনটি তাকে ছাড়া হোক। গতবারের ফলাফল সমঝোতার ভিত্তি হতে পারে না।     


লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের জেদের কারণে ভেস্তে গিয়েছিল জোট। তবে কি সেই একই পথে হাঁটছে সনিয়া-রাহুলের দল? তৃণমূলের উত্থানের পর থেকে দক্ষিণবঙ্গে কংগ্রেস কার্যত 'সাইনবোর্ড'। লোকসভা ভোটে কলকাতা উত্তরে কংগ্রেসের ভোটের হার মাত্র ২.৭৪ শতাংশ। কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছিলেন ২৬,০৯৩টি ভোট। দক্ষিণ কলকাতায় কংগ্রেস প্রার্থীর ভোটের হার ৩.৫৩ শতাংশ। এই ভোট নিয়ে কীভাবে কংগ্রেস নেতারা দাবি করেন, তাঁদের সংগঠন পোক্ত হয়েছে? তার উপরে লোকসভা ভোট হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন। কিন্তু পুরভোটে কি সেই ভোটের হারও ধরে রাখতে পারবে তারা? তার উপরে দেশজুড়ে কংগ্রেসের অবস্থা একেবারেই বেহাল। দিল্লিতে ধরাশায়ী। মধ্যপ্রদেশও হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম। এমন সময়ে কীভাবে দরদামের জায়গায় থাকতে পারে কংগ্রেস? প্রশ্ন উঠছে আলিমুদ্দিনের অন্দরেই।                           


কলকাতা পুরভোটে আলিমুদ্দিনের ভাবনা, কংগ্রেসকে দেওয়া হবে ৩০ থেকে ৩৫টি আসন। ৭০টি আসনে লড়াই করবে সিপিএম। সিপিআই ও ফরওয়ার্ড ব্লককে ছাড়া হবে যথাক্রমে ১০ ও ৭টি আসন। বাকি দেওয়া হবে অন্যান্যদের। এদিনের বৈঠকে ফয়সলা না হওয়ায় বুধবার আলোচনার টেবিলে বসতে চলেছে দুই দলের শীর্ষ নেতারা। সিপিএম নেতারা কি কংগ্রেসের আবদার রাখবেন? সেটাই দেখার।  


আরও পড়ুন- ২ মাস ধরে মধ্যপ্রদেশে অপারেশন সারলেন শাহ, টের পেলেন না দলের নেতারাও